খাতড়া: একশো বছরেরও বেশি আগের কথা। শাল, পলাশ, মহুয়ার ঘন জঙ্গল। সেখানে শ্মশানের মধ্যে একটি পর্ণকুটির। এলাকার নিম্ন বর্গের মানুষের হাতে সেই পর্ণকুটিরেই পূজিত হতেন মা কালী (Maa kali)। জাগ্রত মায়ের কাছে বহু মানুষ যেত। কালের নিয়মে সেই পর্ণকুটিরে থাকা কালীমূর্তির কথা ছড়িয়ে পড়েছে লোকমুখে। এখন খাতড়ার অনেক উন্নতি হয়েছে। সেই পর্ণকুটির আর নেই। নেই সেই শ্মশানও। পর্ণকুটিরের জায়গায় তৈরি হয়েছে মহামূল্যবান মার্বেল পাথরের তৈরি ঝাঁ চকচকে বিশাল মন্দির। এখানেই দেবী অধিষ্ঠান করছেন। এই মুহূর্তে জেলার জঙ্গলমহলের অন্যতম দর্শণীয় স্থান হয়ে উঠেছে খাতড়ার শ্মশানকালী মন্দির।
মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে জল, জঙ্গল আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা মুকুটমণিপুর। পর্যটকদেরও অন্যতম গন্তব্যস্থল হয়ে উঠেছে এই কালী মন্দির। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এখানে ভক্তিভরে মায়ের কাছে কোনও কিছুর প্রার্থনা জানালে মা নিরাশ করেন না। সকলের মনস্কামনা পূর্ণ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ৪৫ ফুট উচ্চতার কালী, ভক্তদের কাছে ক্ষীরপাইয়ের বড় মা নামে পরিচিত
কথিত আছে, আজ থেকে একশো বছর আগে জঙ্গলের মধ্যে শ্মশান ছিল। সেখানে স্থানীয় নিম্নবর্গের মানুষের হাতে পূজিতা হতেন মা কালী। কোনও একসময় এক পুলিশ অফিসার তাঁর মৃত মায়ের দেহ সৎকারে ওই শ্মশানে যান। সেই সময় প্রবল ঝড়বৃষ্টির কারণে শ্মশানের মধ্যেই আটকে পড়েছিলেন তিনি। মাথার গোঁজার ঠাঁই টুকুও পাননি। পরে তিনিই এখানে কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। ধীরে ধীরে স্থানীয়দের উদ্যোগে ৩০ বিঘারও বেশি জায়গা জুড়ে বিশালাকার কালী মন্দির তৈরি হয়েছে। গড়ে উঠেছে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ, মা সারদা ও বিবেকানন্দ মন্দির। স্থাপিত হয়েছে দেশের অষ্টম ও এ রাজ্যের তৃতীয় দশ মহাবিদ্যার মূর্তি। সঙ্গে রয়েছে পার্কিং জোন, রন্ধনশালা সহ প্রসাদ গ্রহণের জন্য বিশাল হলঘর।
বর্তমান পুজো কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, এখানে প্রতি অমাবস্যায় পুজোর আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যা তিথিতে বিশেষ পুজো অনুষ্ঠিত হয়। পুজোর দিনগুলিতে দর্শণার্থীদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
দেখুন আরও অন্য খবর: