কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: যে দিকে দু’চোখ যায় না কেন সে দিকে শুধুই বরফ আর বরফ৷ ওই বরফ ঠেলে মোটা মোটা জ্যাকেট গায়ে হেঁটে চলেছে তিন যুবক৷ বোঝাই যাচ্ছে, পাহাড়ের অভিযাত্রী তাঁরা৷ এই ধরনের অভিযান মানেই, পদে পদে মৃত্যুর ভয়৷ কখনও আবহাওয়া প্রতিকূল হয়ে যায়, তীব্র ঠান্ডায় কখনও শরীর যোগ্য সঙ্গ দিতে চায় না৷ তবে এই সব বাধা পেরিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছনোর জেদ এবং আনন্দ পর্বতারোহীদের মানসিক শক্তি জোগায়৷ এমনই এক কঠিন লড়াইয়ে জিতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করল তিন নেপালি যুবক৷
হিমালয়ের কোলে জন্ম চ্যাং ডাওয়া এবং মিঙ্গমার৷ নেপালের বাসিন্দা দুই ভাই আসলে শেরপা৷ দুর্গম পবর্ত শৃঙ্গ জয় করা তাঁদের নেশা৷ সেই নেশার টানে ছোট ভাইকে নিয়ে দুই পর্বতারোহী বেরিয়ে পড়েন সাত মহাদেশের উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ এবং উত্তর-দক্ষিণ মেরু জয় করতে৷ সে কাজে তাঁরা কিছুটা সফল হয়েছেন৷ প্রথম নেপালি হিসেবে দক্ষিণ মেরু জয় করেন চ্যাং এবং মিঙ্গমা৷ আন্টার্টিকা থেকে ফিরে আসার পর সংবাদমাধ্যমের কাছে এ নিয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করেন শেরপা চ্যাং৷ তিনি বলেন, ‘ওখানে নিজের দেশের পতাকা বরফের মাটিতে গেঁথে আসতে পেরে দারুণ লাগছে৷ এ এক আলাদা অনুভূতি৷ পৌঁছনোর পর ওখানে অনেক দেশের জাতীয় পতাকা দেখেছি৷ কিন্তু আমাদের দেশের পতাকাটাই ছিল না৷’ শেরপা ভাইদের অদম্য জেদ এবং না হারার মানসিকতা জেরে ইগলু-স্লেজের দেশের মাটিতে এই প্রথম উড়ল নেপালি পতাকা৷
চ্যাং এবং মিঙ্গমার ছোট ভাইও পাহাড়ে চড়তে ওস্তাদ৷ মাত্র ১৯ বছর বয়সে তাশি লাকপা শেরপা হিমালয়ের সর্বোচ্চ চূড়া এভারেস্ট জয় করে৷ তাঁও কোনও সাপ্লিমেন্টারি অক্সিজেন ছাড়া৷ পর্বতারোহীদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সে এভারেস্ট জয় করার রেকর্ড তাশির দখলে৷ তাঁর দুই ভাই চ্যাং এবং মিঙ্গমা বিশ্বের সাত মহাদেশের সর্বোচ্চ চূড়া জয় করে ‘গ্র্যান্ড স্ল্যাম’ খেতাব জয়ের স্বপ্ন দেখেছেন৷ ভাইদের পর্বতশৃঙ্গ জয় অভিযানে সামিল হয়েছেন তাশিও৷
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: নেতাজির জন্মদিনকে জাতীয় ছুটি ঘোষণার দাবিতে সরব মমতা
চ্যাং জানিয়েছেন, ‘আমাদের স্বপ্ন সব মহাদেশের সর্বোচ্চ চূড়া জয় করার৷ সেই সঙ্গে দুই মেরু অভিযানও করতে চাই৷ এটা অনেকটা পর্বতারোহে মাস্টার ডিগ্রি অর্জনের মতো৷’ দুই মেরুর মধ্যে একটিতে নেপালি পতাকা ওড়ানো হয়ে গিয়েছে৷ বাকি রয়েছে উত্তর মেরু এবং পাঁচটি শৃঙ্গ জয়৷ চ্যাং মনে করেন, আর এক বছরের মধ্যে তাঁদের স্বপ্নপূরণ হবে৷ তারপর? হাসতে হাসতে শেরপা বলেন, ‘তারপর জীবনে রোমাঞ্চকর করার মতো কিছু বাকি থাকবে না৷’