জয়জ্যোতি ঘোষ
২০১৮- থেকে বেশ কয়েক বছর আমি দিল্লিতে একটি স্পোর্টস রেডিও চ্যানেলে কর্মরত ছিলাম। শচীন- সৌরভের প্রতি আমার দুর্বলতা অফিসের কম-বেশি সকলেরই জানা। ২০২০-এর মার্চের একেবারে প্রথমদিকে অফিসের ‘বস’-এর জরুরী তলব আমাকে। তাঁর চেম্বারে ঢুকতেই একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম- ‘বস’ আজ নিজেও বেশ নার্ভাস। সাধারণত তিনি নার্ভাস থাকেন না। এই অবস্থায় এর আগে তাঁকে কবে শেষ দেখেছি মনে পড়ছে না।
তিনি এক নিশ্বাসে বলে গেলেন-“জয়জ্যোতি তোমাকে আগামী পরশু মুম্বই যেতে হবে- আর্লি মর্নিং ফ্লাইট। সব ফর্ম্যালিটিস আমি তৈরি করে রেখেছি। তাজল্যান্ডস এন্ড-এ শচীন তেন্ডুলকরের একটা ইভেন্ট রয়েছে যেটার একমাত্র লাইভ স্ট্রিমিং করার সত্ত্ব আমাদের কাছে। আর তুমি হবে সেই ইভেন্টের প্রোডাকশান হেড।”
এতবড় অ্যাসাইনমেন্ট আমাকে উনি দেবেন সেটা ভাবতেও পারিনি। এবারে আমি একটু নার্ভাস হয়ে ‘বস’-কে বলি “আমার ওপর বিশ্বাস রাখার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ…তবে এটা তো অনেক বড় দায়িত্ব…”
প্রত্যুত্তরে তিনি সপাটে জানান, “অনেক বড় অ্যাসাইনমেন্ট বলেই তো তোমাকে বলছি। আমি জানি এটা তোমার থেকে বেটার আমাদের অফিসে কেউ করতে পারবে না (যদিও আমি সেটা বিশ্বাস করি না)। এখন চলি, আগামী পরশু মুম্বাই এর তাজল্যান্ডস এন্ড এ দেখা হচ্ছে তোমার সঙ্গে। মাই বেস্ট উইশেস অলয়েস উইথ ইউ।”
মনে মনে এক অদ্ভুত অস্থিরতা কাজ করতে লাগল। আমি যেন তখন শুন্যে ভাসছি। অনাবিল আনন্দ এবং স্নায়বিক টানাপোড়েনের এক অনন্য মিশেল মনের গভীরে তীব্রভাবে আন্দোলিত হতে লাগল। নিজের অন্তরাত্মার ডাক যেন শুনতে পেলাম- চ্যালেঞ্জ অ্যাকসেপ্টেড। শচীন-কে যে এর আগে কভার করিনি তা নয়। ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে বেশ কয়েকবার কভার করেছি আগে। কিন্তু গুরুত্বের নিরিখে সেই কভারেজের সঙ্গে এই কভারেজ-কে এক করে দিলে চলবে না।
অফিসের বসের নির্দেশ মত ঠিক একদিন পর দিল্লি বিমানবন্দর থেকে আর্লি মর্নিং ফ্লাইট ধরে ‘শচীন ইভেন্ট’-এর উদ্দেশে রওনা হলাম মুম্বাইগামী বিমানে। আমি যেন ক্রমেই শচীন জোনে ঢুকে পড়ছিলাম। শচীন ব্যতীত মাথায় আর কিছুই আসছে না। আকাশে ভাসমান মেঘ একের পর এক পার হচ্ছে। চোখ বন্ধ করলে বেশ কিছু পুরানো স্মৃতি ভেসে আসছিল- ১৯৮৯-তে প্রথম পাকিস্তান সফরে শিয়ালকোটে শচীনের লড়াকু ৫৭, ৯০ সালে ম্যাঞ্চেস্টারে শচীনের ম্যাচ বাঁচানো অপরাজেয় প্রথম শতরান (১১৯), ৯২-তে পার্থের মত ফাস্ট উইকেটে করা অতিমূল্যবান ১১৪, হিরো কাপ সেমিফাইনালের রাতে শেষ ওভারে শচীন-ম্যাজিক, ৯৬ বিশ্বকাপে ফিরোজ শাহ কোটলায় শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১৩৭, ১৯৯৬ টাইটান কাপের ফাইনালে মায়াবী মুম্বইতে হ্যান্সি ক্রোনিয়ের দঃ আফ্রিকাকে চূর্ণ করে ক্যাপ্টেন শচীনের ট্রফি জেতা, ১৯৯৮- তে শারজায় শচীনের মরুঝড়, ৯৯ বিশ্বকাপে বাবার মৃত্যুর পর মেঘে ঢাকা ব্রিস্টলে কেনিয়ার বিরুদ্ধে শতরানের পর মেঘের আড়াল থেকে বাবা রমেশ তেন্ডুলকরকে খোঁজার আপ্রাণ চেষ্টা পুত্র শচীনের, ২০০৩ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শচীনের বিধ্বংসী ৯৮ এবং ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের পর ভারতীয় ক্রিকেটারদের কাঁধে চড়ে শচীনের স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণ, এছাড়া আরও কত কী……
দিল্লি থেকে মুম্বইগামী বিমান মুম্বইয়ের মাটি স্পর্শ করতেই হৃদস্পন্দন বাড়তে লাগল। এরপর মুম্বাই বিমান বন্দর থেকে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা তাজল্যান্ডস এন্ড। ট্যাক্সিতে যেতে যেতে রাস্তার ধারে বেশ কিছু বড় বড় ফ্লেক্সে/বিলবোর্ড-এ বিজ্ঞাপনের মুখ এখনও সেই শচীন! আরব সাগর বেষ্টিত মুম্বইকে নিয়ে নতুন করে কী বলব? দেশের বাণিজ্য নগরী-বলিউডের কেন্দ্রবিন্দু-বিসিসিআই এর হেডকোয়ার্টার- শচীনের আঁতুর ঘর –সবই তো এখানে। ট্যাক্সিতে চলছে রেট্রো টিউন- অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘ডন’ ছায়াছবি থেকে- ‘ই হ্যায় বোম্বাই নগাড়িয়া তু দেখ বাবুয়া’। ট্যাক্সিতে যেতে যেতেই মুম্বাইয়ের সঙ্গে যেন এক অদ্ভুত রোমান্টিকতায় আচ্ছন্ন হচ্ছি আমি। ট্যাক্সি ড্রাইভার হঠাৎ বলে উঠলেন- আপনি কোথা থেকে আসছেন? কী করেন? বললাম আমি ক্রীড়া সাংবাদিক এবং ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার। দিল্লি থেকে এসেছি শচীন তেন্ডুলকরের একটা ইভেন্ট কভার করার জন্য। ট্যাক্সি ড্রাইভার এবারে কিছুটা স্লো করে পিছন ফিরে তাকিয়ে বললেন- বলছেন কী? আমার জীবনে সবসময় আদর্শ মেনে এসেছি দু’জনকে। এক শচীন তেন্ডুলকর এবং দুই অমিতাভ বচ্চন। আমিতাভ বচ্চনের প্রতিটি মুভির গান আমার ট্যাক্সিতে মজুত রয়েছে। আর শচীনের ব্যাটিং যদি এখনও কোনও চ্যানেলে দেখায় তাহলে সেখান থেকে নড়ি না। পুরনো হাইলাইটস বারবার ইউ টিউবে খুঁজে এখনও দেখি। ক্রিকেটীয় ভগবানের শেষ টেস্ট ওয়াংখেড়েতে দেখেছিলাম সপরিবারে। শেষদিন কেঁদে ফেলেছিলাম। নিজেকে আর সামলে রাখতে পারিনি। আমার নাম বিনয়-মাস্টারকে আমার প্রণাম জানাবেন।
ট্যাক্সি থেকে নেমে সাগর পাড়ে তাজল্যান্ডস এন্ডে পা রাখতেই বুঝতে অসুবিধা হল না যে ভারতীয় ক্রিকেট অনুরাগীদের পালসে ‘শ-চী-ন! শ-চী-ন!’ অদৃশ্য প্রতিধ্বনি এখনও বহমান।
তাজল্যান্ডস এন্ডে- ‘শচীন ইভেন্ট’ ছিল সন্ধ্যাবেলায়। লাইভ স্ট্রিমিং এর জন্য প্রোডাকশান টিম-কে আগে থেকেই নির্দেশ দিয়ে দিয়েছিলাম কিভাবে কী করতে হবে। মুম্বইয়ের ট্রাফিক জ্যামের কারণে একটু দেরীতে হাজির হন মাস্টার-ব্লাস্টার। সেটা যদিও কোনও সমস্যাই নয়। মাস্টার-ব্লাস্টারের জন্য ঘণ্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে রাজী আছে গোটা ভারত-গোটা বিশ্ব। যে হলরুমে এই বিশেষ অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা তার ঠিক লাগোয়া পার্শ্ববর্তী রুমে ঢুকলেন অ্যারিস্টোক্র্যাট লুকে শচীন তেন্ডুলকর। মুখে সেই চেনা হাসি। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এই হাসিতে কোনও পরিবর্তন আসেনি। সেই ঘরে যাঁরা যাঁরা বসেছিলেন প্রত্যেকেই উঠে দাঁড়ালেন। প্রত্যেকের কাছে গিয়ে নিজেই করমর্দন সারলেন তিনি। সেই ঘরেরই এক কোণায় দাঁড়িয়ে আমি। ‘শচীন-ইভেন্ট’- এর লাইভ স্ট্রিমিং নিয়ে টেনশন বাড়ছিল ক্রমশঃ। শচীনের দৃষ্টি কিন্তু এড়ায়নি এই অধমের উপর থেকেও। নিজে থেকে এগিয়ে এসে ‘হাই’ বললেন। মনে মনে ভাবলাম-কী দুর্দান্ত মুহূর্ত! বলা যেতে পারে ‘পিকচারেস্ক মোমেন্ট’। এই মানুষটির জন্যই তো কতো রাত জাগা, লেখাপড়া ছেড়ে লুকিয়ে শচীনের ব্যাটিং দেখার জন্য মা-এর কাছে বকা খাওয়া, টিফিন পিরিয়ডের পর একবার স্কুল থেকে পালানো, মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগেও বাবার কাছে জানতে চাওয়া- শচীন কত রানে ব্যাটিং করছে বাবা? মনে মনে ভগবানের কাছে চুপিসারে প্রার্থনা- অঙ্ক পরীক্ষায় যা হবে দেখা যাবে, কিন্তু শচীনের সেঞ্চুরিটা যেন হয়ে যায় ভগবান! একইসঙ্গে একটা বিরাট শিক্ষা পেলাম সেদিন। তুমি যত ওপরেই ওঠো না কেন পা-টা সবসময় মাটিতেই রেখো। জীবনকে যত স্বাভাবিক রাখতে পারবে, ততই তুমি জীবনকে উপভোগ করতে পারবে।
‘কী? ভালো সব…’-এই ছোট্ট বাক্য বাংলায় বেরিয়ে আসল শচীনের মুখ থেকে। বাংলা বলার ক্রেডিট অবশ্যই তাঁর একসময়ের ওপেনিং পার্টনার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়েরই প্রাপ্য। কলকাতার সাংবাদিককে দেখে বাংলা বলার সুযোগ হাতছাড়া করলেন না মাস্টার। মুখে আবারও সেই সহজ সরল মিলিয়ন ডলার স্মাইল। মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালাম যে সব ভালো। এরপর শুরু হল আসল ইভেন্ট যার মধ্যমণি শচীন রমেশ তেন্ডুলকর। গোটা ইভেন্টে প্রোডাকশান টিম দারুণ কাজ করল। সেদিন ‘বস’ যে গুরুদায়িত্ব দিয়েছিলেন, আশা করছি সেটা পালন করতে পেরেছিলাম। ইভেন্ট শেষে একান্তে কিছু মুহূর্ত কাটাই ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’-এর সঙ্গে। সুযোগের সদ্ব্যবহার করি। ক্রিকেট ঈশ্বরকে সামনে পেয়ে বলেই ফেললাম- কলকাতা বা ইডেন গার্ডেনসকে নিয়ে কোনও নস্ট্যালজিয়া কী কাজ করে আপনার?
-“ নস্ট্যালজিয়া তো অবশ্যই কাজ করে। প্রচুর ভালোবাসা পেয়েছি কলকাতার মানুষের কাছ থেকে। ইডেনে ১৯৯ তম টেস্টে খেলতে নামার সময়ও তার এতটুকু ভাঁটা পড়েনি। মনে আছে কলকাতার রাস্তা-অলিগলি এবং ইডেন গার্ডেনস আমার কাট আউটে সজ্জিত ছিল। এত বছর ধরে কলকাতা যাচ্ছি আর যেভাবে প্রত্যেকবার আমাকে স্বাগত জানিয়ে এসেছে এই শহর তা এক কথায় অতুলনীয়। হিরো কাপের রাত কোনও দিনও ভুলব না। প্রথমবার ইডেন গার্ডেন্সে মশাল জ্বলতে দেখি আর ইডেনে পারফর্ম করার একটা অন্যরকম মজা আছে। প্রথম ২-৩ উইকেট ভারতীয় বোলাররা নেওয়ার পর বাকি উইকেটগুলো-তো দর্শকরাই নিয়ে নেয়(হাসি)। বেশি চাপ থাকে আম্পায়ারদের ওপর। তাঁদেরকে এক্সট্রা হোমওয়ার্ক করে মাঠে নামতে হয়। হিরো কাপের রাত ভুলি কি করে?”- একভাবে বলে গেলেন নস্ট্যালজিক শচীন।
সঙ্গে সঙ্গে পরের প্রশ্নটা করতে বিলম্ব করলাম না। ‘এ তো গেলো সুখকর স্মৃতি। ৯৬ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে যেভাবে স্টাম্প আউট হয়েছিলেন সেটার জন্য আফঁশোস হয় না? আমি এখনও বিশ্বাস করি আপনি আউট না হলে ১৯৯৬ ক্রিকেট বিশ্বকাপ গদ্দাফির মাটিতে ভারতও জিততে পারত। আর এটা শুধু আমার মতামত নয়, সেই ওয়ার্ল্ড কাপে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক অনিল কুম্বলেও একই মত ব্যক্ত করেছিলেন এক সাক্ষাৎকারে…’
প্রত্যুত্তরে মাস্টার-ব্লাস্টার বলেন, “সেই রাতে আমিও ঘুমোতে পারিনি। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওই হার ভীষণ যন্ত্রনা দিয়েছিল। বেশ ভালো ছন্দে ব্যাটিংও করছিলাম। সঞ্জয় মঞ্জরেকরের সঙ্গে আমার একটা পার্টনারশিপও হয়েছিল। হঠাৎ করে কিছুটা নীচু হয়ে আসা জয়সূর্য-র ডেলিভারি বুঝতে পারিনি। আর উইকেটের পেছন থেকে কালুভিথরানার স্মার্ট গ্লাভওয়ার্ক সব শেষ করে দেয়। আর মনে রাখতে চাই না সেই অভীশপ্ত রাত।”
সত্যিই সেটা ছিল ভারতীয় ক্রিকেটের এক কলঙ্কিত রাত। ভারতীয় স্কোরবোর্ড ৯৮/২ থেকে ১২০/৮। শেষে বিনোদ কাম্বলীর কান্না। নন-স্ট্রাইকিং এন্ডে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অনিল কুম্বলে। এরপর প্রচুর বিতর্ক হয় সেই ম্যাচকে ঘিরে। অধিনায়ক আজহারের বিরুদ্ধে আসমুদ্রহিমাচল জুড়ে রোষানল তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। শুধু শচীন কেন?…আমরা কেউই মনে রাখতে চাই না ৯৬ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের সেই রাত।
আরও একটি প্রশ্ন করতে খুব ইচ্ছে হল। দেরী না করে করেই ফেললাম- ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আপনার ১০০টি শতরান। আমি নিশ্চিত ১৯৮৯ তে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যখন আপনার ডেবিউ হয়, তখন নিশ্চয়ই কল্পনাতেও আসেনি যে এতদূর আপনি পৌঁছাবেন। নির্দিষ্টভাবে এমন কোনও ইনিংস আছে যেটা আপনাকে সাহস বা শক্তি যুগিয়েছিল?’
মুচকি হেসে বললেন-“সেই সফরেই শিয়ালকোট টেস্টে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমার করা ৫৭ এবং ১৯৯২-এ পার্থের মতো ফাস্ট উইকেটে করা ১১৪। এই ইনিংসগুলির পর আমার মনে একটা ধারনা জন্মায় যে বিশ্বের যেকোনও প্রান্তে যেকোনও বোলিং অ্যাটাকের বিরুদ্ধে রান করতে পারব আমি। তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।”
সব অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাওয়ার পর মাঝরাতে মনে মনে ভাবছিলাম কী একটা দিন কাটালাম! অবশ্যই আমার পেশাগত জীবনের অন্যতম সেরা দিন। ঘুম আসছিল না। শচীন-ম্যানিয়ায় তখনও যে বিভোর আমি……
‘শচীন স্পেশাল’ নিয়ে আজকের স্টেডিয়াম বুলেটিন দেখতে ক্লিক করুন-