নিশ্চয়ই ভাবছেন এ তো জামাইষষ্ঠী। তা আবার নতুন কী? হ্যাঁ ঠিকই ভেবেছেন। কিন্তু আমরা আজকে যে জামাইষষ্ঠীর গল্প তুলে ধরছি তা এক রূপান্তরকামী নারীর জামাইষষ্ঠী, যা অভিনয়ের মাধ্যমে তুলে ধরলেন অভিনেতা সুমন চৌধুরী।
জামাইষষ্ঠী মানেই মেয়েরা বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে বাবার বাড়িতে ষষ্ঠী করতে যায় তা সকলেরই জানা। কিন্তু যারা পুরুষ হয়েও নারী হিসেবে স্বীকৃতি পেতে চান সমাজে অথবা যারা ছেলে হিসেবে জন্মগ্রহণ করেও নিজেকে নারীতে রূপান্তর করে কোনও পুরুষকে বিয়ে করতে চান, তাদেরও জামাইষষ্ঠীতে বরের সঙ্গে বাপের বাড়িতে ষষ্ঠী করতে যাওয়ার সুপ্ত বাসনা থেকেই যায়। কিন্তু সমাজের চোখে তারা আজও উপেক্ষিত। তাদের কপালে জোটে কখনও ঠাট্টা, মশকরা আবার কুরুচিকর মন্তব্য ছাড়া আরও কত কী। আজও সমাজ তাঁদের মেনে নিতে পারেনি। এমন কী রূপান্তরকামী পরিবারের বাবা-মা, ভাই-বোন থেকে শুরু করে আত্মীয়স্বজন বা পাড়া প্রতিবেশিরা কেউই সুনজরে দেখেন না।
আরও পড়ুন: Ambulance Fare | অ্যাম্বুল্যান্স দৌরাত্ম্য রুখতে কড়া রাজ্য! ভাড়া বেঁধে দেওয়া হল মাত্র ২৫ টাকায়
লিঙ্গ পরিবর্তন ব্যয়সাপেক্ষ হওয়ার ফলে অনেকেই নিজেদের বিজ্ঞানসম্মতভাবে নারীর রূপ দিতে পারেন না। যার ফলে নারী হওয়ার ব্যাকুল ইচ্ছে নিয়ে সমাজের সঙ্গে যুঝতে না পেরে গুমরে গুমরে মরছেন। এমনকী তাদের সমাজে তির্যক মন্তব্যেরও শিকারও হতে হয়। এই আন্দোলন, প্রতিবাদ, এবং তাদের পাশে থাকার বার্তা দিতে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে এগিয়ে এলেন আসানসোলের বার্নপুরের বাসিন্দা অভিনেতা সুমন চৌধুরী। এবার জামাইষষ্ঠীতে রূপান্তরকামীদের শ্রদ্ধা জানাতে এক বিবাহিতা মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা গেল সুমনকে। নিজে পুরুষ হয়েও সুমন কখনও দুর্গা সেজেছেন, কখনও বা বসন্ত উৎসবে অন্য নারী রূপে অভিনয় করেছেন। এবার রূপান্তর কামীদের শ্রদ্ধা জানাতে জামাইষষ্ঠীতে মেয়ে সেজে স্বামীর সঙ্গে বাপের বাড়িতে জামাইষষ্ঠী করতে আসার অভিনয় করলেন সুমন। উদ্দেশ্য একটাই, রূপান্তরকামীদেরও যেন সমাজ স্বীকৃতি দেয়। পাশাপাশি এক সাধারণ মেয়ের মতোই যেন ভালোবাসা পান বাড়ির সকলের কাছে। তবেই তারা সমাজেও ভালোবাসা পাবেন। সেই কারণে স্বামীর সঙ্গে জামাইষষ্ঠীর দিন একজন নারী হিসেবে বাপের বাড়িতে ষষ্ঠী করতে গেলেন ওই অভিনেতা। কেন তাঁর এই ভাবনা জানতে গেলে সুমন বলেন, যাঁরা মানসিকভাবে নারী বা রূপান্তরকামী নারী, তাঁদেরও সম্মান করা উচিৎ। এমনকী রূপান্তরকামী নারীকে বাবা ও মায়ের প্রথমে গ্রহণ করা উচিত। তবেই সমাজ গ্রহণ করবে এবং সমাজেও তাঁরা স্বীকৃতি পাবেন।