‘ডিস্কো কিং’ জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী বাপ্পি লাহিড়ীর ‘গোল্ড লাভার’ হিসেবেও যথেষ্ট খ্যাতি ছিল। সোনার প্রতি বাপ্পির অনুরাগের কথা সকলেরই জানা। তাঁর ভক্তদের কাছেও এই পরিচয়টাও যথেষ্ট আলোচ্য বিষয় ছিল। সর্বদাই তাঁকে প্রকাশ্যে দেখা যেত জমকালো পোশাক, চোখে রোদ চশমা আর গলায় গোছা গোছা সোনার হার,হাতে আংটি। সোনার অলংকার সংগ্রহে তাঁর কিছু কমতি ছিল না। সোনার ব্রেসলেট, লকেট,চায়ের কাপ এমনকি জুতো,ঘড়ি কিংবা টুপি সবই ছিল তাঁর সংগ্রহে। অনেকেই জানেনা বাপ্পি লাহিড়ীর পরিচয় সোনার গহনার ওজন কত কিংবা তার কাছে মোট কত ওজনের গণনা ছিল! এমনকি তার বাজার মূল্যই বা কত হতে পারে? তাঁর গলায় অন্যতম বিখ্যাত একটি সোনার হার ছিল যেখানে ইংরেজি হরফে ‘B’ লেখা ছিল। অর্থাৎ তার নামের আদ্যক্ষর। এছাড়াও ছিল বিখ্যাত গণেশ মূর্তির সোনার হার। যা মাইকেল জ্যাকসনকেও আকর্ষণ করেছিল। একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৪ সালে শ্রীরামপুর আসন থেকে বাপ্পি লাহিড়ী লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সেই সময় হলফনামায় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ উল্লেখ করেছিলেন বলিউড সংগীতশিল্পী। সেই তথ্য অনুসারে তার সোনার পরিমাণ ছিল ৭৫৪ গ্রাম। সোনা ছাড়াও রূপো ছিল প্রায় ৪.৬২ কেজি। প্রতিদিন তিনি ৮থেকে ৯টা সোনার চেন পড়তেন।
অবশ্য তিনি কেন এত সোনার গহনা পড়তেন তার ব্যাখ্যা নিজেই দিয়েছিলেন,’হলিউডের বিখ্যাত গায়ক এলভিস প্রেসলি সোনার গহনা গলায় পড়তেন। আমি ছিলাম তার একনিষ্ঠ ভক্ত। সবসময় ভাবতাম আমি যদি কখনো সাফল্য পাই তবে নিজের ইমেজ আলাদা ভাবে তৈরি করব। ভগবানের আশীর্বাদে আমি সোনা দিয়ে অন্য একটা ইমেজ তৈরি করতে পেরেছি। সোনা আমার কাছে সৌভাগ্যের প্রতীক। আমি লোক দেখানোর জন্য সোনার গহনা পরিনা’। আমরা সবাই জানি গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রখ্যাত সুরকার-গায়ক বাপ্পি লাহিড়ী আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। অনেকেরই মনে প্রশ্ন তার এই বিপুল সোনার সংসার নিয়ে কি করছে তার পরিবার! সম্প্রতি এ বিষয়ে শিল্পীর ছেলে বাপ্পা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন,’বাবা সোনার গহনা ছাড়া কখনো বাড়ীর বাইরে পা রাখতেন না। এমনকি ভোর পাঁচটায় যদি ফ্লাইট ধরতেন তখনও তিনি সোনার গহনা পরেই বের হতেন। বাবার সমস্ত সোনার গহনা যাতে তার ভক্তরা একসঙ্গে দেখতে পারেন সেজন্য সেগুলো একটি সংগ্রহশালা রাখার ব্যবস্থা করা হবে। সোনার জিনিসপত্র ছাড়াও তার ব্যবহৃত বেশ কিছু জিনিস থাকবে সেখানে। যেখানে সোনার জুতো,ঘড়ি,রোদচশমা,টুপি অন্যান্য গহনা-সামগ্রী থাকবে সেই মিউজিয়ামে। বাবার স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি’।