Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeআজকেAajke | গণতন্ত্র, মানুষের গণতন্ত্র, তৃণমূলের নবজোয়ার

Aajke | গণতন্ত্র, মানুষের গণতন্ত্র, তৃণমূলের নবজোয়ার

Follow Us :

ধীরে ধীরে জল বাড়লে তা সামলানো যায়, কিন্তু হড়পা বান এলে? সুনামি এলে সব লন্ডভন্ড হয়ে যায়, এ তো আমাদের জানা। তো তৃণমূলের এই নবজোয়ারের ঘোষণায় এরকম আশঙ্কা তো ছিলই। হঠাৎ করে এই জোয়ার এলে তা সামলানোর ব্যবস্থা কেমন তা জানার ইচ্ছেও ছিল। আজ সেই জোয়ার সুনামি হয়ে আছড়ে পড়ল সিতাইয়ে। কথা ছিল মানুষের মতামত নিয়ে, মানুষের ইচ্ছে জানার পরেই মানুষের প্রতিনিধি বাছা হবে, কিন্তু সেসবের আগেই উৎসাহের জোয়ারে ব্যালট বক্স লন্ডভন্ড হয়ে গেল। এটাই ছিল নবজোয়ারের আজকের ছবি। অভিষেক বলেছেন এ অতি উৎসাহীদের কাজ, মানুষের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের বহিঃপ্রকাশ। আগামিকাল আবার ওই মাঠেই আবার নতুন ব্যালট বক্স রাখা হবে। কাল আবার মানুষের সমর্থনের জাঁচ পড়তাল। বাংলার বিশাল এই পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় হাজার পঞ্চাশেক মানুষের নির্বাচন প্রার্থী সরাসরি বেছে নেওয়ার কথা বলাটাও তো এক হিম্মতের ব্যাপার, তা করে দেখানো যে আরও শক্ত তা তো অভিষেকেরও জানা। সব থেকে বড় কথা হল এই পঞ্চায়েত দীর্ঘদিন ধরেই হয়ে উঠেছে ঘুঘুদের বাসা, এখান থেকেই দুর্নীতির প্রথম পাঠের শুরুয়াত, কাজেই এই বিরাট মধুভাণ্ডকে ঘিরে বহু ধান্দাবাজ মানুষের জমায়েত, সে জমায়েত তো বিরোধীদের ঘিরে হবে না, শাসকদের ঘিরেই হবে। কাজেই সেই আবর্জনা সরাতে যে জনজোয়ার চাই তা কি তৈরি করতে পারবেন অভিষেক? কীভাবেই বা বেছে নেওয়া হবে জনপ্রতিনিধিদের, আর সেই বাছাইয়ের প্রথম দিন কেমন ছিল সেটাই বিষয় আজকে, জনজোয়ারের সুনামি।

সেই কবে ষোড়শ জনপদের ইতিহাসে আমরা দেখেছি, পার্টিসিপেটরি ডেমোক্র্যাসি, মানুষ হাত তুলে তাদের প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করেছে, তাদের একজন রাজা হয়েছে। গ্রিসেও এমন ব্যবস্থা ছিল, বিশাল অ্যাম্ফিথিয়েটারে বসে মানুষ ঠিক করতেন কে হবেন আগামী শাসক। কিন্তু ষোড়শ জনপদে বা গ্রিসে এই নির্বাচনে যাঁরা হাত তুলতেন, যাঁদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে নির্বাচিত হত শাসক বা শাসকমণ্ডলী, তাঁরা ছিলেন অভিজাত শ্রেণির। এরপর এই পার্টিসিপেটরি ডেমোক্র্যাসির চেহারা আমরা দেখেছি আফগানিস্তানে, সেখানে এলাকার মানুষের প্রতিনিধিরা মিলে এক অঞ্চলের শাসক নির্বাচিত করতেন। এরপর আধুনিক ইতিহাসে ১৯১৭, রাশিয়ার বিপ্লবের পরে আমরা দেখেছি গ্রাম সোভিয়েত, খানিক আমাদের গ্রামসভা ধাঁচের ব্যবস্থা, তার নেতাদের সরাসরি নির্বাচিত করতে। তারপর এই মানুষের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে নির্বাচিত হওয়াটা খানিক কমিউনিস্ট মতাদর্শের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, যদিও ইতিমধ্যে তা এক চরম আমলাতান্ত্রিক বিকৃতির শিকার হয়েছিল। মানুষের নয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা হয়ে দাঁড়িয়েছিল এক দলের শাসন। ভারতবর্ষের কমিউনিস্টরা অবশ্য সে পথে হাঁটেননি, হেঁটেছিলেন কেজরিওয়াল।

আরও পড়ুন: আবার জোট, জোটের ভোট (24.04.23)

অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বে আপ প্রথম মানুষের কাছে রায় নিয়ে প্রার্থী ঠিক করার কথা বলে, সেদিকে খানিক কাজও হয়েছে। আমরা দেখেছি মানুষের সমর্থন নিয়ে আপ-এর প্রার্থী ঠিক হয়েছে। এবার সেই মডেল নিয়ে মাঠে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা লোকসভা হলেও সুবিধে হত, কারণ সংখ্যাটা কম হত, কিন্তু ৫০ হাজার প্রার্থীকে সরাসরি বেছে নেওয়া এক হারলিউলিয়ান টাস্ক। তার ওপরে রয়েছে তৃণমূল দলের তৃণমূলেই ছড়িয়ে থাকা দুর্নীতি। প্রথম দিনের এই বিশৃঙ্খলা দেখে শুভেন্দু মুচকি হাসবেন, সুজন চক্রবর্তী টিপ্পনি কাটবেন, অধীর চৌধুরী গেঞ্জির বুক পকেট মার্কা মন্তব্য করবেন। কিন্তু সত্যিই যদি এটা করা যেত? সত্যিই যদি প্রত্যেক দলের প্রার্থী মানুষের সমর্থনেই প্রার্থী হতেন, তার পোষা গুন্ডার চাপে নয়, তার ঘুষের টাকার দৌলতে নয়, প্রতিদিন মানুষের মধ্যে থাকার শর্তেই যদি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা উঠে আসতেন? ইউটোপিয়া? এসব কেবল কল্পনা? তাই কি? মানুষ কী ভাবছেন? মানুষের কাছে আগাম রায় নিয়েই পঞ্চায়েতে প্রার্থী দেওয়ার কথা বলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তা কি এক অলীক কল্পনা? তা কি অবাস্তব?

মানুষের মধ্যে থেকেই উঠে আসবে তার প্রতিনিধি, সাধারণ মানুষের মতোই তার গায়ে লেগে থাকবে কান্না ঘাম আর রক্ত। এতদিন যারা দুর্নীতির সার আর ক্ষমতার মত্ত আস্ফালন থেকে জন্ম নিয়েছে, যাদের গায়ে নামাবলির মতো লটকে আছে জন প্রতিনিধির তকমা, তারই আড়ালে যারা নিজেদের আখের গোছাতেই ব্যস্ত তারা সরে যেতে বাধ্য হবে, এমনটা কি সম্ভব নয়? যদি অভিষেকের এই পরিকল্পনা এক স্টান্টবাজি হয়, নির্বাচনী প্রচারের অঙ্গ মাত্র হয় তাহলে কিছু বলার নেই, কিন্তু যদি এটাই স্বপ্ন হয়, যদি এটাই তিনি মনে করে থাকেন, যে এভাবেই উঠে আসবে জনপ্রতিনিধি, তাহলে সে যদি অলীক স্বপ্নও হয় হোক না, গান শুনেছি শুভেন্দু মাইতির মুখে, “স্বপ্ন ছাড়া মানুষ বাঁচে নাকি? স্বপ্ন ছাড়া কেমন করে গান গাইবে পাখি? স্বপ্ন আর ফুলের জন্য মরতে হলেও মরো, স্বপ্ন দেখার সাহস করো।” হ্যাঁ, আসুন আমরা স্বপ্ন দেখার সাহসটা অন্তত দেখাই।

 

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Locket Chatterjee | ‘আইপ্যাকের ছেলেরা টাকা নিয়ে ঢুকেছে’, তৃণমূলের এজেন্টকে বের করে দিলেন লকেট!
00:00
Video thumbnail
Loksabha Election 2024 | ভোটে হাওড়ায় হাতাহাতি, তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তীর বচসা
02:18
Video thumbnail
Loksabha Election 2024 | চলতি নির্বাচনে কার দখলে যাবে হাওড়া লোকসভা কেন্দ্র?
02:20
Video thumbnail
Loksabha Election| দিল্লির কুর্সি দখলের লড়াইয়ের পঞ্চম দফা, বাংলায় শ্রীরামপুর, ব্যারাকপুর, বনগাঁয় ভোট
01:52
Video thumbnail
Loksabha Election 2024 | ভোটে উত্তপ্ত স্বরূপনগর, বিজেপি কর্মীদের লোহার রড দিয়ে 'মারধর'
05:02
Video thumbnail
Lok Sabha Elections 2024 | সকাল থেকে ‘অ্যাকশন মোডে’ দীপ্সিতা, জেতার পক্ষে আশাবাদী সিপিএম প্রার্থী
02:27
Video thumbnail
Lok Sabha Election 2024 | ধনেখালিতে 'ভুয়ো' এজেন্ট ধরলেন লকেট, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানকেও ধমক লকেটের
03:02
Video thumbnail
Rachna Banerjee | 'আজ কোনও হুঙ্কারের দিন নয়, খুশির দিন', মানুষের রায় নিয়ে আশাবাদী রচনা ব্যানার্জি
01:25
Video thumbnail
Lok Sabha Election 2024 | কাঁচড়াপাড়ার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটে বাধা দেওয়ার অভিযোগ শাসকদলের বিরুদ্ধে
02:52
Video thumbnail
Lok Sabha Election 2024 | আমডাঙায় বুথে বুথে উত্তেজনা! BJP এজেন্টকে বসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ
02:43