পাসাডেনা: পৃথিবী ছাড়া এই ব্রহ্মাণ্ডে আর কোথাও কি প্রাণের অস্তিত্ব নেই? বহুকাল ধরে এই প্রশ্ন ভাবিয়ে তুলেছে বিজ্ঞানীদের। প্রাণের খোঁজে নিরন্তর গবেষণা চালাচ্ছেন তাঁরা। এবার তারই অঙ্গ হিসেবে এক নতুন মিশনের আত্মপ্রকাশ ঘটাল নাসা (NASA)। সৌরজগতের (Solar System) অন্যান্য গ্রহের প্রাণের সঞ্চারের পরিবেশ নেই। কিন্তু তাদের উপগ্রহগুলিতেও কি নেই? সেই প্রশ্নের উত্তর জানতেই বৃহস্পতির (Jupiter) বরফাবৃত উপগ্রহ ইউরোপার (Europa) উদ্দেশে পাড়ি দেবে নাসার ক্লিপার (Clipper) মহাকাশযান।
বৃহস্পতিবার এই মিশনের ঘোষণা করতে গিয়ে প্রোজেক্ট বিজ্ঞানী বব পাপ্পালার্দো (Bob Pappalardo) বলেছেন, “নাসা যে মৌলিক প্রশ্নের উত্তর জানতে চায় তা হল, ব্রহ্মাণ্ডে কি আমরা একা? আমাদের যদি প্রাণের সঞ্চারের অনুকূল পরিবেশ খুঁজতে হয় তবে কোনওদিন হয়তো ইউরোপায় প্রাণের খোঁজ পেতে পারি। তখন বলা যাবে যে আমাদের সৌরজগতে দুই জায়গায় প্রাণ আছে, পৃথিবী ও ইউরোপা।”
আরও পড়ুন: ভারতীয় পর্যটক ফেরাতে কী পদক্ষেপ করছে মালদ্বীপ? জেনে নিন
৫০০ কোটি ডলার মূল্যের এই মিশনের মহাকাশযান ক্লিপার এখন ক্যালিফোর্নিয়ায় নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবেরটিরিতে রাখা আছে। অক্টোবর মাসে তার উৎক্ষেপণ হবে। সৌরজগতের সবথেকে বড় গ্রহ বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপার উদ্দেশে পাড়ি দেবে সেটি। তার আগে ক্লিপারকে রাখা হয়েছে ‘ক্লিন রুম’-এ যেখানে খুব কম লোকেই ঢুকতে পারে। যারা ঢুকছেন তাদের আপাদমস্তক আবৃত। পৃথিবীর কোনও রকম জীবাণু যাতে ইউরোপায় ঢুকে না পড়ে তার জন্য এই সতর্কতা।
Take a deep dive into how we’ll use our science instruments to study Europa inside and out: https://t.co/ql2DI8uxSb https://t.co/jkHGFfdtQc pic.twitter.com/wncKnkRyXt
— NASA Europa Clipper (@EuropaClipper) April 11, 2024
এরপর ক্লিপারকে নিয়ে যাওয়া হবে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারে, যেখানে স্পেস এক্স সংস্থার ফ্যালকন হেভি রকেটে চেপে অন্তরীক্ষে পাড়ি দেবে সে। ইউরোপায় পৌঁছতে পাঁচ বছর লাগবে ক্লিপারের, তার মধ্যে আছে মঙ্গলগ্রহের কাছে গিয়ে গতি বাড়ানোর প্রক্রিয়া। ২০৩১ নাগাদ বৃহস্পতি ও ইউরোপার কক্ষপথ এলাকায় পৌঁছে যাবে ক্লিপার। তারপর শুরু হবে অনুসন্ধান। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস ইউরোপা জলীয় বরফে আবৃত।
পাপ্পালার্দো বলেছেন, “আমাদের কাছে ক্যামেরা, স্পেকট্রোমিটার, ম্যাগনোমিটার, এবং রেডার থাকবে যা বরফের স্তর ভেদ করে, জলস্তর ছুঁয়ে ফের পৃষ্ঠদেশে ফিরে আসতে পারবে। তা থেকেই আমরা বুঝতে পারব বরফের স্তর কতটা পুরু তরল জল কোথায় রয়েছে।” নাসার বিজ্ঞানী কিন্তু আগেই থেকেই বলে দিচ্ছেন যে তাঁরা ওই জলে সবুজ রংয়ের ভিনগ্রহী প্রাণীকে সাঁতার কাঁটতে দেখার আশা করেন না। এমনকী কোনওরকম প্রাণের খোঁজ পাওয়ার আশা রাখেন না। শুধুমাত্র প্রাণ ধারণের উপযোগী পরিবেশ খোঁজাই লক্ষ্য।
দেখুন অন্য খবর: