নয়াদিল্লি: বুধবার মুম্বইয়ের হাসপাতালে প্রয়াত হন সংগীত শিল্পী তথা সুরকার (Bappi Lahiri) বাপি লাহিড়ি৷ বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। বাপি লাহিড়ির আসল নাম অলোকেশ লাহিড়ি।
১৯৫২ সালে জলপাইগুড়ি জেলায় তাঁর জন্ম। ডাক নাম ছিল বাপি। এক আত্মীয়ের রাখা সেই নামেই আজ তিনি বিশ্ব কাঁপিয়েছেন। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক (Bappi Lahiri Passes Away)) বাপিকে নিয়ে ১০টি অজানা তথ্য।
১। ১৯৮০ সালে ওগো বধূ সুন্দরীর ‘এই তো জীবন, যাক না যেদিকে যেতে চায় মন’ গানের সুর করার জন্য মাঝরাতে বেরিয়ে পড়েছিলেন বাদ্যযন্ত্রের খোঁজে। একটা গানের জন্য প্রায় ৮২টা বাদ্যযন্ত্র জোগাড় করে ফেলেছিলেন নিজের হাতে।
২। কলকাতায় এলে দু’প্লেট মটন বিরিয়ানি ছাড়া ডিনার করতেন না।
৩। ইচ্ছে ছিল বাবা অপরেশ লাহিড়ির একটা মূর্তি বসাবেন কলকাতায়।
৪। সবসময়ে পকেটে রাখতেন পান্না খচিত একটি লকেট। মাইকেল জ্যাকসন একবার সেই লকেট দেখতে চেয়ে বসেছিলেন। মুখের ওপর বলে দিয়েছিলেন, উনি চাইলে বানিয়ে দিতে পারেন আর একটা। কিন্তু ওই লকেটটা তিনি দেবেন না।
৫। ভালোবাসতেন মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি। কয়েকদিন আগেই এক বিদেশি গাড়ি কিনেছিলেন। কলকাতায় থাকলে মাঝেমধ্যেই গভীর রাতে দিল্লি রোড চষতে বেরিয়ে পড়তেন গাড়ি নিয়ে।
৬। মাঝেমধ্যেই লালবাজারের পুরোনো বাদ্যযন্ত্রের দোকানে ফোন আসত বাপি লাহিড়ীর। খোঁজ করতেন দুর্মূল্য কোনও হারিয়ে যাওয়া বাদ্যযন্ত্রের। পুরোনো বাদ্যযন্ত্রের প্রতি ছিল বিশেষ ঝোঁক।
৭। গলায় সবসময়ে থাকত ১৮টা হার। পর পর দুদিন একই গয়না পরে অনুষ্ঠানে যেতে পছন্দ করতেন না । বিশ্বাস করতেন, সোনা হল লাহিড়ী পরিবারের সৌভাগ্যধাতু।
৮। সাজপোশাক নিয়ে ছিলেন চরম খুঁতখুঁতে। কালো রঙের পোশাক পরতে সবথেকে ভালোবাসতেন। তাঁর কথায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মানুষ নিজের পোশাক এবং সাজগোজে নাকি সবথেকে ভালো নিজেদের ফুটিয়ে তুলতে পারেন।
৯। একসময় তাঁকে বলা হত কপি লাহিড়ী। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুর থেকে তৈরি করতেন একের পর এক হিন্দি গান। মরি কান্তের ‘তামা তামা’ গান থেকে তৈরি করেছিলেন হিন্দিতে ‘তাম্মা তাম্মা’। ‘বাগলেস’ এর ভিডিও ‘কিলড দা রেডিও স্টার’ থেকে বানিয়েছিলেন ‘কোই আহা নাচে নাচে’। এরকম অজস্র বিদেশি গানকে নিয়ে এসেছিলেন বলিউডে। তবে তিনি এটিকে গান চুরি বলে মানতে রাজি হননি কোনওদিন। তাঁর মতে, রবীন্দ্রনাথও বহু বিদেশি সুরকে অবলম্বন করে তাঁর অনেক গানে সুর দিয়েছিলেন। এতে সংগীত আরও সমৃদ্ধ হয়। মানুষের ভালো লাগলেই হল।
১০। তাঁর স্বপ্ন ছিল, একটা কনসার্ট আয়োজন করার। যেখানে ১০০টি দেশের ১০০ জন গায়ক এবং ১০০ জন বাদ্যযন্ত্রী একসঙ্গে পারফর্ম করবেন।