কলকাতা: আগামী বছর পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে দলীয় সংগঠনে বড় ধরনের পরিকাঠামোগত পরিবর্তন আনছে রাজ্য বিজেপি। বিজেপির সংগঠনে রয়েছে রাজ্য, জেলা, মণ্ডল, শক্তিকেন্দ্র এবং বুথভিত্তিক কমিটি। এবার সেই বুথ ও শক্তিকেন্দ্রকে একসঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তৈরি করা হচ্ছে অঞ্চল কমিটি। দলীয় সূত্রের খবর, বুথে লোকজনের অভাবের কারণে ওই দুই স্তরকে মিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বিজেপির অন্দরের খবর, এখনও পর্যন্ত তারা রাজ্যে বুথভিত্তিক সংগঠন গড়ে তুলতে পারেনি। যার জন্য ভোটে তাদের ফল আশানুরূপ হয় না। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রতি মানুষের ক্ষোভের কারণেই বিজেপি ১৮টি আসন পেয়ে যায়। তাতে বিজেপির যতটা না সাংগঠনিক জোর ছিল, তার থেকে অনেক বেশি ছিল একটা তৃণমূল বিরোধী হাওয়া। লোকসভা ভোটে ওই বিপর্যয়ের পরই তৃণমূল রাজ্যজুড়ে সংগঠন আরও চাঙ্গা করার কাজে নেমে পড়ে। ঘোষণা করা হয় একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের। তার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষীর ভাণ্ডারের মতো বিভিন্ন প্রকল্প। এর ফলও গত বিধানসভা ভোট এবং পরবর্তীকালে পুরভোটে তৃণমূল পেয়ে গিয়েছে।
তৃণমূলের বুথভিত্তিক সংগঠন এখন বেশ জোরদার। বাম জমানায় ভোটে জেতার ক্ষেত্রে সিপিএমের বড় ভরসা ছিল বুথভিত্তিক সংগঠন। পরবর্তীকালে সেই সংগঠন একেবারেই দুর্বল হয়ে যায়। ২০১১ সালে পালাবদলের পর রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বুথভিত্তিক সংগঠন বলে সিপিএমের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। সিপিএমের ধাঁচেই ক্ষমতায় আসার পর থেকে তৃণমূলও বুথভিত্তিক সংগঠনের উপর জোর দিয়েছে।
রাজ্য বিজেপি কিন্তু এখনও বুথে বুথে কোনও সংগঠনই গড়ে তুলতে পারেনি। বিধানসভা ভোটে ভরাডুবি তার একটা বড় কারণ। এছাড়াও রয়েছে বিজেপির ঘরোয়া কোন্দল। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে সংগঠন জোরদার করতে চাইছে রাজ্য বিজেপি। বৃহস্পতিবার সায়েন্স সিটিতে দলীয় কর্মকর্তাদের বৈঠকে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার উপস্থিতিতে সংগঠনে পরিকাঠামোগত পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: HS Result: শুক্রবার উচ্চমাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ, বেলা ১২টা থেকে জানা যাবে ওয়েবসাইটে
দলীয় সূত্রের খবর, প্রতিটি বুথে অন্তত পাঁচজন করে সক্রিয় কার্যকর্তা রাখার কথা বলা হয়েছে। স্থির হয়েছে, ওই কার্যকর্তারা বাইকে চড়ে এলাকায় ঘুরবেন। মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনবেন। সাংগঠনিক সমস্যা হলে তা ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের কাছে তুলে ধরবেন। এই সিদ্ধান্ত হলেও বাস্তবে তা কতটা কাজ করবে, তা নিয়ে অবশ্য দলের মধ্যেই সংশয় রয়েছে।