HomeCurrent NewsLeft Front: ৬৭ বছরে বামেদের ভোট ৩ শতাংশ থেকে কমে হল ২.৩৩...

Left Front: ৬৭ বছরে বামেদের ভোট ৩ শতাংশ থেকে কমে হল ২.৩৩ শতাংশ

Follow Us :

ভবিষ্যতে হয়তো এমন দিন আসবে, যখন আম জনতাকে খবরের কাগজের ‘হারানো প্রাপ্তি নিরুদ্দেশ’ কলমে  বিজ্ঞাপন দিয়ে বলতে হবে, ‘কংগ্রেস, বাম, তোমরা যেখানেই থাক ফিরে এসো। সংস্কৃতি বিপন্ন, গণতন্ত্র শয্যাশায়ী। টাকা লাগলে জানাও। কেন? সেটাই এই লেখার বিষয়।

হার্দিক প্যাটেল, সুনীল জাখরের পর এবার কপিল সিব্বাল কংগ্রেস ছাড়লেন।  ২০১৪ থেকে ২০২১, এডিআর-এর (অ্যাসোশিয়েশন ফর ডেমক্র্যাটিক রিফর্মস) রিপোর্ট বলছে ১৭৭ জন সাংসদ এবং বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে চলে গিয়েছেন অন্য দলে। বিজেপির উথ্বানের পাশাপাশি কংগ্রেসে এই যে ক্রমাগত দল ছাড়ার হিড়িক, তা বলে দেয়, অতীতে ছ’বার ৪০ শতাংশ বা তার বেশি ভোট পাওয়া ১৩৭ বছরের এই দল একটা দিশাহারা অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলেছে।

কংগ্রেসের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের বনিবনা হল না। হলে কংগ্রেসের ভালো হত। উদয়পুরে চিন্তন শিবির শেষ হওয়ার ১৫ দিন না পেরোতেই সিব্বালের দল ছাড়া কংগ্রেসের জন্য খুবই অশুভ ইঙ্গিত। কংগ্রেস যে জায়গায় ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে, তাতে ভারতীয় গণতন্ত্রে বিরোধী রাজনীতিতে একটা বড় শূন্যতা ক্রমাগত স্পষ্ট হচ্ছে।

১৯৫২ সালে প্রথম লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ৪৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। আসন সংখ্যা ছিল ৩৬৪। ভারতীয় জনসঙ্ঘ (বর্তমান বিজেপি) পেয়েছিল তিন শতাংশ ভোট, আসন তিনটি। সিপিআই (তখন সিপিএম ছিল না) ভোট পেয়েছিল তিন শতাংশ, আসন ১৬টি। ৬৭ বছর পরে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে বিজেপির আসন ৩০৩, ভোট ৩৭ শতাংশ, কংগ্রেসের ভোট ১৯ শতাংশ, আসন ৫২, আর দুই কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিআই+ সিপিএম) ভোট যোগ করলে দাঁড়াচ্ছে ২.৩৩ শতাংশ ভোট, আর দুই দলের মোট আসন ৫টি (২০০৪-এ অবশ্য বামেদের ভোট কিছুটা বেড়েছিল)। কংগ্রেস এবং কমিউনিস্ট পার্টি যে আজ প্রায় ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে আছে, সে কথা অবশ্য ওই দুই দলের নেতাদের আচরণ দেখে বোঝার কোনও উপায় নেই। দুই দলই তাদের পুরোনো ভাবনা-চিন্তা আঁকড়ে ধরে বসে আছে। যেন অপেক্ষা করে আছে কোনও এক দিন কোনও এক রাজপুত্র এসে সোনার কাঠি ছুঁইয়ে বিজেপিকে ঘুম পাড়িয়ে তাদের গদিতে বসিয়ে দেবে। কেন মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে, তার কারণ খুঁজে বের করার কোনও আন্তরিক প্রয়াস তাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না। তারা এখনও মনে করেন, মানুষ ভুল তারাই ঠিক। বামপন্থীদের এবং কিছুটা বাম ঘেঁষা মধ্যপন্থী দল কংগ্রেস (দুই দলেরই বয়স একশো ছাড়িয়েছে), এই দুই দল যদি গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে, তাহলে বিনা বাধায় ভারতে দক্ষিণপন্থী শক্তি  সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের দখল নেওয়ার চেষ্টা করবে। ভারতীয় গণতন্ত্র আজ সেই সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে।

এরকম একটা রাজনৈতিক পরিবেশে নরেন্দ্র মোদীর বিরাট সুবিধা হল যে তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে কোনও বড় আন্দোলন, প্রতিবাদ কিছুই নেই। পেগাসাসের মতো বিষয় নিয়ে কংগ্রেস সিপিএম পথে নামতে পারল না। শাহিনবাগ এবং কৃষক আন্দোলন পর্ব মিটে গিয়েছে। রাফাল জেট কেনা নিয়ে অরুণ শৌরি বলেছিলেন এটা বোফোর্সের থেকেও বড় কেলেঙ্কারি, অথচ এমন একটা ইস্যু নিয়েও কংগ্রেস, সিপিএম সংসদের বাইরে কার্যত কিছুই করতে পারেনি। তৃণমূলও একই অবস্থানে দাঁড়িয়ে। বোফোর্স নিয়ে কিন্তু জ্যোতি বসু, আদবাণী,বাজপেয়ীদের ভূমিকা ছিল অনেক বেশি সক্রিয়। অন্য দিকে হিজাব, আজান, হালাল, লাউডস্পিকার, বুলডোজার, একের পর এক নির্দিষ্ট ভাবে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে এমন সব সিদ্ধান্ত বিজেপির বিভিন্ন রাজ্য সরকার, পুরসভা নিচ্ছে, যার সঙ্গে একমত না হলেও তা নিয়ে কার্যত নীরব কংগ্রেস, বাম সহ বিরোধী সব রাজনৈতিক দল। এই সব সিদ্ধান্তের লক্ষ্য প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই সংখ্যালঘু ভারতীয়রা। এই যে ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিস ঘোষণা করল ভারতে মুদ্রাস্ফীতি গত আট বছরে সর্বোচ্চ, ৭.৭৯ শতাংশ ছুঁয়েছে, তা নিয়ে বিবৃতি অনেক শোনা গেল, কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মনমোহন সরকারের বিরুদ্ধে যে ধরনের আন্দোলন দেখা গিয়েছিল, সেরকম কি দেখা যাচ্ছে? উত্তর হল না।

আদালতে যা হচ্ছে তা হচ্ছে, আদালতের বাইরে বৃটিশদের তৈরি ১২৪-এ দেশদ্রোহ আইন নিয়েও বাম সহ প্রায় সব বিরোধী দল চুপ কেন? এটা ঠিকই, ২০১১ সালে তামিলনাড়ুর কুদানকুলাম পরমাণু বিদ্যুৎ চুল্লি চাই না বলে আন্দোলন করার জন্য স্থানীয় গ্রামের কয়েক হাজার গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে এই দেশদ্রোহের ১২৪-এ আইন প্রয়োগ করা হয়েছিল। এমন উদাহরণ কম নেই বিগত কংগ্রেস জমানায়। কিন্তু এটাও ঠিক,  কংগ্রেস পাপ স্খালনের জন্য ২০১৯-এর নির্বাচনী ম্যানিফেস্টোতে তো ঘোষণা করেছিল, তারা ক্ষমতায় এলে এই আইন বাতিল করবে। তখন রাজনাথ সিং বলেছিলেন, তারা ফের ক্ষমতায় এলে এই আইন এমন কঠোর করবেন যে শুনলেই শিড়দাঁড়া দিয়ে শীতল স্রোত নামবে। সে যাই হোক, আজ সুপ্রিম কোর্ট এই আইন নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। বিজেপি যথেষ্ট চাপে আছে। কংগ্রেস, বাম সহ বিরোধীদের ভূমিকাটা কী? তারা কোথায়? এই পরিস্থিতিতে আশংকা, বিজেপি তো চেয়েছিল কংগ্রেস-মুক্ত ভারত, এ তো দেখা যাচ্ছে দেশ প্রায় বিরোধীশূন্য বিজেপির দিকে এগোচ্ছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Abhishek Banerjee | ঘাটালে দেবের প্রচারে অভিষেক, নাম না করে হিরণকে আক্রমণ
03:05
Video thumbnail
Contai | কাঁথির বালিসাইতে বিজেপির উপর 'হামলা', মারধর ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ
01:48
Video thumbnail
ED | ফের প্রশ্নের মুখে ইডির ভূমিকা, বিরোধীশূন্য সরকার গড়তেই কি ইডি-তাস বিজেপির?
02:29
Video thumbnail
বাংলার ৪২ | ঝাড়গ্রামে এগিয়ে কোন দল?
06:34
Video thumbnail
Abhijit Ganguly | কমিশনে উত্তর দেব, মুখ্যমন্ত্রীর দাম নিয়ে 'কুকথা' অভিজিতের
02:56
Video thumbnail
Somenath Shyam | 'শান্তি ফেরাতে হলে পার্থকে ভোট দিতেই হবে', কলকাতা টিভির মুখোমুখি সোমনাথ শ্যাম
05:06
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | 'মামলা, হামলা করে পার পাবে না তৃণমূল', কাঁথিতে পুলিশকে হুমকি শুভেন্দুর
06:49
Video thumbnail
Tapas Roy | বরানগরে বিজেপির সভায় ধুন্ধুমার, তাপস রায়কে 'গো ব্যাক' স্লোগান
04:36
Video thumbnail
Loksabha Election | এবার ভোটেও শুরু হল পুরস্কার প্রদান, সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতির লক্ষ্যে পুরস্কার
01:08
Video thumbnail
Baranagar BJP | বরানগরে বিজেপির সভায় ধুন্ধুমার, বিজেপি-তৃণমূল হাতাহাতি, ধস্তাধস্তি
06:53