বীরভূম: কেষ্টহীন বীরভূমে বিপুল সাফল্য পেয়েছে তৃণূমূল। গরুপাচার মামলায় প্রায় দেড় বছর জেলবন্দি অনুব্রত। অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal) ছাড়াই যে বীরভূমে দলের ভালো ফল হতে পারে, তা পঞ্চায়েত ভোটের পর আবারও প্রমাণিত হল। বীরভূম জেলায় দুটি লোকসভা কেন্দ্রের ১৪ টি বিধানসভা কেন্দ্র মধ্যে একমাত্র বিজেপির দখলে থাকা দুবরাজপুর বিধানসভা ১৮ হাজার ভোটের লিড তৃণমূলের। ১৪ টি বিধানসভার হাইয়েস্ট লিড নানুর ৮২ হাজার। বিজেপির দাবি, তৃণমূল গ্রামবাসীদের ভয় দেখিয়েছে। ভোট না দিলে লক্ষীর ভান্ডার নাম কেটে দেওয়া হবে। পয়সা দিয়ে ভোট কিনেছে তৃণমূল। যদিও বিজেপির দাবি নস্যাৎ করে কাজল-বিকাশের দাবি, মমতার উন্নয়নের ম্যাজিক কাজ করেছে।
এই প্রথম বীরভূম জেলায় তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ছাড়াই বড় ভোট পার করল তৃণমূল। কেষ্ট বিনা বীরভূমের রাঙ্গামাটি জেলায় তৃণমূলের ঘাস ফুলে মুখ ঢেকেছে পদ্ম। গোটা জেলা জুড়েই জোড়া ফুলের ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। বীরভূম জেলার দুটি লোকসভা কেন্দ্রের মোট ১৪ টি বিধানসভা কেন্দ্র। এই ১৪ টি বিধানসভার মধ্যে একমাত্র দুবরাজপুর বিধানসভা কেন্দ্র বিজেপির দখলে। ১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ভালো লিড দিয়েছিল বিধানসভায়। কিন্তু ২৪ শে লোকসভায় ১৮ হাজার ভোটে মাইনাস বিজেপি। অন্যদিকে ১৪ টি বিধানসভার অন্যতম নানুর ৮২ হাজার ভোটে সর্বোচ্চ লিড তৃণমূলের। প্রায় দেড় বছর হয়ে গেল, কেষ্ট জেলবন্দি। তবু দলনেত্রী তাঁকেই বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে রেখে দিয়েছেন। তৃণমূলনেত্রী বুঝিয়ে দেন, তাঁর আশীর্বাদের হাত এখনও কেষ্টর মাথার উপর রয়েছে। বীরভূমে সংগঠন চালানোরে জন্য কেষ্ট গ্রেফতার হওয়ার পর জেলায় একটি কোর কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন মমতা। সেই কমিটিতে প্রথমে কাজলকে (Kajal Sheikh) রাখা হয়নি। পরে তাকে কমিটিতে ঢোকানো হয়। বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি এবং কেষ্টর ঘোর বিরোধী বলে পরিচিত কাজল শেখ এই জয়ের কৃতিত্ব দিতে চান দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishik Banerjee)।
আরও পড়ুন: ফের সৌমিত্রর তোপের মুখে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব
দুবরাজপুর বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক অনুপ কুমার সাহার দাবি, পঞ্চায়েত, পুরসভা, বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচন আলাদাভাবে হয়। এই লোকসভা তে আমরা দুবরাজপুর এ ১৮ হাজার ভোটে পিছিয়ে। বিষয়টি আমরা মূল্যায়ন করবো। তবে তৃণমূল বিজেপির ভোটারদের ভয় দেখিয়েছে। বলেছে ভোট না দিলে লক্ষীর ভান্ডার নাম কেটে দেব। তাছাড়া নির্বাচনের দিন কয়েক আগে আমাদের প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। নতুন প্রার্থীকে নিয়ে প্রচার করতে খুব কম সময় পেয়েছি।
বিজেপির বিধায়কের পাল্টা জবাব সিউড়ির তৃণমূল বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায় চৌধুরীর। তিনি বলেন, কেষ্ট মন্ডল এর সংগঠন বীরভূম জেলায় কাজ করেছে। ম্যাজিক বলতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর দেখানো পথে আমরা হেঁটেছি। আসলে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা। তৃণমূল সরকার মানুষের অভাব অভিযোগ পূরণ করেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই মানুষ দুই হাত ভরে ভোট দিয়েছে। বীরভূম জেলার ১৪ টি বিধানসভার অন্যতম নানুর বিধানসভা কেন্দ্রে সর্বোচ্চ লিড ৮২ হাজার। কাজল শেখের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের ক্যারিশ্মা কাজ করেছে সর্বত্র। দলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর এর দেখানো পথেই ভোট হয়েছে। লক্ষীর ভান্ডার কথা বলেছে। কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের প্রতি বঞ্চনা। মানুষ এর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে।
অন্য খবর দেখুন