ইস্ট বেঙ্গল–১ কেরালা ব্লাস্টার্স–০
(ক্লেটন সিলভা)
শুক্রবার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে ইস্ট বেঙ্গল যেভাবে হেলায় হারাল লিগ টেবলে তিন নম্বরে থাকা কেরালা ব্লাস্টার্সকে তা দেখে মনে হতে পারে এই টমটাই এত দিন কেন বার বার হারছিল। এটা ছিল ইস্ট বেঙ্গলের ষোল নম্বর ম্যাচ। এবং আগের পনেরোটার মধ্যে ইস্ট বেঙ্গল হেরেছিল এগারোটা ম্যাচ। এই কেরালার কাছেই তাদের মাঠে লিগের প্রথম ম্যাচে ১-৩ গোলে হেরে মাথা নীচু করে মাঠ ছেড়েছিল। কিন্তু এদিন সেই লাল হলুদের কী এমন হল যে কেরালাকে নাস্তানাবুদ করে জিতল স্টিভন কনস্ট্যানটাইনের ছেলেরা? উত্তর একটাই। ক্রমাগত হারের জ্বালা সইতে সইতে লাল হলুদ ফুটবলাররা এমন একটা মানসিক অবস্থার মধ্যে পৌছে গিয়েছিলেন যে তাদের কাছে একটা রাস্তাই খোলা ছিল। মারো না হয় মরো। ক্লেটনরা প্রথম পথটাই বেছে নিলেন। তাদের জিততে হল মাত্র এক গোলে। কিন্তু জয়টা বড় ব্যবধানেও হতে পারত। কেরালার গোলকিপার করণজিৎ সিং নয় নয় করে চারটে শট বাঁচিয়েছেন যার থেকে গোল না হওয়াটাই আবিশ্বাস্য। শেষ পর্যন্ত ৭৭ মিনিটে নাওরম মহেশ সিংয়ের সেন্টার থেকে ক্লেটন সিলভা গোল করে দলকে জিতিয়ে দিলেন। এটা তাঁর দশ নম্বর গোল। লিগে তিনি যুগ্মভাবে টপ স্কোরার। তাহলে কিন্তু তাঁর টিমের এমন দুর্দশা কেন?
জবাবটা পেতে হলে এদিনের লাল হলুদ লাইন আপের দিকে তাকাতে হবে। নিয়মিত দুই সেন্টার ব্যাক ইভান গঞ্জালেস এবং চুংগুনলালকে বসিয়ে দিয়ে স্টিভন দুই সেন্টার ব্যাক নামান কিরিয়াকু এবং সার্থক গোলুইকে। রাইট ব্যাকে অঙ্কিত মুখার্জি অবশ্য মিনিট পনেরোর বেশি স্থায়ী হননি। তাঁকে তুলে নিয়ে নামানো হয় মহম্মদ রাকিপকে। রাগে লাল হলুদ জার্সি মাটিতে ছুড়ে ফেলেন অঙ্কিত। তবে রাকিপ মন্দ খেলেননি। লেফট ব্যাক জেরি ছিলেন বিশ্বস্ত। এই চারজন এবং মাঝ মাঠের চারজন অর্থাৎ সুহের, মোবাশির, অ্যালেক্স লিমা এবং মহেশ সিং-ও ছিলেন বেশ ভাল। তাই কেরালার বিখ্যাত মাঝ মাঠ তেমন বল তৈরি করতে পারেনি। বরং লাল হলুদ ফুটবলাররা প্রচুর বল তৈরি করেছে। তবে এর মধ্যে একটাই কাঁটা ছিল। নতুন বিদেশি জেক জার্ভিস প্রথম দিন পুরোপুরি ফ্লপ। শেষ দিকে তাঁকে তুলে নিয়ে নামাতে হয় জর্দন ডোহার্টিকে। তার আগেই অবশ্য গোল পেয়ে গেছে ইস্ট বেঙ্গল। গোল করে টিমকে জিতিয়ে ম্যাচের সেরা ক্লেটনই।
কিন্তু সেটা তারা পেতে পারত বিরতির ঠিক আগে এবং পরে। কিন্তু ক্লেটন, জার্ভিসদের শট বাঁচিয়ে দেন করণজিৎ। শেষ পর্যন্ত ক্লেটনের গোলে তিন পয়েন্ট এল। লাল হলুদের যা অবস্থা প্লে অফ-এ যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। তবে বাকি চারটে ম্যাচ যদি তারা জিততে পারে তাহলে অনেকটা সম্মান নিয়ে তারা লিগ শেষ করতে পারবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটাই অনেক।