নয়াদিল্লি: ইন্ডিয়া জোটের (INDIA Bloc) চতুর্থ বৈঠক বসবে আগামী ১৯ ডিসেম্বর। রবিবার সন্ধ্যায় এক্স বার্তায় একথা জানান কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ (Jairam Ramesh)। নয়াদিল্লিতে (New Delhi) বিজেপি বিরোধী জোট বৈঠক হবে দুপুর ৩টের সময়।
ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল আগামী ১৭ ডিসেম্বর। কেন সেই তারিখ পিছানো হল, তার কোনও কারণ জয়রাম রমেশ দেননি। তিন রাজ্যে হারের পরই জোট রাজনীতি নিয়ে কংগ্রেসের (Congress) তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই একতরফা ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয় বলে অভিযোগ। সেই আগুনে আঙুল পোড়ানোর পর ক্ষত মেরামতে কংগ্রেস জানিয়ে দেয় এমাসের তৃতীয় সপ্তাহে সকল শীর্ষ নেতার সুবিধামতো একটি দিন বৈঠক ডাকা হবে।
আরও পড়ুন: ২ উপমুখ্যমন্ত্রী পাচ্ছে ছত্তিশগড়, রমন স্পিকার
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত মঙ্গলবারই বিধানসভায় জানিয়ে দেন, বৈঠকের বিষয়ে তাঁকে খবরই দেওয়া হয়নি। আর তা নিয়ে হইচই পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। এমনিতেই হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতা দখল করায় দেওয়ালে পিঠ ঠেকে রয়েছে কংগ্রেসের।
এদিকে, লোকসভা ভোটে বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদিকে টেক্কা দিতে ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যৎ নিয়েও সংশয় আরও বাড়ছে। অনেকেই সন্দেহ করছেন, তিন রাজ্যে বিপুল জয়ের পর বিজেপি শরিক দলগুলিকে ভাঙানোর নতুন খেলায় মাতবে। শুধু তাই নয়, অনেক শরিক দলের নেতাই নৌকা বদলের জন্য যোগাযোগ শুরু করেছেন ইতিমধ্যেই। তারই আভাস পাওয়া গিয়েছে, ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম কারিগর নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দলেই।
জেডিইউয়ের লোকসভা সদস্য সুনীলকুমার পিন্টু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করে বলেছেন, মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। সীতামড়ীর এমপি পিন্টু বলেন, বিজেপি যে স্লোগান দিয়েছিল, এই ভোটের ফলে সেটাই প্রমাণ হয়েছে। তাঁর এই কথার জবাবে দলের মুখপাত্র নীরজ কুমার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মোদির প্রতি এত প্রীতি থাকলে উনি ইস্তফা দিন না কেন!
আসলে কিছুদিন আগেও দেশের প্রাচীনতম দলের যে কলার উঁচু করা হাবভাব ছিল, তাতে কালি পড়েছে। এই অবস্থায় একদলীয় দাদাগিরি মানতে রাজি নয় আঞ্চলিক দলগুলি। শুধু মমতাই নন, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন এবং সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব মল্লিকার্জুন খাড়্গের বাড়িতে হাজির থাকতে পারেননি। কংগ্রেস সূত্র জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ও তার পরবর্তী পরিস্থিতির দরুন স্ট্যালিন আসতে পারবেন না। নীতীশ কুমারের শরীর ভালো নেই। মমতা এবং অখিলেশ জানিয়েছেন, তাঁদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি আছে। এ কারণে জোট বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয় বলে কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকে কংগ্রেস একাই বিজেপিকে পরাস্ত করার নেশায় ময়দানে নেমে পড়েছিল। কারও সঙ্গে যৌথ লড়াইয়ে যাওয়া কিংবা আসন সমঝোতার রাস্তায় যায়নি। এতেই শরিকদের অনেকেই কংগ্রেসের উপর খাপ্পা ছিল। কিন্তু, ভোটের ফলপ্রকাশের দিনই বেগতিক দেখে কংগ্রেস নেতৃত্বের ফের ইন্ডিয়া জোটের শরণাপন্ন হয়ে ওঠাকে তারা ভালো চোখে নেয়নি। ফলে ইন্ডিয়া জোটের স্টিয়ারিং ও গিয়ার দুটোই হাতে নিতে চাইছে আঞ্চলিক দলগুলি।
অন্য খবর দেখুন