খড়্গপুর: খড়্গপুর পুরসভার (Kharagpur Municipality) চেয়ারম্যান (Chairman) প্রদীপ সরকারের (Pradip Sarkar) ইস্তফা নিয়ে চূড়ান্ত নাটক। দলের নির্দেশ মেনে বুধবার বিকেলে মহকুমাশাসকের (SDO) কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিতে আসেন। বেরিয়ে তিনি বলেন, আমি দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে ইস্তফা (Resignation) দিতে এসেছিলাম। কিন্তু এসডিও জানান, তিনি ইস্তফাপত্র গ্রহণ করতে পারেন না। পুর আইন অনুযায়ী বোর্ডের বৈঠকে ইস্তফাপত্র জমা দিতে হবে। অধিকাংশ কাউন্সিলর (Councillor) মত দিলে তা গৃহীত হবে। সেই প্রস্তাব এসডিও-র কাছে পাঠাতে হবে। যতদিন এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হচ্ছে, ততদিন আমিই চে্য়ারম্যান হিসেবে কাজ চালাব। প্রদীপ বলেন, আগামী মঙ্গলবার বোর্ডের বৈঠক ডাকা হবে। দলের কাউন্সিলররা চাইলে আমিই চেয়ারম্যান থাকব। না চাইলে অন্য কেউ হবেন। প্রদীপের দাবি, কাউন্সিলরদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুবই ভালো। আপাতত তিনিই চেয়ারম্যান (Chairman) থাকছেন শুনে দলীয় সমর্থকরা (Supporters) উল্লাসে ফেটে পড়েন।
এদিন বিকেলে দলীয় কার্যালয় থেকে হাজার খানেক সমর্খকের মিছিল নিয়ে প্রদীপ এসডিও অফিসে আসেন। অনুগামীরা স্লোগান তোলন, দাদা তুমি এগিয়ে চল, আমরা তোমার পাশে আছি। সঙ্গে ছিলেন প্রদীপের স্ত্রীও। দুজনের চোখই ছলছল করছিল। ভিড়ের মধ্যে অনেকে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, পুলিশ আধিকারিকদের একাংশ এবং দলের এক শ্রেণির নেতার চক্রান্তেই আমি পদত্যাগ করতে বাধ্য হলাম।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikary: রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকার হলে বুলডোজার চলবে, হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর
প্রদীপ এসডিও অফিস থেকে বেরিয়ে ওই ঘোষণা করার পর ফের আসরে নামেন জেলার তৃণমূল নেতারা। জেলার কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, আমরা এসডিও-র সঙ্গে কথা বলেছি। প্রদীপের ইস্তফা গৃহীত হবে। আগামিকাল থেকে তিনি আর চেয়ারম্যান হিসেবে কোনও কাজ করতে পারবেন না। প্রশাসন জানায়. তাঁর ইস্তফাপত্র জমা পড়েছে।
প্রসঙ্গত, অধুনা বিজেপি নেত্রী এবং জেলার প্রাক্তন পুলিুশ সুপার ভারতী ঘোষের হাত ধরেই খড়্গপুরে উত্থান প্রদীপের। দেবাশিস চৌধুরী, জওহর পালদের মতো সিনিয়র নেতাদের টপকে প্রদীপই চেয়ারম্যান হন। দুই দফায় তিনি প্রায় সাত বছর চেয়ারম্যান ছিলেন। পুর প্রশাসক হিসেবে তিনি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দের লোক ছিলেন। দলীয় সূত্রের খবর, গত বিধানসভাতেও তিনি নেত্রীর পছন্দের প্রার্থী হিসেবে লড়াই করেন। কিন্তু হেরে যান। তাঁর দাবি, দলের একাংশের বিশ্বাসঘাতকতার জন্যই তিনি হেরে যান। জেলার নেতা অজিত মাইতি জানান, সোমবারই তাঁর ইস্তফা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রদীপ বলেন, নেত্রী বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় না বললে আমি পদত্যাগ করব না। মঙ্গলবার প্রদীপ জানান, তিনি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে ইস্তফা দেওয়ার দিন জানিয়ে দেবেন। তারপরে অজিত বলেন, ওকে ইস্তফা দিতেই হবে। এরকম টানাপড়েনের পর অবশেষে বুধবার তিনি ইস্তফা দেন। তা নিয়েও নাটক চলে। প্রদীপে্র ইস্তফাপত্র গ্রহণ হল কি না, তা রাত পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। সে ব্যাপারে তিনিই সংশয় জিইয়ে রাখলেন পুর আইনের কথা বলে।