নয়াদিল্লি: শত চেষ্টা করেও শেষরক্ষা হল না। গরু পাচার (Cow Smuggling) মামলায় বীরভূমের দাপুটে নেতা অনুব্রতের (Anubrata Mondal) ঠাঁই হল তিহার জেল (Tihar Jail)। ইডি (ED) মঙ্গলবার আর তৃণমূলের বীরভুম জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে হেফাজতের নেওয়ার আবেদন জানায়নি। দিল্লির রাউস অ্য়াভিনিউ কোর্ট (Rouse Avenue Court) তাঁকে ১৩ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। পরবর্তী শুনানি ৩ এপ্রিল। এর ফলে আপাতত অনুব্রতর ঠিকানা হল তিহার জেলই।
ইডি হেফাজতের মেয়াদ শেষে এদিন অনুব্রতকে আদালতে তোলা হয়। সেই নিয়েই সকাল থেকে ইডি আধিকারিকদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিন সকালে দিল্লিতে ইডির সদর দফতর থেকে তাঁকে বের করে আরএমএল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। তারপর ইডির ডেপুটি ডিরেক্টরের নেতৃত্বে বেশ কিছুক্ষণ জেরা চলে। সেখানে থেকে দুপুর ৩ টে নাগাদ তাঁকে হাজির করা হয় দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে।
এই মুহূর্তে তিহার জেলে রয়েছেন অনুব্রতর হিসাবরক্ষক মনীশ কোঠারি, তাঁর ব্যক্তিগত দেহরক্ষী সায়গল হোসেন, গরু পাচার কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত এনামুল হক। তিহার জেল যাত্রা ঠেকানোর জন্য অনুব্রত চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেননি। কলকাতা হাইকোর্ট, দিল্লি হাইকোর্ট, রাউস অ্য়াভিনিউ আদালত সুপ্রিম কোর্ট সর্বত্র তিনি দরবার করেছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, তাঁর দিল্লি যাত্রা ঠেকানোর জন্য রাজ্য সরকারও সচেষ্ট ছিল। তার জন্যই দুবরাজপুরের একটি পুরানো মামলা টেনে এনে অনুব্রতকে জেল হেফাজতে রেখে দেওয়ার চেষ্টাও হয়েছে। আসানসোল জেলে থাকা কালীন যতবারই অনুব্রত দিল্লি নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ইডির তৎপরতা লক্ষ্য করেছেন ততবারই তিনি নানা বাহানা করেছেন। শেষ পর্যন্ত রাউস অ্য়াভিনিউ আদালতের নির্দেশ মতোই তাঁকে দিল্লিতে পাঠানো হয়।
তবে তা নিয়েও নাটক কম হয়নি। আদালতের নির্দেশ ছিল, আসানসোল জেল থেকে রাজ্য পুলিশ দিল্লি নিয়ে যাবে অনুব্রতকে। সেখানে তাঁকে ইডির হাতে তুলে দিতে হবে পুলিশকে। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন শক্তিগড়ে একটি ল্যাংচার দোকানে ঢুকে পড়েন অনুব্রত। সেখানে আগের থেকেই হাজির ছিলেন অনুব্রত ঘনিষ্ঠ দুই বোলপুরের নেতা। তাঁদের ল্যাংচা রাধাবল্লভী ছোলারডাল খাওয়ার খরচ দেন কৃপাময় ঘোষ এক তৃণমূল নেতা। পুলিশ হেফাজতে থাকা কালীন কী করে তৃণমূল নেতারা অনুব্রত সঙ্গী হলে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ইডি। শেষ পর্যন্ত গভীর রাতে ইডি অনুব্রতকে নিয়ে হাজির হয় বিচারকের বাড়িতে। আদালত প্রথমে তিনদিনের জন্য অনুব্রতর ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল।