Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeScroll১৯৯৬ সালের ইংল্যান্ড সফর থেকে নভজ্যোৎ সিং সিধুর আচমকা ফিরে আসা- রহস্য...
Navjot Singh Sidhu

১৯৯৬ সালের ইংল্যান্ড সফর থেকে নভজ্যোৎ সিং সিধুর আচমকা ফিরে আসা- রহস্য এবং উদঘাটন!

Follow Us :

জয়জ্যোতি ঘোষ

১৯৯৬ সালে ভারতের ইংল্যান্ড সফর। অবশ্যই ঐতিহাসিক এই সফর কারণ দুই ভারতীয় ক্রিকেট তারকা- সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং রাহুল দ্রাবিড়ের অভিষেক হয়েছিল। কিন্তু এই সফর একেবারেই বিতর্কহীন ছিল না। বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন নভজ্যোৎ সিং সিধু। সফর চলাকালীন মাঝপথেই ভারতে ফিরে আসেন সিধু। কিন্তু ঠিক কী কারণে নজিরবিহীনভাবে সফরের মাঝপথেই ইংল্যান্ড থেকে ফিরে এসেছিলেন তিনি? সেইসময়ে দাঁড়িয়ে এটাই হয়ে ওঠে ‘বার্নিং টপিক’!

নভজ্যোৎ সিং সিধুর ভারতের ফিরে আসার কারণ জানতে মুম্বইতে একটা বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়। যদিও এই কমিটির প্রথম বৈঠকে মুখ খুলতে চাননি সিধু। এরপর একটা বিশেষ প্যানেল গঠন করা হয়। যে প্যানেলে ছিলেন- রাজসিং দুঙ্গারপুর, আইএস বিন্দ্রা, সুনীল গাভাসকর এবং জয়ন্ত লেলে। প্রত্যেক প্যানেল সদস্যই সত্যটা জানতে উদগ্রীব ছিলেন। কিন্তু সিধু নিজের জায়গায় অনড় ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মেনে নিচ্ছি ইংল্যান্ড সফরের মাঝপথে ফিরে আসাটা আমার ভুল ছিল। সেটার জন্য যে শাস্তিই দেওয়া হোক না কেন আমি মাথা পেতে নিতে রাজি।’

ইংল্যান্ড সফর শেষ করে যখন ভারতীয় দল দেশে ফেরে তখন তলব করা হয় ভারতীয় দলের ম্যানেজার নাগরাজ, অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিন, ফিজিও আলি ইরানি সহ কিছু ভারতীয় ক্রিকেটারদের। কিন্তু প্রত্যেকেই কমিটির সামনে জানিয়েছিলেন যে সিধুর আচমকা ভারতে ফিরে আসার কারণ প্রসঙ্গে একেবারেই ওয়াকিবহল নন তাঁরা।

কিছুতেই যখন কিছু হচ্ছে না তখন তদন্তের স্বার্থে একজন প্রাক্তন পাঞ্জাবি ক্রিকেটারকে প্যানেলে নিয়ে আসা হয়। তিনি আর কেউ নন- স্বয়ং ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম সদস্য মোহিন্দর অমরনাথ। সুনীল গাভাসকরের জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হন তিনি। এরপর দিল্লির তাজ প্যালেস হোটেলে আবারও ডাকা হয় নভজ্যোৎ সিং সিধুকে। সেখানে পূর্ব পরিকল্পনা মতো বৈঠকের মাঝে একটা ছোট্ট বিরতি নেওয়া হয়। রাজসিং দুঙ্গারপুর মোহিন্দর অমরনাথকে চুপিসারে ইশারা করেন সিধুকে নিয়ে একটু পায়চারি করে আসতে এবং সত্যিটা জানতে। প্রায় ২০ মিনিট ধরে সিধু-অমরনাথের মধ্যে পাঞ্জাবিতে কথোপকথন চলে। এরপর সিধুর হাত ধরে হাসতে হাসতে মিটিং রুমে আসেন মোহিন্দর অমরনাথ এবং বলেন এই আলোচনা এখানেই বন্ধ হোক আর এই আলোচনা যেন চার দেওয়ালের মধ্যেই থাকে। আসলে সেইসময়ের ভারত অধিনায়ক আজহার এবং সিধুর মধ্যে একটা মস্ত বড় ভুল বোঝাবোঝি হয়। ইংল্যান্ড সফরে আজহারের বারবার ব্যবহার করা একটি উপসর্গে ভীষণভাবে আহত হন সিধু। তিনি মনে মনে ভাবেন তাঁকে বারবার অপমানিত করছেন আজহার। উপসর্গটি ছিল-‘মা কি…’। উত্তর ভারতীয়দের কাছে যেটা গালি হিসেবে বিবেচিত হয়। এই একই শব্দের অর্থ হায়দরাবাদীদের কাছে আবার পুরোপুরি ভিন্ন। যেখানে মায়ের স্নেহধন্য বোঝাতে ব্যবহার করা হয় ‘মা কি…’। ‘আজহার একটুও অপমানিত করতে এই শব্দটি ব্যবহার করেননি শেরি’-সিধুকে বলেন মোহিন্দর অমরনাথ।

এরপর আজহার-সিধু দু’জনের মধ্যেকার ভুল বোঝাবোঝি দূর হয় চিরতরে। এর প্রায় ১৯ বছর পর দিল্লির এক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন নভজ্যোৎ সিং সিধু। সেখানে কোনও খবর না দিয়েই সিধুকে দেখতে চলে যান তাঁর একসময়ের অধিনায়ক এবং টিমমেট আজহার। ডাক্তারকে গিয়ে আজহার বলেন, ‘আমার ভাই ভর্তি আছে এই হাসপাতালে। তাঁকে দেখতে এসেছি।’ সত্যি! সিধু-আজহারের এই বন্ধুত্ব অটুট থাকুক চিরকাল…

অন্য খবর দেখতে ক্লিক করুন:

RELATED ARTICLES

Most Popular