পাটনা: ‘ইচ্ছে হলেই আপনারা নিজের হাতে আইন তুলে নিয়ে বুলডোজার (Bulldozer) চালিয়ে বাড়ি ভেঙে দেবেন? তাহলে আদালতের প্রয়োজন কী? বুলডোজার চালিয়ে বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়াকে তামাশায় পরিণত করেছেন আপনারা।’ এই ভাষাতেই বিহারের নীতীশ কুমারের পুলিশ-প্রশাসনকে ভর্ৎসনা করল হাইকোর্ট। শুধু তাই নয় এ সংক্রান্ত একটি মামলায় আগামী ৮ ডিসেম্বর পুলিশ সুপার (পূর্ব), সার্কল অফিসার এবং অগমকুঁয়া থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে পাটনা হাইকোর্ট (Patna High Court)।
এক আবেদনকারীর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ‘বেআইনিভাবে’ ভেঙে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন পাটনা হাইকোর্টের বিচারপতি সন্দীপ কুমার। পুলিশকে উদ্দেশ করে বিচারপতি বলেন, ইঁয়া ভি বুলডোজার চলনে লগা…তামাশা বনা দিয়া কি কিসি কা ঘর বুলডোজার সে তোড় দেঙ্গে। প্রসঙ্গত গত ১৫ অক্টোবর সহযোগা দেবীর বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় পুলিশ। এই ঘটনায় প্রবলভাবে রুষ্ট বিচারপতি কুমার পাটনার অগমকুঁয়া থানাকে প্রায় হাড়িকাঠে চড়ান। তিনি বলেন, থানার পুলিশের সঙ্গে কিছু জমি মাফিয়ার যোগসাজশ আছে। দস্তানার ভিতর লুকানো সেই খাতিরদারির সম্পর্কেই বেআইনিভাবে বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আইনের ধার ধারেনি পুলিশ।
আরও পড়ুন: Congress steering committee: মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ‘চার্জশিট’ আনবে কংগ্রেস
আদালতের এই শুনানির একটি ভিডিয়ো শনিবার থেকে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। গত ২৪ নভেম্বর শুনানির শেষে আদালত পুলিশ সুপার, সার্কল অফিসার ও থানার ইনচার্জকে হাজিরার নির্দেশ দেয়। ভিডিয়োয় বিচারপতিকে বলতে শোনা গিয়েছে, ইঁহা ভি বুলডোজার চলনে লগা। অ্যায়সে কৌন পাওয়ারফুল আদমি হ্যায় জো বুলডোজার লেকর তোড় দিয়ে উসকা ঘর। পুলিশকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, আপনারা কার হয়ে কাজ করেন? সরকারের নাকি ব্যক্তিগত কারও! এরপরই বিচারপতি বলেন, তামাশা বনা দিয়া কি….।
কুমার চাঁচাছোলা ভাষায় জানতে চান, আইনে জমি সমস্যা মেটানোর ক্ষমতা কি থানাকে দেওয়া আছে? যদি কারও সমস্যা ওঠে, তাহলে থানায় যাচ্ছেন, পুলিশকে ঘুষ দিচ্ছেন, আর একজনের বাড়ি ভেঙে দিচ্ছেন। আপনারা আদালত তুলেই দিন না কেন! আবেদনকারীকে হুমকি দেওয়া হয়েছে এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে তাঁর আইনজীবী আদালতকে জানানোয় বিচারপতি জানান, বহুত আচ্ছে…আমি এখানে আছি আপনাকে রক্ষা করতে। আদালত নতুন বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য, যারা বাড়ি ভেঙেছে তাদের প্রত্যেকের পকেট থেকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে দেবে বলেও আশ্বাস দেন বিচারপতি।