কোটা ও নয়াদিল্লি: জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসতে চলা পড়ুয়াদের যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘গুরুমন্ত্র’ শোনাচ্ছিলেন, তখনই রাজস্থানের কোটা থেকে মিলল এক মর্মান্তিক খবর। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়া অষ্টাদশী এক পড়ুয়ার ফের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটল। সুইসাইড নোটে সে বাবা-মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে। লিখেছে, পারলাম না। আমাকে তোমরা ক্ষমা কোরো।
সোমবার পরীক্ষা পে চর্চায় প্রধানমন্ত্রী প্রথম বড় পরীক্ষায় বসতে চলা দেশের ছাত্র সমাজকে ভবিষ্যৎ গঠন, বাবা-মা এবং শিক্ষককুলের কর্তব্য স্মরণ করিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের উপদেশ দিয়ে বলেন, প্রতিযোগিতা নয়। কাউকে ঈর্ষা নয়। নিজের মতো করে পড়ো।
আরও পড়ুন: লালুর হাজিরা, সোরেনের বাড়িতে ইডি
কিন্তু, কোটায় ছাত্রীর আত্মহত্যা সেইসব আপ্তবাক্যকে মিথ্যা করে দিল। যা একসপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ঘটনা। নিহারীকা নামে ছাত্রীটি জেইই মেন পরীক্ষার জন্য তালিম নিচ্ছিল। কোটার শিক্ষানগরী এলাকায় তার ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পরীক্ষায় বসার কথা ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। তাতে সে লিখেছে, ‘মামি পাপা আই কান্ট ডু জেইই সো আই সুইসাইড। আই অ্যাম লুজার। আই ওয়ার্স্ট ডটার। সরি মামি পাপা। ইয়েহি লাস্ট অপশন হ্যায়।’ পরীক্ষার চাপ ও বাবা-মায়ের উচ্চকাঙ্ক্ষার জন্য এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের অনুমান। নিজেকে খারাপ ছাত্রী এবং এটাই শেষ পথ বলে লেখায় তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন অত্যধিক চাপ নিতে পারেনি এই উঠতি বয়সি পড়ুয়া।
উল্লেখ্য, এক সপ্তাহ আগেই উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের বাসিন্দা ১৭-১৮ বছর বয়সি মহম্মদ জাইদ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল। সে নিট পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গতবছর কোটায় উচ্চশিক্ষার প্রশিক্ষণ নিতে আসা ৩০ জন পড়ুয়া আত্মহত্যা করেছিল। নিহারীকার মৃত্যু নতুন বছরের প্রথম মাসেই দ্বিতীয় আত্মহত্যা।
এদিনই পরীক্ষা পে চর্চায় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের উদ্দেশে বন্ধুর মতো সম্পর্ক বজায় রাখার পরামর্শ দেন। যাতে ছাত্রছাত্রীরা গুরুর সঙ্গে স্বাভাবিকবোধ করে। পড়ুয়াদের বলেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তৈরি করতে হবে। এটা পারলে খুব খারাপ। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে তোমাদের। বাবা-মাদের বলেন, অন্যের বাচ্চার সঙ্গে তুলনা করা ছাড়ুন। এতে আপনাদেরই সন্তানের খারাপ হতে পারে। কিছু বাবা-মা মনে করেন সন্তানের পরীক্ষার মার্কশিট তাঁদের ভিজিটিং কার্ড। সকলকে দেখিয়ে বেড়ানোর জন্য, দেখো আমার ছেলে, আমার মেয়ে কী রেজাল্ট করেছে!
অন্য খবর দেখুন