কলকাতা: বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের (BGBS 2023) জন্য গঠিত টাস্ক ফোর্সের (Task Force) প্রথম বৈঠকটি হয়ে গেল শনিবার। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী (Chief Secretary H K Dwivedi) ওই বৈঠকের পৌরোহিত্য করেন। তিনি শিল্প ও পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাতাবরণ গড়ে তোলা ও রাজ্যে বাণিজ্য বান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার উপর জোর দেন। এই বৈঠকে অধিকাংশ আমলা ছাড়াও বিভিন্ন শিল্পপতি হাজির ছিলেন। শনিবার তারই প্রস্তুতি বৈঠকে বসেছিল টাস্ক ফোর্স।
আইটিসি কর্তা সঞ্জয় পুরী, পর্যটন ক্ষেত্র এবং অন্যান্য শিল্প প্রতিনিধি রুদ্র চট্টোপাধ্যায় বৈঠকে হাজির ছিলেন। রাজ্যের বিভিন্ন সচিব পর্যায়ের এবং শিল্পপতিরা সম্মিলিতভাবে পশ্চিমবঙ্গে শিল্প সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানে খনি এবং ধাতু শিল্প, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং পরিকাঠামো, রাসায়নিক, প্লাস্টিক, স্বাস্থ্য ও সিমেন্ট শিল্প নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। এছাড়াও এমএসএমই, রত্ন ও অলঙ্কার, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহণ, পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুৎ, নতুন নতুন উদ্ভাবনী শিল্পকে উৎসাহ প্রদানকে এবারের সম্মেলনে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে চিন্তাভাবনা করা হয়।
আরও পড়ুন: PM Narendra Modi | ফের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় ফাঁক, কনভয়ে ঢোকার চেষ্টা যুবকের
বৈঠকে মৎস্য চাষ, এবং সামুদ্রিক মাছ রফতানির উপর জোর দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। বিশেষত বাংলার ডেয়ারি ব্র্যান্ডকে ফ্রাঞ্চাইজি মডেলে তুলে ধরার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের নদীপথ নিয়েও নয়া ভাবনা রয়েছে সরকারের, তা নিয়েও কথা হয়।
গত ভোটে জেতার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) সরকারে দিশা বোঝাতে গিয়ে শিল্প স্থাপন ও বিনিয়োগের উপর জোর দিয়েছিলেন। কারণ শিল্প গড়ে উঠলেই এই আকাশপ্রমাণ বেকারিত্ব দূর করা যাবে। এছাড়াও রাজ্যের ভাঁড়ারে অর্থ আসবে। সেই কথা মাথায় রেখেই বেশ কয়েক বছর ধরে আয়োজন করা হচ্ছে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। বিনিয়োগে বাংলা এখন আকর্ষণীয় গন্তব্য বলেই এই সম্মেলনের মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিদের অনেকে। যোগ দিচ্ছে অনেকগুলি দেশের প্রতিনিধিদল।
কোভিড, লকডাউন এবং তার পরেও শ্লথগতির অর্থনীতিতে লগ্নি নিঃশেষ প্রায় সারা দেশেই। এই অবস্থায় বড় বিনিয়োগ টানা এ রাজ্যেও মুখের কথা নয়। কিন্তু প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে মনে করেন, তাজপুরে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ নিয়ে অনেক দূর এগিয়েছে রাজ্য। তাতে আগ্রহ দেখিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। কিন্তু, ইদানীং আদানি গোষ্ঠী নিয়ে যেভাবে সুর চড়িয়েছেন মমতা, ফলে ওই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী হবে তা হলফ করে বলা যাচ্ছে না। ডেউচা পাচামিতে বড় কয়লা খনি প্রকল্পের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে আশা জাগিয়েছে তেল। জঙ্গলমহলে প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকার লগ্নি সম্ভাবনাও উল্লেখযোগ্য। লগ্নি আসতে পারে তথ্যপ্রযুক্তিতেও।