কলকাতা: আমাদের ছাত্ররা মোবাইল ব্যবহার করে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগও খুবই কম। ভালো ফলের চাবিকাঠি কী তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে এমনটাই জানালেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের (Narendrapur Ramakrishna Mission) প্রধান শিক্ষক স্বামী ইস্তেশানন্দ। এবছরে উচ্চ মাধ্যমিকে (Higher Secondary) প্রথম হয়েছে শুভ্রাংশু সর্দার। ২০১৫ সালের পর ফের উচ্চ মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় শীর্ষে উঠে এল নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। বরাবরই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে চোখ ধাঁধানো রেজাল্ট করে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। তবে এবারের উচ্চ মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় প্রথম দশের মধ্যে নয়টি স্থান দখল করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছে নরেন্দ্রপুর।
বুধবার পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর প্রধান শিক্ষক বলেন, খুবই আনন্দের খবর। আমরা অনেকদিন ধরে আশায় ছিলাম। ২০১৫ সালের পর আবার উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র। শুভ্রাংশু ভালো ফল করবে বলেই প্রত্যাশা ছিল। তিনি বলেন, সকলেই সারা বছর ধরে প্রচুর পরিশ্রম করছে। আমাদের স্কুলের সব ছাত্রই আবাসিক। ফলে বেশির ভাগ সময়টাই তারা স্কুলে কাটায়। শিক্ষকরা পড়িয়েছেন, প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তার জন্যই ভালো ফল এসেছে।
প্রধান শিক্ষক বলেন, আমাদের ছাত্রদের মোবাইলের প্রতি কোনও আসক্তি নেই। তারা সোশ্যাল মিডিয়াতেও খুব কম অ্যাক্টিভ। আজকে সাফল্যের বড় কারণ ছাত্রদের নিয়মানুবর্তিতা। তারা ধারাবাহিক ভাবে পড়াশোনা করার সুযোগ পায়। অবশ্য এর পিছনে শিক্ষকদের অবদানও কম নয়।
নরেন্দ্রপুরের কৃতী ছাত্র শুভ্রাংশু ৪৯৬ (৯৯.০২ শতাংশ) পেয়ে প্রথম হয়েছে। শুভ্রাংশুর কথায়, ভালো ফল যে হবে আশা করেছিলাম। তবে প্রথম হব, তা ভাবিনি। আমি দিনে মোটামুটি চার ঘণ্টা পড়াশোনা করতাম। তার মতে, আসল কথা হল পড়ায় মনোনিবেশ করা। পরীক্ষায় ভালো ফল করতে হলে প্রচুর খাটতে হবে। না খাটলে কিছুই হবে না। শুভ্রাংশু বলে, আমাদের স্কুলে একটা ঐতিহ্য আছে। স্কুলই ছাত্রদের তৈরি করে দেয়। নিজের সাফল্যের জন্য সে কৃতজ্ঞ স্কুল এবং শিক্ষকদের প্রতি।
শুভ্রাংশুই নন, নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের পড়ুয়ারা এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখেছে। চতুর্থ হয়েছে নরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৩। ৪৯১ নম্বর পেয়ে রাজ্যে ষষ্ঠ হয়েছে অর্কদীপ ঘরা। ওই স্কুল থেকে ৪৯০ নম্বর পেয়ে সপ্তম হয়েছে বিতান শাসমল, অর্ক ঘোষ এবং অভিরূপ পাল। ৪৮৯ নম্বর পেয়ে অষ্টম হয়েছে সৈয়দ সাকলাইন কবীর। ৪৮৮ পেয়ে রাজ্যে নবম হয়েছে সায়ন সাহা এবং অর্কপ্রতিম দে।