ছোটবেলার পুজোর আমেজের কথা উঠলে যে স্মৃতি বারবার ভেসে আসে অভিনেতার মনে, তা হল চার দিন পাড়ায় সবাই মিলে থিয়েটার করা। সেই মঞ্চে পাড়ার কাকা-জ্যাঠাদের পরিচালনায় তাঁর অভিনয়ে হাতেখড়ি। পুজোর আগে থেকে নাটকের মহড়া দেওয়াই হোক কিংবা পাড়ার পুজোয় সবাই মিলে জমিয়ে খাওয়াদাওয়া, সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া সেই সব মুহূর্ত এখনও অমূল্য অম্বরীশের কাছে।
অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্যের পায়ের তলায় সর্ষে। কখনো তাঁকে দেখা যায় ধারাবাহিকের শুটিং-এ। কিছুক্ষন পর আবার তাঁকে দেখা যায় জয়পুরে। এহেন অম্বরীশের পুজোও কি কাটবে বাইরে বাইরেই ? অম্বরীশের কথায়, “নিজের মধ্যে থাকতে ভালোবাসি। বড়জোর ২১ কি ২২-এ নতুন জামা-কাপড় শেষ পড়েছি । তখন মনে হতো অনেক পুজোর জামা হয়েছে। সেই পড়ে পাড়ার প্যান্ডেলে চক্করও কাটতাম। কিন্তু এখন একটু মুখচোরা। তবে এখন নতুন জামা-কাপড় যে একদমই ব্যাড তা নয়। কাজের অছিলায় সারা বছর নতুন জামা পড়ি। অভিনয়ে একটু আধটু নাম হওয়ার পর থেকেই রাস্তায় আগের মতো বেরনোয় চাপ। রাত জেগে কতবছর ঠাকুর দেখি না। সারা বছর কাজের অছিলায় সাজি, কেনাকাটা করি। কিছু দোকান ঠিক করা। আছে বলা আছে, নতুন কালেকশান এলেই বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে। ওঁদের পাঠানো পোশাক থেকে পছন্দসই জামা বেছে নিই।”
নিজের চেহারা নিয়ে অম্বরীশ জানান, “অনেকেই ভাবেন , আমার প্লাস সাইজ পোশাক বুঝি মেলে না। আসলে কিন্তু তা নয়। আমি লক্ষ্য করেছি মেয়েরা বেনিয়ম বড্ড ভালবাসে।পুজো এলেই আমার চোখে সবাই সুন্দরী। একঝাঁক ছেলেদের মাঝে মেয়েদের নজর করার সবচেয়ে সহজ উপায় পুরনো পোশাক পরো। সবাই যখন নতুন সাজে ধোপদুরস্ত আপনি তখন আলুথালু পুরনো বেশে। পুরোপুরি ব্যতিক্রম। খেয়াল করতাম, মেয়েরা কিন্তু ঘুরেফিরে আমাতেই আটকে যেত।”এ বছর পুজোয় উৎসবের শহরে থাকা হচ্ছে না। দ্বিতীয়াতেই অম্বরীশ পাড়ি দিচ্ছেন নিউ জার্সি। শহরে ফিরবেন একেবারে লক্ষ্মীপুজোর পরে। এখানে থাকলে পুজো কী ভাবে কাটাতেন তিনি? সদাহাস্যময় অভিনেতার গলায় যেন চোরা দুঃখের টান, “পাড়ার পুজোটা এখন আর আগের মতো নেই। তাই আর তেমন যাওয়া হয় না।” উদ্যোগী মানুষের অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ছোটবেলার সেই সাধের নাটকের অনুষ্ঠানও। বাড়িতে নিজের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোই এখন অম্বরীশের পুজোর রোজনামচা। পুজো পরিক্রমা হয়ে ওঠে না সে ভাবে। বরং অভিনেতা এখনও সুযোগ পেলেই ডুব দেন ছোটবেলার পুজোর স্মৃতিতে।