Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeচতুর্থ স্তম্ভচতুর্থ স্তম্ভ : বাংলা কে, বাঙালিকে ভাতে মারার চেষ্টা চলছে

চতুর্থ স্তম্ভ : বাংলা কে, বাঙালিকে ভাতে মারার চেষ্টা চলছে

Follow Us :

সংবিধানে কী লেখা আছে, কেন্দ্রে যে সরকার, তার কী ক্ষমতা, কী দায়িত্ব? রাজ্যে রাজ্যে সরকারের ক্ষমতা, দায়িত্ব, এসবের কথা ভুলেই যান, ভুলে যেতে হবে কারণ আর এস এস – বিজেপি যুক্তরাষ্ট্রিয় ব্যবস্থায় কোনওদিনও বিশ্বাস করেনি, তারা শুরু থেকেই এর বিরোধিতায় ছিল, আজও একইভাবে ফেডারেল স্ট্রাকচার কে কেবল বিরোধীতাই নয়, ভেঙে চুরমার করে এক হিমালয় প্রমাণ কেন্দ্রীয় ক্ষমতা তৈরি করতে চায়, এটা তাদের লক্ষ্য। আর সেই জন্যেই তাদের শ্লোগান, ডাবল ইঞ্জনের সরকার। তাকিয়ে দেখুন, দেশে সরকার আছে, কিন্তু এক ঐ প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আসলে কেউই নেই। সে সমাজ কল্যাণ হোক বা ডিফেন্স, বিদেশ হোক বা বাণিজ্য, মন্ত্রী একজনই। এবার তারা ১০০% অনুগত রাজ্য সরকার চায়, বিজেপি শাসিত রাজ্যের সরকারগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখুন, তাদের কোনও স্বাধীন সত্তা নেই, দেশ জুড়ে দুই মহামানবের সরকার চলছে। সেরকম একটা ব্যবস্থায় সেই মোদি – শাহ এসেছিলেন এই বঙ্গে, লক্ষ্য ছিল বঙ্গবিজয়, সঙ্গী কৈলাশবিজয়, দিলু ঘোষ আর মাথা বাঁচানোর জন্য মাথা বিকিয়ে দেওয়া কাঁথির খোকাবাবু এবং আরও কিছু মানুষ। সঙ্গে ছিল সাতে পাঁচে না থাকা রুদ্রনীল এবং টলিপড়ার কিছু অবুঝ বালিকারা। ছিল মিডিয়া। ১৭৮ না ২২৫ নাকি তারও বেশি, আলোচনা চলছিল, মন্ত্রী সভায় কে কে থাকবে শুধু নয়, কে কে থাকবে না, যারা থাকবে তাদের কোন দপ্তর দেওয়া হবে সেসব নিয়েও বিস্তর আলোচনা চলছিল, শোনা যায় সাতে পাঁচে থাকিনা দাদা তথ্য সংস্কৃতি বা শিক্ষা চেয়েছলেন, দুটোতেই ওনার প্রগাঢ় বুৎপত্তি কিনা। তো শেষ মেষ ১০০ ও পার না করে অশ্বমেধের ঘোড়া হাঁপিয়ে গিয়ে ৭৭ এই জল খেতে থেমেছিল, আর এক পাও এগোয় নি। এবং সারা দেশের সামনে এইরকম বাড়া ভাতে ছাই দেওয়ার ঘটনা তো এর আগে ঘটে নি, যার পর নাই খিল্লি, দেশ জুড়ে মুখ পুড়েছিল মোদি – শাহের। কারণ প্রায় দেশ শুদ্ধু মানুষের কাছে খবর পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল মমতার হার নিশ্চিত।

তারপর থেকে আহত বাঘের মত ফুঁসছে আর এস এস – বিজেপি, মোদি – শাহ। লক্ষ্য একটাই এই সরকারকে, নির্বাচিত সরকারকে অপদস্থ করতে হবে। প্রথম চেষ্টায় কিছুটা হলেও কাজ হচ্ছে, তার দায় অন্যদের থেকেও তৃণমূলেরই বেশি, দলে দূর্নীতিগ্রস্থদের জায়গা দেওয়া হয়েছে, এবার তাদের দোরগোড়ায় সি বি আই, ইনকাম ট্যাক্স, ইডি। বাড়ি থেকে উদ্ধার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আর রাশিয়ান সার্কাসের মত তা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখানো হচ্ছে, রোজ নতুন নতুন তথ্য আনা হচ্ছে, মশলা দিয়ে মুখোরোচক করে তোলা হচ্ছে, মানুষের কাছে এই পাহাড় পরিমাণ স্তুপ করা টাকা দূর্নীতির এক নয়া ছবি তুলে ধরছে, সামনে আসছে হু হু করে সম্পত্তি বেড়ে যাবার ঘটনা, কদিন আগে ভ্যান চালকের প্রাসাদ প্রমাণ বাড়ি, নেতার দেহরক্ষীর ছেলে মেয়ে বাদ দিন কাকা শশুরের নাত জামাই ও চাকরি পেয়েছে। এই বাড়তে থাকা বেকারত্বের মধ্যে আম জনতার কাছে এক বিরুদ্ধ মত তৈরি করছে বৈকি। ওদিকে কেন্দ্র সরকারের পাহাড় প্রমাণ দূর্নীতি, হ্যাঁ দুর্নীতির কথা সামনে আসছে না, কিভাবে মানুষের, দেশের জল জঙ্গল, জমি, আসমান বেচে দেওয়া হচ্ছে তার কথা মানুষের সামনে তেমনভাবে আসছে না, কার্টিসি গোদি মডিয়া, বিকিয়ে যাওয়া সাংবাদিকতা। চোখের সামনে দাম বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের, গরীব আরও গরীব হচ্ছে, বড়লোক, আরও বড়লোক। এই ক বছরের মধ্যে গোতম আদানির উথ্বান রকেটের চেয়েও তীব্র গতিতে, পেছনে কার প্রচ্ছন্ন সমর্থন তা সব্বাই জানে। কিন্তু সেসব তথ্য সামনে আসছে না কারণ যাদের সেই তথ্য মানুষের সামনে হাজির করার কথা তারা আজও প্রশ্ন করছে রাহুল গান্ধিকে। তাদের যাবতীয় খিল্লি ঐ রাহুল কে ঘিরে, ভেতরের আর বাইরের চাপে সেও আরেক অভিমন্যু। দেশের বামপন্থীরা তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে সেই কবে, তাদের কথার খেই থাকছে না, তাদের আন্দোলনে আলোড়ন কোথায়? বর্ধমান এ জমায়েত? কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, একদা ছাত্র নেতা আভাস রায়চৌধুরি কে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল এক পুলিশ, অভিযোগ আভাস নাকি ইঁট ছুঁড়েছে, বলাই বাহুল্য এসব রুটিন অভিযোগ, সারবত্তা নেই কিন্তু অবাক করে দিয়ে আভাস বললেন, কদিন পরে সেলাম ঠুকতে হবে, মনে রাখবেন। বললেন না, যে আপনি আমার কলার ধরতে পারেন না, আপনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করছেন, বললেন না যে আমরা ক্ষমতায় এলে আমরা এই অন্যায়ের তদন্ত করবো, বললেন মাথায় রাখুন, কদিন পরে আমরা ফিরবো, আপনাদের সেলাম ঠুকতে হবে। পুলিস নিয়ে বামেদের সেরা রসিকতা হল “পুলিস তুমি যতই মারো, তোমার মাইনে একশ বারো” মার্ক্স রাষ্টকে রাষ্ট্রযন্ত্র থেকে আলাদা করেন নি। পুলিশ, প্রশাসন, আদালত, সেনা বাহিনী কে রাষ্ট্রযন্ত্র বলেছেন, যাদের কাজ হল রাষ্ট্র কে টিঁকিয়ে রাখা। সে একজন পুলিশের মাথার ওপর লেনিন ঝুলে থাকলেও, ব্যবস্থা টা এমনই যে পুলিশ রাষ্ট্রযন্ত্র বাঁচাবে। কিন্তু সেই পুলিশ কি নিজে বিরাট কেউকেটা? বিশেষত তলার সারির কনস্টেবল, দারোগারা তো গরীব, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ঘর থেকেই আসে, কিন্তু এই ব্যবস্থায় তাদের কাজ হল যে কোনও মূল্যে এই ব্যবস্থাটাকে, শোষণের ব্যবস্থাটাকে টিঁকিয়ে রাখা। রাজা মহারাজাদের সামন্ত ব্যবস্থা টিঁকিয়ে রাখতো পাইক বরকন্দাজেরা। ধনতান্ত্রিক, আধা ধনতান্ত্রিক, আধা সামন্ততান্ত্রিক, ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা কে টিঁকিয়ে রাখাটা পুলিশের কাজ।
সেই জন্যই পরাধীন ভারতবর্ষে পরাধীন দেশের নাগরিক কিন্তু পুলিশ, তারা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মারতো, জেলে পাঠাতো, খঁজে বার করে গুলি করেও মেরেছে, ফাঁসিতে চড়িয়েছে। দারোগাবাবুর সে কি প্রতাপ ছিল তখন। স্বাধীনতা আসার পরেই তারা ভোল পাল্টেছে, কংগ্রেস নেতাদের, যাদের বিরাট অংশ স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিল, তাদের স্যালুট ঠুকেছে, তেভাগা আন্দোলনের নেতাদের কুকুরের মত তাড়া করেছে, পারলে মেরেছে।
সেই পুলিশই বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার পরে কমিউনিস্ট দের স্যালুট করেছে, সে তারা চাক বা না চাক। সিপিএম এর ই হিসেবে সেই আধা ফাসিবাদী জমানায়, ৭০ – ৭৭ এর মধ্যে কেবল তাদের ১১ হাজার কর্মী মারা গেছে, ঘর ছাড়া হয়েছে, বরানগর থেকে বেলেঘাটা গণহত্যা হয়েছে, পুলিশের যোগাযোগেই হয়েছে। কুখ্যাত রুনু গুহনিয়োগী, দেবী রায়েরা ছিল এর মাথায়। না একজনের শাস্তি হয়নি, একজনেরও না। রুনু গুহনিয়োগীর প্রোমোশন হয়েছে। তিনি স্যালুট দিয়েছেন। এবার ছিল কংগ্রেসীদের পালা, নকশাল এস ইউ সি আই এর পালা। মিছিল করলেই মার খেয়েছে, ঐ একই পুলিশ কান্তি, গৌতম, মানবের গাড়ির আগে থেকেছে, স্যালুট করেছে। ২১ শে জুলাই হয়েছে, মাধাই হালদার গুলি খেয়ে মরেছে। ঐ একই পুলিশের থ্রি নট থ্রি, তাদের লাঠি, টিয়ার গ্যাস চলেছে নির্বিচারে। মনে আছে মানস ভুঁইয়া দৌড়চ্ছে, পুলিস হাসছে, গড়িয়াহাটে কসবা ব্রিজের কাছে লাশের রক্ত বালতির জলে ধুয়ে দিচ্ছে পুলিশ। এবং নন্দীগ্রাম।
পালাবদল। সেই একই পুলিশের অন্য চেহারা। যারা নাকি সেদিন অত্যাচার করেছিল, তারা ভোল পালটে তৃণমূল, তারা এখন সুজন কে ধাক্কা দেয়, বিমান বাবু কে তোয়াক্কা করে না, আভাসের কলার ধরেছে, খুবই স্বাভাবিক। কারণ তারা জানে আবার জমানা পাল্টালে স্যালুট দিলেই চলবে। স্যালুটে সব দোষ ধুয়ে মুছে যাবে, তাদের পদোন্নতিও হবে। তারা আবার বিরোধীদের ওপর লাঠি গুলি টিয়ার গ্যাস চালাবে, তাদের কলার ধরবে।
সেটাই আভাস। কমরেড আভাস সোজাসুজি বলে দিয়েছে, সেলাম করতে হবে, মনে রেখো। আভাস যেটা জানেন না, সেটা হল, ওনার বলার দরকার নেই, সেলাম যে করতে হবে, এটা ওনারা খুব ভাল করেই জানেন, জানেন বলেই স্যালুট করেন। রুনু গুহনিয়োগী করেছিল, পদোন্নতি হয়েছিল, জ্ঞানবন্ত সিং থেকে রাজীব কুমার সেই পথেই চলেছেন মাত্র। বামপন্থীদের এই ছন্নছাড়া অবস্থার পূর্ণ সুযোগ নিচ্ছে আর এস এস বিজেপি, মোদি সরকার। এই পরিকল্পনা ভাতে মারার। মমতা বার বার অভিযোগ করছেন, ১০০ দিনের কাজ বন্ধ হবার মুখে, অবিলম্বে টাকা চাই। ওদিকে পদ্ধতিগত ত্রুটির দোহাই দিয়ে সরকার টাকা দিচ্ছে না। দুটো সরকারি চিঠি হাতে এসেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে মোদি সরকার বহুরাজ্যের ১০০ দিনের কাজের টাকা দেয় নি। তালিকাটা পড়ছি শুনুন। ২ রা এপ্রিল ২০২২ এ সংসদে সরকার জানাচ্ছে, অন্ধ্রপ্রদেশের বাকি আছে ৫৩.৭৯ কোটি টাকা, আসামের ৫২ কোটি, বিহারের ৪৮ কোটি, ঝাড়খন্ড এর ৪০ কোটি, কর্ণাটক ৩৩ কোটি, মধ্য প্রদেশ ২১ কোটি, মহারাষ্ট্রের ২২ কোটি টাকা বাকি আছে। নাগাল্যন্ডের বাকি আছে ৬৭ কোটি, উত্তরপ্রদেশের ৩০ কোটি, অন্যান্য রাজ্যেও কারোর পাঁচ কি ছ কোটি টাকা বাকি আছে, আমাদের বাংলার বাকি আছে ১৯৩৫ কোটি টাকা। হ্যাঁ ঠকই শুনছেন ১৯৩৫ কোটি টাকা। মানে ঐ দিনের হিসেব মত বিভিন্ন রাজ্যের বকেয়া ২৪২৮ কোটি টাকার মধ্যে ১৯৩৫ কোটি টাকা কেবল আমাদের বাংলার পাওনা। তো মোদি সরকার জানিয়েছিল, টাকা দেওয়াটা একটা লাগাতার প্রশেস, টাকা দেওয়া হচ্ছে, পেয়ে যাবে। এবার আরও তিন মাস পরে আবার নতুন হিসেব এসেছে। আসামের পাওনা ক্মে গিয়ে ৫২ থেকে ৮ কোটিতে দাঁড়িয়েছে, ঝাড়খন্ডের পাওনা বেড়ে ১১০ কোটি টাকা, বিহারের পাওনা বেড়ে ১০৬৭ কোটি টাকা আর আমাদের বাংলার ২৬২০ কোটি টাকা বাকি। কাদের টাকা? সেই গরীব গুরবোর টাকা যারা কাজের বিনিময়ে কিছু পসা পেয়ে পেট চালায়, প্রান্তিক সেই মানুষজনের টাকা আটকে দিয়ে মোদী সরকার আসলে কী বোঝাতে চাইছে? গোটা দেশে বাংলার পাওনা বকেয়ার ৭০/৮০% কেন? উদ্দেশ্য একটাই, এই সরকারকে ফেলতে হবে, নির্বাচনে নয়, তার আগেই, ২০২৪ এর আগেই এই সরকারের পতন চায় আর এস এস বিজেপি, তাই বাংলাকে ভাতে মারার চক্রান্ত চলছে। মজার কথা হল বাংলাকে, বাংলার মানুষকে ভাতে মারার এই চক্রান্তে সামিল কাঁথির খোকাবাবু, দিলু ঘোষেরা। বাংলাদেশের যুদ্ধের সময় এদেরই রাজাকার বলা হত।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
বাংলার ৪২ | বারাসতে কোন দল এগিয়ে?
05:05
Video thumbnail
চতুর্থ স্তম্ভ | Fourth Pillar | ২৫শে বৈশাখ, হে নূতন
12:55
Video thumbnail
আজকে (Aajke) | শুভেন্দু বলেছিলেন বোমা ফাটিবে, সে বোমা কোথায় ফাটিল?
10:04
Video thumbnail
Politics | পলিটিক্স (08 May, 2024)
12:46
Video thumbnail
বাংলা বলছে | রাহুলকে নিশানা, মোদির মুখে অম্বানি-আদানি, কত কালো টাকা নিয়েছে কংগ্রেস, প্রশ্ন মোদির
38:28
Video thumbnail
Beyond Politics | সন্দেশখালি, মণিপুর এবং নারীসম্মান
07:58
Video thumbnail
SSC Scam | নিয়োগ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের সংক্ষিপ্ত রায়ে স্বস্তিতে রাজ্য সরকার
03:01
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | আবার শুভেন্দুকে ঘিরে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান
02:33
Video thumbnail
Narendra Modi | আম্বানি-আদানি নিয়ে রাহুল কেন নীরব, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রী মোদির
05:16
Video thumbnail
ধর্মযুদ্ধে রণহুঙ্কার | রায় শুনে আমার মনস্নিগ্ধ হয়েছে : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
04:19