চন্দননগর: হুগলিতে যে কয়টি বনেদী বাড়ির পুজো (Bonedi barir Durga Pujo) হয় তার মধ্যে চন্দননগরের বসু বাড়ির দুর্গাপূজো বহু প্রাচীন। সেই পরিবারের মায়ের মূর্তি আজও বংশ পরম্পরায় পাঁচু গোপাল পালের বংশধর রাই ঢাকের সাজের এক চালির প্রতিমা নির্মাণ করেন। চন্দননগরের আলোকসজ্জা জগৎ জোড়া নাম। হুগলির চন্দননগর খলিশানি বোসপাড়ার দূর্গা পূজা ৫১৬ বছরের পুরোনো। সময়ের সাথে সাথে জমিদারি প্রথা বিলুপ্তি এবং একান্নবর্তী পরিবারগুলি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার ফলে বাড়ির পুজোগুলো যৌলুস হারাতে হারাতে বহু পুজো বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু চন্দননগর বোস বাড়ির পুজো প্রাচীন জৌলুস হারালেও উৎসাহ,উদ্দীপনা এখনো লক্ষ্য করা যায়।
আদিকালে এই বাড়ির পুজোতে বলি প্রথা থাকলেও বহু বছর ধরে সেই বলি প্রথা এখন আর নেই। দুর্গা পূজোর পাশাপাশি সেই সময় বোস বাড়ির আরও কয়েকটি পুজোর যথেষ্ট খ্যাতি ছিল। যথেষ্ট ঘটা করে দোল উৎসব হতো এবং বাড়ির সংলগ্ন মাঠে দোল উৎসবকে কেন্দ্র করে ১৫ দিন মেলা হত। বর্তমানে বোস পরিবারের বেশিভাগ সদস্য কর্মসূত্রে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করেন। কিন্তু পুজোর দিনগুলিতে তাঁরা সকলেই উপস্থিত হন আদি বাড়ীর উৎসবে যোগ দিতে।
আরও পড়ুন: অমরাগড়ির রায় পরিবারের ৩০৪ বছরের ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজো
প্রাচীন রীতি মেনেই এখনো জন্মাষ্টমীর দিনে এই বাড়ির পুজোর কাঠামো পুজো হয়। বংশ পরম্পরায় পাঁচু গোপাল পালের বংশধরাই আদি ঢাকের সাজের এক চালির প্রতিমা নির্মাণ করেন। বংশ পরম্পরা মেনে এখনও ঢাকিরা আসে মায়ের জন্য ঢাকের বাদ্দি শোনাতে। প্রাচীন রীতি মেনে প্রত্যেকদিনের অন্ন ভোগ ও সন্ধ্যায় নানা মিষ্টান্ন সহকারে লুচি ভোগ নিবেদন করা হয় মায়ের নৈবেদ্য। পরিবারের সদস্যরা জানান এখনও প্রাচীনকালে রীতি মেনেই মহা নবমীর দিন মায়ের অন্নভোগ দেওয়া হয় দর্শনার্থী থেকে গ্রামের মানুষদের। দশমীর দিন কাঁধে করে মায়ের বিসর্জন হলেও বর্তমানে সেটা এখন আর হয় না।
দেখুন আরও খবর: