কলকাতা: জয়োৎসবে মেতেছে আসমুদ্রহিমাচল। ১৯৮৩ এবং ২০১১ সালে এরকম উন্মাদনা দেখা গিয়েছিল, যখন ভারত ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতেছিল। কিন্তু এবার কোনও খেলা নয়, বিজ্ঞান সাধনায় দুনিয়াকে চমকে দিল আর্যভট্ট-বরাহমিহিরের দেশ। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোকে (ISRO) নিয়ে ধন্য ধন্য পড়ে গিয়েছে। কিন্তু এই অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য আলাদা করে কারও নাম কি আমরা জানি? জানি না। আসুন পরিচয় করা যাক, বিশ্বের দরবারে ভারতকে শ্রেষ্ঠ আসনে নিয়ে যাওয়ার প্রধান কাণ্ডারিদের সঙ্গে।
এস সোমনাথ: ইনি ইসরোর চেয়ারম্যান। গত বছর চেয়ারম্যান পদের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) মিশনের জন্য সবকিছু অর্পণ করেছেন। চন্দ্রযান ৩ মিশন ছাড়াও ভারতের প্রথম মানুষ সহ অভিযান ‘গগনযান’ এবং সৌর গবেষণা মিশন আদিত্য-এল১ তরান্বিত করার প্রধান লোক। ইসরোর চেয়ারম্যান হওয়ার আগে তিনি বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারের অধিকর্তা পদে ছিলেন।
পি বীরামুথুভেল: চন্দ্রযান ৩ মিশনের প্রজেক্ট ডিরেক্টর এই ব্যক্তি। ২০১৯ সালে দায়িত্ব নিয়েছিলেন, অসামান্য টেকনিক্যাল জ্ঞানের জন্য পরিচিত। চন্দ্রযান ২ মিশনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তামিলনাড়ুর এই মানুষটি মাদ্রাস আইআইটির প্রাক্তনী। চার বছর ধরে চন্দ্রযান ৩ মিশনের জন্য প্রাণপাত করেছেন।
এস উন্নিকৃষ্ণন নায়ার: বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারের (VSSC) অধিকর্তা উন্নিকৃষ্ণন নায়ার এবং তাঁর দল ভারতের সবথেকে বড় মহাকাশ অভিযান, চন্দ্রযান ৩-এর গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলির যত্ন নেয়। ভিএসএসসি-তে তাঁর দল জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল (GSLV) মার্ক-৩ (Mark-III) তৈরি করেছে, যার নাম এখন লঞ্চ ভেহিকল মার্ক-৩। বিজ্ঞানের সাধক উন্নিকৃষ্ণান কিন্তু সাহিত্যচর্চাও করেন, ছোটগল্প লিখতে ভালোবাসেন তিনি।
এম শঙ্করন: ইউ আর রাও স্যাটেলাইট সেন্টারের (URSC) অধিকর্তা ইনি, দায়িত্ব নিয়েছিলেন ২০২১ সালে। ইউআরএসসি-তে শঙ্করনের টিম ইসরোর জন্য কৃত্রিম উপগ্রহ বানায়। সংযোগ ব্যবস্থা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, দূরবর্তী যোগাযোগ, দিকনির্ণয় এবং গ্রহনক্ষত্র সংক্রান্ত গবেষণায় কাজ করে সেই সব স্যাটেলাইট।
মোহন কুমার: এস মোহন কুমার এলভিএম৩-এম৪/চন্দ্রযান ৩-এর একজন মিশন ডিরেক্টর। তিনি বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারের একজন সিনিয়র বিজ্ঞানী। এস মোহন এর আগে এলভিএম৩-এম৩ মিশনে ওয়ান ওয়েব ইন্ডিয়া ২ স্যাটেলাইটের বাণিজ্যিক উৎক্ষেপণের অধিকর্তা ছিলেন।
এ রাজারাজন: লঞ্চ অথরাইজেশন বোর্ডের প্রধান এই ব্যক্তি। ইনি সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার-এর অধিকর্তা, যেটি ভারতের অন্যতম প্রধান মহাকাশ বন্দর শ্রীহরিকোটায় অবস্থিত। ইসরো লঞ্চ এবং হিউম্যান স্পেস প্রোগ্রাম (গগনযান) এবং SSLV-এর লঞ্চগুলির চাহিদা মেটাতে লঞ্চ কমপ্লেক্সের কঠিন মোটর উত্পাদন এবং পরিকাঠামো তৈরি দায়িত্বে ছিলেন।
এই ছ’ জনের নাম আমরা জানলাম। তবে দেশের এতবড় সাফল্যের নেপথ্যে আরও কত মানুষের অবদান রয়েছে তার ইয়ত্তা নেই, সবার নাম উল্লেখ করা গেল না তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। কলকাতা টিভি ডিজিটালের তরফে সব্বাইকে হাজারবার কুর্নিশ।