বর্ধমান: তৃণমূলের তোলাবাজি আর চলতে দেব না বলে হুমকি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) বর্ধমানের সভা থেকে হুঙ্কার মোদির। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ (BJP Candidate Dilip Ghosh ) এবং বর্ধমান পূর্বের বিজেপি প্রার্থী অসীমকুমার সরকারের সমর্থনে শুক্রবার নির্বাচনী প্রচার করেন তিনি। এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানাল তৃণমূলকে (Trinamool)। তৃণমূলের সঙ্গে বাম-কংগ্রেসকেও এক আসনে বসিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সন্দেশখালির প্রসঙ্গ টেনে মোদি বলেন, সন্দেশখালির (Sandeshkhali) মা-বোনেদের উপর যে অত্যাচার হল গোটা দেশ তার তদন্ত চাইছে। সেই অভিযুক্তকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। কারণ, ওই অভিযুক্তের নাম শাহজাহান শেখ? তৃণমূল তুষ্টিকরণ চালিয়ে যাচ্ছে। ভোটব্যাঙ্ক মানুষের চেয়েও বড়? এরা নতুন খেলা শুরু করেছে। মোদির বিরুদ্ধে ভোট জিহাদ কর। তৃণমূলের সব লুঠের হিসেব হবে। তাঁর অভিযোগ, বাংলায় তৃণমূলে তোলাবাজি সীমা ছাড়িয়েছে। সর্বত্র লুঠ আর তোলাবাজি চলছে। আর তৃণমূলের তোলাবাজি চলতে দেওয়া হবে না।
মোদি বলেন, দলিত, ওবিসি পিছিয়ে পড়াদের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক বাড়াতে চায় কংগ্রেস, তৃণমূল, বামেরা। কারণ দলিত, ওবিসি পিছিয়ে পড়ারা মোদিকে ভোট দেয়। যারা এতদিন কংগ্রেসের সঙ্গে ছিল এখন তারা মোদির সঙ্গে। ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে সংবিধান বদলে ফেলতে চায় কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ইন্ডিয়া জোটের (INDIA Allaince) কাছে দেশের জন্য কোনও ভিশন নেই। ওরা শুধু ধর্মের নামে দেশটাকে বিভাজন করতে চায়। আমার চ্যালেঞ্জ, দেশকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিক কংগ্রেস ও ইন্ডি জোটের পার্টিরা, ধর্মের নামে সংবিধান বদল করে পিছিয়ে পড়াদের সংরক্ষণে হাত দেবে না।
আরও পড়ুন: আমার শূন্যপদে আইপ্যাকের শীর্ষকর্তাকে বসানো হোক, দলকে আর্জি বিক্ষুব্ধ কুণালের
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃণমূল-বাম-কংগ্রেস রাজ্যের কী অবস্থা করতে পারে তা আপনারা জানেন। ত্রিপুরাকে ধ্বংস করে রেখে দিয়েছে বামেরা। গত পাঁচ বছরে ত্রিপুরার জীবন বদলে দিয়েছে বিজেপি। ওরা শুধু ভোটের জন্য সমাজকে ভাগ করতে চায়। দেশকে ভাগ করতে চায়। এই তৃণমূল-বাম-কংগ্রেস দিনরাত মোদিকে আক্রমণ করে চলেছে। বলছে মোদীকে গুলি করে দাও। আমি ওসবে ভয় পাই না। আগে বাংলায় বামেদের আমলে সূর্য অস্ত যেত না। এখন আর লাল পতাকা দেখা যায় না। এবার বাংলা তৃণমূলকে জেতাবে না। বাংলায় তৃণমূল ১৫টা আসন পার করতে পারবে না। কংগ্রেস যতই চেষ্টা করুক ৫০ টা আসনও পাবে না। দেশজুড়ে সিএএ চালু হবেই। মতুয়াদের ন্যায়বিচার দেওয়ার জন্য সিএএ আনার কথা বলছে আমাদের সরকার। তৃণমূল ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করার জন্য সিএএ-র বিরোধিতা করছে। সিএএ ওরা আটকাতে পারবে না। মতুয়ারা সব সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। কেউ আটকাতে পারবে না।
রামনবমীর শোভাযাত্রায় অশান্তি প্রসঙ্গে মোদি বলেন, তৃণমূলের শাসনে বাংলার হিন্দুরা দ্বিতীয় সারির নাগরিক হয়ে রয়েছে। বাংলায় হিন্দুদের এ কী হাল হয়েছে! প্রকাশ্যে তৃণমূলের বিধায়ক বলছেন, হিন্দুদের ভাগীরথীতে ভাসিয়ে দেবে। এটা কী ধরনের কথা। কী ধরনের সংস্কৃতি। বাংলায় হিন্দুদের সঙ্গে কী হচ্ছে এসব। জয় শ্রীরাম বললে ওদের জ্বর এসে যায়। ওদের রামমন্দিরের নির্মাণে আপত্তি আছে। রামনবমীর শোভাযাত্রায় আপত্তি আছে। তিনি আরও বলেন, রাজ্যের শিল্প নষ্ট করেছে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল। আপনাদের দুর্দশা, গরিবি দেখে আমার মন ছটফট করে। একটা পরিবারকে কত কষ্ট করতে হয়। আমি সেই গরিবি দেখেছি। কিন্তু আমি চাই না, এখন কোনও ভারতীয় এই রকম গরিবিতে বাঁচুক। আগামী ৫ বছরে আরও মানুষের দারিদ্র ঘুচে যাবে। দিলীপ ঘোষকে পাশে নিয়ে মোদি বলেন, দিলীপজি এত পরিশ্রম করছেন, বর্ধমানে তো আরও উন্নতি হবে। ধানের ক্ষেত্রে বর্ধমানের আবার জয়জয়কার হোক। শিল্পনগরী হিসেবে দুর্গাপুর গোটা দেশে আবার উজ্জ্বল হয়ে উঠুক।
দেখুন ভিডিও