কলকাতাঃ লোকসভা ভোটে পুর এলাকায় বিজেপির থেকে পিছিয়ে থাকার নৈতিক দায় মাথায় নিয়ে পদ থেকে ইস্তফা দিলেন পুরুলিয়া শহর তৃণমূল সভাপতি প্রদীপ দাগা। এর আগে পুর শহরের বিপর্যয়ের দায় স্বীকার করেছিলেন পুরুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান নবেন্দু মাহালি। প্রদীপের ইস্তফাপত্র জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও গ্রহণও করেছেন।
প্রদীপ তাঁর পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, লোকসভা ভোটে পুরসভার সমস্ত ওয়ার্ডে মানুষ যেভাবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে, তা আমি মাথা পেতে নিলাম। এই হারের নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে আমি ইস্তফা দিলাম। অনেক পরিশ্রম, আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করেও দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করতে পারিনি। এটা আমাদের ব্যর্থতা। উল্লেখ্য, পুরুলিয়া কেন্দ্রে এবারও তৃণমূলকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন বিজেপির জ্যোতির্ময় মাহাত।
তৃণমূল সূত্রের খবর, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে গেরুয়া হাওয়াতেও পুর শহরে দল এতটা পিছিয়ে ছিল না। অভিযোগ উঠেছে, তৃণমূলের প্রায় সব কাউন্সিলরই এবার হাত গুটিয়ে বসেছিলেন।
এদিকে লোকসভা ভোটের ফল পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, শহুরে এলাকায় বহু ক্ষেত্রে তৃণমূলের থেকে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। রাজ্যের ১২১টি পুরসভার মধ্যে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ৬৯টি পুরসভায়, তৃণমূল এগিয়ে ৫১টি পুরসভায়। খোদ কলকাতা শহরেও ৪৮টি ওয়ার্ডে তৃণমূল পিছিয়ে। রাজ্যের প্রায় আটজন মন্ত্রী তাঁদের বিধানসভা কেন্দ্রে হেরে গিয়েছেন। দেখা গিয়েছে, গ্রামীণ এলাকায় ভালো ফল করলেও তৃণমূল শহরে পিছিয়ে রয়েছে। তা নিয়ে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব পর্যালোচনা শুরু করতে চলেছে। বিধানসভা ভোটের আর মাত্র দুবছর বাকি। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলকে এখনই বিধানসভা ভোটের জন্য মাঠে নেমে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন গত শনিবারের বৈঠকে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ১২১টি পুরসভায় নির্বাচন হয়েছিল। তার মধ্যে তাহেরপুর পুরসভা কেবল সিপিএম পেয়েছিল। বাকি ১২০টিই তৃণমূল পায়। এবার লোকসভা ভোটে সেই হিসেব অনেক উল্টে গিয়েছে। কর্পোরেশনগুলিতে আবার মিশ্র প্রভাব। শিলিগুড়ি, আসানসোল, বিধাননগরে অধিকাংশ ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে গিয়েছে লোকসভার ভোটে। কলকাতা এবং হাওড়ায় এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। তার মধ্যেও কলকাতার একাধিক মেয়র পারিষদ, বরো চেয়ারম্যানের ওয়ার্ডে তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে।