বাঙালির জীবন জুড়ে উৎসব। আর এটা তো শুধু জীবন নয়, জামাই বাবা জীবন বলে কথা। বুঝতেই পারছেন, কীসের কথা বলছি। আজ্ঞে হ্যাঁ! জামাই ষষ্ঠীর (Jamai Sasthi) কথাই বলছি। এই বছর ২৫ মে, বৃহস্পতিবার পড়েছে জামাই ষষ্ঠীর শুভ দিনক্ষণ। সব কাজ ভুলে আম, লিচু নিয়ে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে কবজি ডুবিয়ে খাওয়ার দিন। এর পাশাপাশি রয়েছে বেশ কিছু আচার আচরণও। সেটা ভুললে কিন্তু হবে না।
পরপর দু-তিন বছর লকডাউন কিন্তু জামাই ষষ্ঠীর সেলিব্রেশনে চিনের প্রাচীরের মতো বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মুখে মাস্ক, আর হাতে স্যানিটাইজার মেখে কি আর জামাই আদর হয়? এ বার আর সেই সবের কোনও বালাই নেই। মাস্ক-স্যানিটাইজার সরিয়ে রেখে হাসি মুখে, হাতে ফল-মিষ্টি নিয়ে ঢুকুন শ্বশুরবাড়িতে।
আরও পড়ুন: Jamai Sosthi | জামাই ষষ্ঠী পালন তো করেন কিন্তু ব্রতের সঠিক নিয়ম জানা কাছে কি?
সময়সূচি
পঞ্জিকা মতে, এ বছর ২৫ মে (১০ জ্যৈষ্ঠ) বৃহস্পতিবার ষষ্ঠী তিথি শুরু হচ্ছে ভোর ২টো ২২ মিনিট থেকে। এই তিথি থাকবে ২৬ মে (১১ জ্যৈষ্ঠ) শুক্রবার সন্ধ্যা ৬.৩২ মিনিট পর্যন্ত। তবে মেয়ে-জামাই যদি বৃহস্পতি-শুক্র ছুটি নাও পায়, ক্ষতি কী, তারপরেই তো উইকেন্ড, পেট পুজোয় যেন বাধ না সাধে দিনক্ষণ।
জামাইষষ্ঠী মূলত বাংলার লৌকিক আচার। এককালে বাংলার মেয়েরা ঘরকন্যাই ছিলেন। সেই সঙ্গে বহুবিবাহও ছিল সমাজে। এই অবস্থায় জামাইকে খুশি রাখার চেষ্টা করতেন মেয়ের বাড়ির লোকজন। পাশাপাশি সারাবছর মেয়েকে দেখতে পেতেন না মা-বাবারা। তখন সামাজিক নানা বাধানিষেধ ছিল। ফলে জামাইকে আমন্ত্রণ করলে বছরে অন্তত একটিবার মেয়ের দেখাও মেলে। এই সব কারণে ষষ্ঠীপুজোর লৌকিক প্রথাই হয়ে উঠল বাঙালির জষ্টি মাসের উৎসব। জ্যৈষ্ঠ মাসের ষষ্ঠী তিথিতে প্রথম প্রহরে ষষ্ঠী পুজো করা হয়।
পুরাণ মতে, ষষ্ঠী মাতৃত্বের প্রতীক। তাঁর বাহন বিড়াল। মেয়ের দাম্পত্য-সুখ তো বটেই সন্তান লাভের কামনায় মেয়ে জামাইদের আপ্যায়নের প্রথা চলে আসছে বঙ্গ ভূমিতে।