নয়াদিল্লি: রক্ত দিয়ে পোস্টার লিখে রাহুল গান্ধীর সমর্থনে বিক্ষোভ নামলেন আসানসোলের কংগ্রেস সমর্থকরা। সেই পোস্টারে লেখা, ‘রাহুল গান্ধী আমরা তোমার সঙ্গে আছি’। শনিবার আসানসোল শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হওয়ার আগে কংগ্রেস (Congress) নেতা প্রসেনজিৎ পুইতন্ডী ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ দিয়ে নিজের রক্ত বার করেন। সেই রক্তে লেখা হয় পোস্টার। সেই পোস্টার বুকে সেঁটে প্রসেনজিতের নেতৃত্বে বিক্ষোভ চলে। হয় পথ অবরোধ, পোড়ানো হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুতুল।
শুধু আসানসোলেই নয়, শনিবার দিনভর কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের মিছিল, মিটিং ও অবরোধে উত্তাল হয় গোটা দেশ। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, সর্বত্রই এদিন রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের প্রতীবাদে পথে নামেন কংগ্রেসের সর্বস্তরের নেতা, কর্মী, সমর্থক। কলকাতায় রাজভবনের সামনে , ভবানীপুরে বিক্ষোভ হয়েছে। একইভাবে বিক্ষোভ হয়েছে রাজ্যের প্রতিটি জেলায়। দিল্লিতে পথে নামেন কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা। রাজস্থান, ছত্ত্রীশগড়, ছত্রশ মধ্যপ্রদেশ, হিমাছলপ্রদেশ, পঞ্জাব, হরিয়ানা সর্বত্রই এদিন এক দৃশ্য দেখা গিয়েছে। কোথাও প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল পুড়েছে, কোথাও রেল লাইন অবরোধ করে যাত্রী বোঝাই ট্রেন আটকে দেওয়া হয়েছে, কোথাও জাতীয় সড়ক অবরোধ হয়েছে। রাহুল গান্ধীর সদস্য পদ খারিজ হওয়ার পর এক ঝটকায় দেশের হাজার হাজার কংগ্রেস কর্মী পথে নেমে পড়েছেন। রাতারাতি চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) কংগ্রেস (Congress) নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় পর শুক্রবার তড়িঘড়ি লোকসভার সচিবালয় রাহুলের সদস্যপদ (Member of Lok Sabha) খারিজ করে দেয়। সুরাতের একটি আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং ২ বছর জেলের সাজা ঘোষণা করে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় কর্নাটকে প্রচারে গিয়ে রাহুল প্রশ্ন তুলেছিলেন, সব চোরেদের পদবি মোদি হয় কেন? আইপিএল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ললিত মোদি, ব্যাঙ্ক-ঋণ মামলায় পলাতক নীরব মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তুলনা টেনে এই কটাক্ষ করেন তিনি। ওই ঘটনায় রাহুলের বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগে মানহানির মামলা করেছিলেন গুজরাতের বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদি। সেই মামলাতেই বৃহস্পতিবার দোষী সাব্যস্ত হন রাহুল।
আরও পড়ুন : Recruitment Scam | Firhad Hakim | নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে ৭০-এর আগে, বামেদের ক্লিন চিট দিলেন ফিরহাদ!
প্রসঙ্গত, আদালতে দোষী সাব্যস্ত এবং ২ বছর জেলের সাজা ঘোষণায় রাহুল গান্ধী আইন অনুযায়ী আগামী ৮ বছর ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। এটা কংগ্রেসের পক্ষে মাথায় বাজ পড়ার মতো ঘটনা। বর্তমানে রাহুলের বয়স ৫২ বছর। অর্থাৎ ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি লোকসভা ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। ২০৩৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে যদি না কোনও কারণে লোকসভা ভোট হয়, তাহলে রাহুল ২০৩৪ সালের নির্বাচনে লড়তে পারবেন। তখন তাঁর বয়স হবে ৬৫ বছর। শুধু এটাই নয়, রাহুলের বিরুদ্ধে আরও বেশ কয়েকটি মামলা চলছে।