রায়দিঘি: খাতায় কলমে রাস্তা থাকলেও বাস্তবে দৃশ্যমান নয় সেই রাস্তা। এদিকে সেই রাস্তার জন্য বরাদ্দ ৩০ লক্ষ টাকাও খরচ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেই টাকা কোথায় খরচ হল তার সঠিক তদন্তের দাবি তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে এলাকার মানুষ। খাতায় কলমে রাস্তার কাজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেই রাস্তার কোনও চিন্হ নেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি বিধানসভার কৌতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের গরানকাঠি গ্রামের ঘটনা। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে গাজীর রাস্তা থেকে গোপাল মন্ডলের বাড়ি পর্যন্ত দীর্ঘ দেড় ১ কিলোমিটার ৫০ মিটার ঢালাই রাস্তার স্যাংশন হয়। যার জন্য বরাদ্দ হয় প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা।
গোপাল মন্ডলের বাড়ি থেকে গাজীর রাস্তা পর্যন্ত রাস্তার বেহাল দশা সেই বেহাল রাস্তার ওপর দিয়েই এলাকার মানুষ কষ্টকরে যাতায়াত করে। স্থানীয় পঞ্চায়েতে একাধিকবার জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। এমনকি প্রশাসনের কাজে বাড়ে বাড়ে দ্বারস্থ হয়েও কোনও ফল হয়নি। কিন্তু সরকারি খাতায় বরাদ্দকৃত ঢালাই রাস্তা গেল কোথায়? তারই তদন্ত নেমে চক্ষু চরক গাছ এলাকার মানুষদের।
আরও পড়ুন: পুজোর আগেই হাওয়া বদল!
এলাকার মানুষজন আরটিআই করে জানতে পারে গোপাল মন্ডলের বাড়ি থেকে গাজীর রাস্তা পর্যন্ত রাস্তার কাজ অনেকদিন আগেই সমাপ্ত হয়ে গেছে এবং তার জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা উঠে গেছে। সরকারি খাতায় পরিষ্কারভাবে লেখা রয়েছে ফিজিক্যালি কমপ্লিটেড। অন্যদিকে বিন্দুমাত্র কাজ হয়নি সেই রাস্তার। আর যা নিয়েই এলাকার মানুষজন প্রাক্তন প্রধান গ্রামের সদস্য সহ অঞ্চল সভাপতি বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হন। এ নিয়ে স্থানীয় বিডিও এসডিও থেকে শুরু করে ডিএমকে পর্যন্ত জানানো হয়েছে বিষয়টি কিন্তু তারপরেও মিল ছিল না কোন সূরাহা। শেষ পর্যন্ত গ্রামের বাসিন্দারা নিজেরাই চাঁদা তুলে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। পরবর্তী সময় ৬/৬/ ২০২৩ তারিখ হাইকোর্ট মথুরাপুর দু’নম্বর ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক কে ২১ দিনের মধ্যে ওই রাস্তার সম্পূর্ণ তথ্য নিয়ে পাঠানোর অর্ডার দেন। কিন্তু তারপরেও উদাসীন বিডিও।
এলাকার মানুষজনের দাবি গত জুন মাস থেকে হাইকোর্টের এই অর্ডার সিট নিয়ে একাধিকবার বিডিওর কাছে গেলেও তিনি আশ্বাসী দিয়েছেন শুধু কিন্তু কোনভাবেই সেই রাস্তার তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিচ্ছেন না। জার জেরেই শেষ রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে এলাকার মানুষজন। এলাকার মানুষজনের দাবি বিডিও কেন তদন্ত করছে না কেন উদাসীন বিডিও? যদি দুর্নীতি নাই হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করতে অসুবিধা কোথায়? অন্যদিকে এই বিষয় নিয়েই প্রাক্তন প্রধান বাসন্তী সরদারের দাবি তিনি কোন দুর্নীতির সাথে যুক্ত নয় এই ধরনের কোন কিছুই হয়নি। তবে বর্তমান কৌতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জানিয়েছে নিজেকে নতুন বলে দাবি করে দায় এড়িয়েছেন। অন্যদিকে এই বিষয় নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি, বিজেপির দাবি রায়দিঘির বিধায়ক অলকজলদাতার নেতৃত্বেই একাধিক পঞ্চায়েতে লক্ষ লক্ষ টাকা ১০০ দিনের কাছ থেকে শুরু করে রাস্তার কাজ দুর্নীতি হয়েছে। এই বিষয় নিয়ে আগামী দিন সমাধান না হলে ব্লক অফিসে ডেপুটেশন ও ধর্ণাতেও নামবে তারা। তবে কবে হবে এই রাস্তা কবে সুদিন ফিরবে এই এলাকার মানুষের সেই আশাতেই দিন গুনছে তারা।
দেখুন আরও খবর: