নয়াদিল্লি: গণতান্ত্রিক মতাদর্শের পথে হাঁটছে না নরেন্দ্র মোদির সরকার। আদানি ইস্যুতে সমস্ত বিরোধী দল যখন যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি তুলল, তখন তা থেকে দেশবাসীর নজর ঘোরাতে সংসদে গন্ডগোল পাকানো হল। বৃহস্পতিবার ঠিক এই ভাষাতেই বিরোধী দলগুলির যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপিকে বাক্যবাণে বিঁধলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে।
এদিন সংসদ ভবন থেকে বিজয়চক পর্যন্ত ২০টি বিরোধী দল বিজেপি জমানায় গণতন্ত্র আক্রান্তের প্রতিবাদে তেরঙ্গা পদযাত্রা করে। সেই মিছিলের শেষে কনস্টিটিউশন ক্লাবে এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে খাড়্গে অভিযোগ করেন, সরকারের উদ্দেশ্যই ছিল বাজেট অধিবেশনকে যে কোনও প্রকারে বানচাল করে দেওয়া।
আরও পড়ুন: DA | রাজ্যের সরকারি অফিসগুলিতে কর্মবিরতি পালন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের
খাড়্গে বলেন, এই সরকার গণতন্ত্রের পক্ষে অনেক ধুয়ো তোলে। কিন্তু, গণতন্ত্রের নীতিধর্ম পালন করে না। অথচ বিরোধীরা গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, ৫০ লক্ষ কোটি টাকার বাজেট, যা কিনা মাত্র ১২ মিনিটে পাশ হয়ে গেল! কিন্তু, ওরা কী বলছে? বিরোধীরা নাকি সংসদে হট্টগোল পাকাচ্ছে। সংসদীয় কাজে বিরোধীদের কোনও উৎসাহ নেই।
রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা খাড়্গে বলেন, আসলে হট্টগোল পাকিয়ে সভার লক্ষ্য ঘুলিয়ে দিতে চেয়েছে সরকার। শাসকদল গন্ডগোল পাকিয়েছে। আমরা যখনই কোনও দাবি তুলেছি, আমাদের কথা বলতে দেওয়া হয়নি। প্রবীণ রাজনীতিক মল্লিকার্জুন আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ৫২ বছর ধরে রাজনীতি করছি। এর আগে কোনওদিন এরকম ঘটনা দেখিনি। সরকারের লক্ষ্য ছিল বাজেট অধিবেশন চলতে না দেওয়া। আমরা এর নিন্দা করছি।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের কাজ যদি চলতেই থাকে, তাহলে গণতন্ত্র শেষ হয়ে যাবে এবং আমরা একনায়কতন্ত্রের পথে চলে যাব। আদানি ইস্যুতে ১৮-১৯টি দল আওয়াজ তুলেছিল সংসদে। জানতে চাওয়া হয়েছিল, কী করে আদানি গোষ্ঠী মাত্র দু-আড়াই বছরে ১২ লক্ষ কোটি টাকার সম্পত্তি করেছে। খাড়্গে বলেন, যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনে আপনারা ভয় পাচ্ছেন কেন?
আদানি ইস্যুতে সংসদে সরকারপক্ষ একটা শব্দও উচ্চারণ করল না। সেটাকে এড়াতে রাহুল গান্ধীর ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে দিনের পর দিন সংসদ অচল করে দিল। রাহুল গান্ধীর লোকসভা সদস্যপদ খারিজ নিয়ে খাড়্গে বলেন, বজ্রপাতের গতিতে তাঁর সদস্যপদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অথচ, এক বিজেপি এমপি দোষী সাব্যস্ত ও তিন বছরের সাজা হওয়ার ১৬ দিন পরেও তাঁর সদস্যপদ বাতিল হয়নি।