Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeদেশUnion Budget 2023: নির্মল সম্মোহনের বাজেট, ভোটের অশ্বমেধের ঘোড়া ছোটালেন সীতারামন

Union Budget 2023: নির্মল সম্মোহনের বাজেট, ভোটের অশ্বমেধের ঘোড়া ছোটালেন সীতারামন

Follow Us :

একটা বাজেটেই (Union Budget 2023) ৯ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের (Assembly Vote 2023) অশ্বমেধের ঘোড়া ছুটিয়ে দিলেন নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman)। কোভিড (Covid 19) মহামারি পরবর্তী বিশ্ব অর্থনীতির (World Economy) ঘোর দুর্নীতিতেও দরাজ বিলিবণ্টনের ব্যবস্থা করলেন। কিন্তু এই বিপুল খরচের বহর কী পথে মিটবে, তার কোনও দিশা মিলল না বাজেটে। সব ক্ষেত্রতে খয়রাতির ব্যবস্থা করে মধ্যবিত্ত ও আমজনতার মুখে আপাত হাসি ফোটালেও রাজস্ব ভাঁড়ারে কোথা থেকে টাকা আসবে তার পথ কি বাতলালেন সীতারামন?

বাজেটের অগ্রাধিকারে তিনি সাতটি দিশার কথা বলেছেন। যার নাম দিয়েছেন ‘সপ্তঋষি’। যেগুলি হল, উন্নয়ন, শেষপর্যন্ত লক্ষ্যে পৌঁছানো, পরিকাঠামো এবং বিনিয়োগ, সম্ভাবনার উন্মোচন, পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন, যুবশক্তি এবং আর্থিক ক্ষেত্র।

আরও পড়ুন: Union Budget 2023: কেন্দ্রীয় বাজেটে মহিলাদের জন্য ‘মহিলা সম্মানপত্র’, প্রবীণদের জন্য সেভিংসে সুবিধা

ভারত কৃষিপ্রধান ও নদীমাতৃক দেশ। তাই এবারের বাজেটে ভোটকে লক্ষ্য করে কৃষি ও মৎস্যজীবীদের জন্য ঢালাও প্রকল্প আনা হয়েছে বাজেটে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নেও ব্যাপক প্রকল্পের উল্লেখ করা হয়েছে। বাজপেয়ি সরকারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই থেকে আদিবাসী উন্নয়ন এবং উত্তর-পূর্ব অঞ্চল উন্নয়ন দফতর কাজ করছে। এর মূল লক্ষ্যই হল সমাজের অন্ত্যজ মানুষের কাছে পৌঁছনো।

প্রসঙ্গত, এ বছর এবং আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যেই ত্রিপুরা, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, কর্নাটক, মিজোরাম, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও তেলঙ্গানায় বিধানসভা ভোট হবে। যার প্রতিটিতেই বিপুল সংখ্যক আদিবাসী ভোটার রয়েছেন। যেদিকে তাকিয়ে বেশ কয়েকটি আদিবাসী উন্নয়নে ঢালাও প্রকল্প চালুর ঘোষণা করেন নির্মলা। শুধু তাই নয়, কংগ্রেস শাসিত কর্নাটকের মধ্যাঞ্চলে খরাকবলিত এলাকার জন্য ৫৩০০ কোটি টাকার কেন্দ্রীয় সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলেন তিনি।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় প্রায় ৬৬ শতাংশ বরাদ্দ বৃদ্ধি করে ৭৯ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব রেখেছেন সীতারামন। বিরোধী রাজ্যগুলির মুখ বন্ধ করতে ৫০ বছরের জন্য সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা আরও এক বছরের জন্য বাড়িয়ে দেওয়া হল। রেলেও রেকর্ড পরিমাণ বরাদ্দ বৃদ্ধি করে ২.৪০ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এছাড়া ৫০টি অতিরিক্ত বিমানবন্দর, হেলিপোর্ট গড়ে তোলা হবে। 

এসবের মধ্যে মাস্টার স্ট্রোক হল আয়করে ছাড়। চাকরিজীবী মানুষকে উল্লেখযোগ্য ছাড় দিয়ে মধ্যবিত্তদের মধ্যে জনপ্রিয়তা কেড়ে নিতে সাহায্য করবে এই বাজেট। এভাবে সীতারামনের এই দরাজ ও প্রজাপ্রেমী বাজেটের মূল লক্ষ্যই হল দেশে ফের একবার রামরাজ্য কায়েম রাখা। 

এবছর ও আগামী বছরের গোড়াতেই যে যে রাজ্যে ভোট রয়েছে, সেগুলিতে বিজেপি খুব ভালো অবস্থায় নেই। তার থেকেও বড় কথা ২০২৪ সালেই অনুষ্ঠিত হবে লোকসভা নির্বাচন। ফলে আগামী বছর আর পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করতে পারবে না সরকার। সে কারণে দেশের মানুষের মনভোলানো পদক্ষেপের এটাই শেষ সুযোগ ছিল। ৯টি বিধানসভা ভোটের ফলের উপরেই নির্ভর করবে আগামী লোকসভার ভাগ্য। শুধু তাই নয়, ৯টি বিধানসভা ভোটই বিজেপির কাছে একাধারে চ্যালেঞ্জ ও মোদির ভাবমূর্তি রক্ষার লড়াই। তাই আখেরে দেশের অর্থনীতির বিকাশ হবে না বিনাশ, তার কোনও স্পষ্ট দিশা ছাড়াই এই বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী।

যে বাজেটে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তকে খুশি করার মতো নেশার মশলা আছে, আবার মুখে গন্ধ না-হয়, এমন মুখশুদ্ধিও আছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বাজারদর কমানোর রাস্তা কোথায়! মুদ্রাস্ফীতি রোধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার? সর্বোপরি খরচ কত, আয় কত তার হিসেব কোথায়? খয়রাতি ও বিনি পয়সার ভোজ দিলে ভোট তো আসবে, কিন্তু দেশের যুবসমাজের ভবিষ্যৎ কী? রামরাজ্য রক্ষায় সকলকে কি তবে অগ্নিবীর হতে হবে!

সরকারি চাকরির কী হল, আজ যাদের বয়স ১৮ থেকে ২১ বছরের মধ্যে, তাদের শিক্ষাঙ্গন পেরনোর পর চাকরি আসবে কোথা থেকে, তারও কোনও রাস্তা নেই। ফলে, এই বাজেট এককথায় আয়নার দিকে তাকিয়ে হাসা ছাড়া আর কিছু নয়। যা দেখছেন, তা সত্যি নয়। আদতে এ হল নির্মল সম্মোহনের বাজেট।

RELATED ARTICLES

Most Popular