কাঁকসা: গ্রীষ্মের প্রখর রোদ্রে পুড়ছে বঙ্গবাসী। আর এই তীব্র তাপপ্রবাহ কেবল মানবজীবনেই প্রভাব ফেলেছে তা তো নয়! নাজেহাল অবস্থা পশুপাখিদেরও। তাই এই আবহাওয়া থেকে কাঁকসার দেউলের জঙ্গলের হরিণ (Deer) ও ময়ূরদের (Peacocks) রক্ষা করতে বনদফতর (Forest Department) বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে ৷
সকাল থেকেই রোদের তেজ তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হরিণ ও ময়ূরদের ওআরএস, গ্লুকোজ খাওয়ানো হচ্ছে। এছাড়াও তাদের শরীরের জলশূন্যতা রুখতে ও সুস্থ রাখতে খাওয়ানো হচ্ছে টাটকা শাকসবজি, আখের গুড়, ভেজানো ছোলা, বিটনুন ও ভূষি। পাশাপাশি বনকর্মীদের দিয়েও বিশেষ নজরদারি চলছে বলে জানিয়েছে বনদফতর।
বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯২ সালে গৌরাঙ্গপুর গ্রামের দেউলের জঙ্গলে হরিণ ও ময়ূরের জন্য সংরক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়, সেটি বনদফতরের শিবপুর বিট অফিসের আওতাধীনে। সেখানকার বিট অফিসার অনুপ কুমার মন্ডল সহ প্রায় ১৮ জন বনকর্মীরা হরিণ ও ময়ূরের দেখভাল করেন। বর্তমানে সেখানে মোট ৯৬টি চিতল হরিণ রয়েছে। যার মধ্যে সদ্যজাত প্রায় ৭টি হরিণের শাবকও রয়েছে। এছাড়াও ময়ূরের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে। যদিও ময়ূরের বংশবিস্তার শুধুমাত্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে আর থেমে নেই। কাঁকসার জঙ্গলমহলের লোকালয়েও ময়ূর ছড়িয়ে গিয়েছে বর্তমানে। প্রায় ৮ মাস ধরে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ওই সংরক্ষিত এলাকার শাল-পিয়ালের জঙ্গলের সবুজায়ন হারিয়েছে। বসন্ত মাসে শুরুতেই সমস্ত গাছের পাতা ঝড়ে গেলেও বৃষ্টিপাতের অভাবে নতুন করে পাতা এখনও তেমনভাবে গজিয়ে ওঠেনি। পাশাপাশি সংরক্ষিত এলাকায় ঘাস সহ ঝোপঝাড় গজিয়ে না ওঠায় হরিণের খাবারের অনেকটাই ঘাটতি দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: Same Sex Marriage | সমলিঙ্গে বিয়ে বৈধ কি না, বিতর্ক অব্যাহত সুপ্রিম কোর্টে
বনদফতরের দুর্গাপুর রেঞ্জ অফিসার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দিন দিন তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে, এই অবস্থাতে সংরক্ষিত হরিণ ও ময়ূরগুলিকে সুস্থ রাখতেই তাঁরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন প্রায় ২০ প্যাকেট ওআরএস দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি গ্লুকোজ থেকে গুড়, ছোলা, শাকসবজিও দেওয়া হচ্ছে। পশু চিকিৎসকের পরামর্শ মত আগামী মে ও জুন মাস পর্যন্ত এমনটাই চালিয়ে যাওয়া হবে। যাতে এই তীব্র তাপপ্রবাহে তারা যেনো অসুস্থ না হয়ে পড়ে।