ইম্ফল ও নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মঙ্গলবার সকাল থেকে হিংসাদীর্ণ মণিপুরের বিভিন্ন জনগোষ্ঠী, সুশীল সমাজ, মহিলা প্রতিনিধি ও বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করলেন। সংঘর্ষে উত্তপ্ত চূড়াচাঁদপুরেও যান শাহ। গতকাল রাতে ইম্ফলে আসার পর থেকে রাজ্যে শান্তি স্থাপনে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং এবং কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেন শাহ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব।
কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টুইট করে বলেন, বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সফল আলোচনা হয়েছে। তাঁরা সকলেই শান্তি স্থাপনের বিষয়ে দায়বদ্ধ থাকবেন বলে জানিয়েছেন। সরকার ও তাঁরা উভয়ে মিলে যৌথ প্রচেষ্টায় রাজ্যে সুস্থিতি ও শান্তি ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সহমত হয়েছি। কিন্তু, মণিপুরে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্র এবং বিজেপি সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছে কংগ্রেস। এদিন দলের নেতা জয়রাম রমেশ এক টুইটে বলেন, বিজেপির বিভাজনের রাজনীতিই ২০০১ সালে মণিপুরে আগুন জ্বেলেছিল। যেমন ২০২৩-এও জ্বলছে মণিপুর।
আরও পড়ুন: Weather Update | আজ বিকেলের পর এই ৫ জেলায় বৃষ্টি
রাজধানী দিল্লিতে আজই কংগ্রেসের এক প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে এক স্মারকলিপি দেয়। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের নেতৃত্বে ওই প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতিকে জানায়, মণিপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার শান্তি ফেরাতে পুরোপুরি ব্যর্থ।
অন্যদিকে, মণিপুর নিয়ে এই প্রথম মুখ খুললেন দেশের তিন বাহিনীর প্রধান অনিল চৌহান। পুনেতে এদিন সেনাবাহিনীর এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, মণিপুরের সমস্যার নেপথ্যে জঙ্গি বা সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম নেই। এটা পুরোপুরি দুই জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই। তবে রাজ্যের পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গিয়েছে, এমনটা মনে করার কোনও কারণ নেই। কিছু সময় লাগলেও পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসবে। গত ৩ মে থেকে শুরু হওয়া হিংসাত্মক ঘটনায় এ পর্যন্ত ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।
রাজ্যে সংঘর্ষে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার ১০ লক্ষ টাকা দেবে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। মৃতদের পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। এদিকে, রবিবারের পর থেকে এদিন কার্ফু শিথিল করায় সকাল থেকে লোকজন রাস্তায় নেমেছে। সংসারের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে দোকানে ভিড় লক্ষ্য করা যায়। গাড়ি ও দুচাকা নিয়ে লোকজন ঘরের সামগ্রী কিনে নেন।