নয়াদিল্লি: আড়াই হাজার জবকার্ড (JobCard) হোল্ডারকে দলের পক্ষ থেকে বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। যন্তর মন্তরে (Jantar Mantar) ধরনা মঞ্চ থেকে মঙ্গলবার অভিষেককে বলেন, ষে ২৫০০ গরিব মানুষ এক কাপড়ে দিল্লি এসেছেন, তাঁদের টাকা দুমাসের মধ্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে। বাংলায় তৃণমূলের ৭০ হাজার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। তারা একমাসের বেতন দিতে ওই ২৫০০ মানুষের বকেয়া মেটাবেন। আমরা কলকাতায় ফিরে রাজ্য সরকারকে এব্যাপারে চিঠি দেব। একই সঙ্গে অভিষেকের ফের হুঁশিয়ারি, আগামী দুমাসের মধ্যে এক লক্ষ লোক এনে ধরনা দেওয়া হবে।
এদিন ধরনা মঞ্চে তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন। সেখান থেকে অভিষেক আবারও রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আদায় নিয়ে মোদি সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছোড়েন। গতকাল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সিরিরাজ সিং ১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনায় বাংলার দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্তের হুঁশিয়ারি দেন। সেই প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, সিবিআই তদন্তে আপত্তি নেই। তবে আদালতের নজরদারিতে তা করতে হবে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, দুর্নীতি যদি হয়ে থাকে তাহলে বিজেপির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এফআইআর করেননি কেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধরনা শেষে অভিষেকের নেতত্বে তৃণমূলের ৪০ জনের একটি দল মিছিল করে কৃষি ভবনে যায়। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে দেখা করতে। অভিষেক সহ অনেকের বাতে এবং কাঁথে ছিল বান্ডিল করা চিঠি। মঞ্চ থেকে অভিষেক দাবি করেছিলেন, কলকাতা থেকে নিয়ে আসা জবকার্ড হোল্জারদের ৫০ লক্ষ চিঠি মন্ত্রীর টেবিলে জমা দেবই। তাঁর নির্দেশেই সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চারজন গাড়িতে বহু চিঠির বান্ডিল নিয়ে আগে কৃষি ভবনে পৌঁছে যান।
আরও পড়ুন: মন্ত্রী দেখা না করা পর্যন্ত নড়ব না: অভিষেক
এদিকে বিকেলেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে দেখা করেন। তিনি মন্ত্রীকে ১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনায় বাংলায় দুর্নীতির বহু নথি জমা দেন বলে দাবি করেন। তাঁর অভিযোগ, বাংলার তৃণমূল সরকার প্রায় ১ কোটি ভুয়ো জবকার্ড ব্যবহার করে টাকা লুঠ করেছে। প্রকৃত উপভোক্তারা সুবিধা পায়নি। কেন্দ্রীয় সরকার ঢেলে টাকা দিয়েছে। তৃণমূল সেই টাকা দিয়ে হরির লুঠ চালিয়েছে। এখন মিথ্যা অভিযোগে দিল্লিতে নাটক করছে তৃণমূল।
অভিষেক বলেন, আমাদের মন্ত্রী সময় দিয়েছেন সন্ধ্যা ৬টায়। অথচ বিজেপির লেঠেল বাহিনীর নায়ক বিরোঝী নেতাকে বিকেল বেলা মন্ত্রী সময় দিয়েছেন। ধরনা মঞ্চ থেকে অভিষেক বারবারই শুভেন্দুকে আক্রমণ শানান। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার পুরনো অভিযোগই করে যান। আবার শুভেন্দুও তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ছিলেন। সব মিলিয়ে মঙ্গলবার দিনভর রাজধানী দিল্লি শুভেন্দু-অভিষেকের দ্বৈরথে উত্তপ্ত ছিল। সেই উত্তাপ বহাল থাকে রাতেও। ৪০ জনের বিশাল প্রতিনিধি দল নিয়ে অভিষেক কৃষি ভবনে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু মন্ত্রী জানিয়ে দেন ৫ জনের বেশি প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলবেন না। অভিষেক বলেন, যতক্ষণ না মন্ত্রী দেখা করবেন আমরা এখানে বসে থাকব। রাত যত বাড়ে, উত্তেজনাও তত বাড়ে। কৃষি ভবন ছিল নিশ্চিদ্র পুলিশি নিরাপত্তা।
আরও অন্য খবর দেখুন