skip to content
Saturday, July 27, 2024

skip to content
Homeচতুর্থ স্তম্ভFourth Pillar | হিন্দুস্থান, কারও বাপের নয়
Fourth Pillar

Fourth Pillar | হিন্দুস্থান, কারও বাপের নয়

Follow Us :

দেশটা কারও বাপের নাকি? আজ সেটা নিয়েই আলোচনা। হ্যাঁ, আমি দেশ নিয়ে কথা বলছি, অনেক পণ্ডিত দেশ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে সম্ভবত নিজের বাধ্যবাধকতাকে মাথায় রেখেই কেবল বাংলা আর মমতার মধ্যেই আলোচনাকে সীমাবদ্ধ রাখেন। ওই যে সেই সাপ জ্যান্ত গোটা দুই আন তো, যে সাপের কাছে ইডি নেই, সিবিআই নেই, জেলে পুরে দেবে না, সেই সাপকে তেড়েমেড়ে ডান্ডা করে দেব ঠান্ডা… এই মুহূর্তে সাধারণ নির্বাচন চলছে দেশের ৫৪৩টা আসনের, কাজেই আমার আলোচনা আমি আমাদের দেশ নিয়েই করব, তারমধ্যে আমার বাংলা থাকবে বই কী। আমরা তো জানিই যে বিরোধীদের এক উদ্যোগ শুরু হয়েছিল, এক জোটের উদ্যোগ, এক অ্যালায়েন্স-এর উদ্যোগ, সেখানে কমবেশি ২৪টা দল হাজির থেকে সেই জোটের এক নাম ঠিক করে। সে নাম নিয়ে বিব্রত দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিজেপি আইটি সেলের কয়েকজন আদালতেও গিয়েছিল, হুজুর দেশের নামে পলিটিক্যাল অ্যালায়েন্স চলতে পারে না, বাতিল করুন, ওনাদের আবেদন খারিজ হয়েছে। তো সেই ওনাদের মতোই আজও অনেকেই সেই নাম নিয়েই বিব্রত, বা বাধ্যবাধকতা মেনেই বিব্রত, সে থাক, এখনও জোটের নাম ইন্ডিয়া, কমিউনিস্ট থেকে সমাজতন্ত্রী থেকে শিবসেনা বা আপ বা কংগ্রেসের কেউ এ নিয়ে বিব্রত নয়। এবার সেই জোটের মধ্যে প্রচুর ফল্ট লাইন আছে। বামেরা কেরালাতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়ছে, কংগ্রেস ওখানে সিপিএমকে বিজেপির বি টিম বলছে, ঠিক যেমন এখানে আমাদের বাংলায় অধীররঞ্জন বা বামেরা তৃণমূলকে বিজেপির বি টিম বলছে অ্যান্ড ভাইসভারসা। সেই আবহে ভোটের প্রচার চলছে এবং প্রায় ডেইলি প্যাসেঞ্জারের মতন আসছেন যাচ্ছেন আমাদের মোদিজি। আপাতত কোনও বিকাশ উন্নয়ন ইত্যাদি ভ্যানতারা নয়, ওনার লক্ষ্য কোথাও হিন্দুত্ব, মন্দির মসজিদ, কোথাও ওবিসি কার্ড খেলা আর আদিবাসী এলাকা দেখলেই ওনার আদিবাসী ভক্তি কুলকুল করে জেগে ওঠে। আমাদের পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম বাঁকুড়াতে এসেই ওই আদিবাসীদের কথা বলতে বলতে তিনি ক্লান্ত। জঙ্গলমহলে ভোট ক’দিন পরেই, আসুন দেখে নেওয়া যাক আমাদের চৌকিদারের কীর্তি। কীভাবে আমাদের আদিবাসী ভূমি, জল জঙ্গল জমিন বেচে দেওয়ার কাজ করেছেন দেশের চৌকিদার। আজ আসুন সেই বেচে দেওয়ার ছবিটা একটু দেখে নেওয়া যাক, কারণ এই সেই মাতৃভূমি যা স্বাধীন করতে হাজারো মানুষ ফাঁসিকাঠে চড়েছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ জেলে গেছে, অকথ্য নির্যাতন সহ্য করেছে, বাবা হারিয়েছে ছেলেকে, ছেলে হারিয়েছে মা-কে, সদ্য কিশোর ইংরেজ পুলিশের নির্যাতনের পর সারা গায়ে রক্ত মেখে ফিরেছে। এই মাটির জন্য, এই জল জঙ্গল জমিনের জন্য, সিধো কানু লড়ে গিয়েছে ইংরেজদের সঙ্গে, বিরসা মুন্ডা উলুগুলানের ডাক দিয়েছে। সেই জল জঙ্গল জমিন বেচে দেওয়া হচ্ছে, বিষয়টা আর পরিকল্পনার মধ্যে নেই, বেচে দিচ্ছে, তারস্বরে গান বাজছে বেচে দে বেচে দে।

১) অসম, কোল মাইনিং প্রজেক্ট, দেহিং পাটকল এলিফ্যান্ট রিজার্ভ

২০০৪-এর ১৩ জুন অসমের ডিব্রুগড় আর তিনসুকিয়া জেলার ১১১ স্কোয়ার কিলোমিটার জমি জুড়ে রেন ফরেস্টকে রিজার্ভ ফরেস্ট হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ভারতবর্ষের সমতলে এটাই সবথেকে বড় রেন ফরেস্ট। ৪৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৪৭ প্রজাতির সরীসৃপ আর ৩০০টার বেশি প্রজাতির প্রজাপতি আছে এই অরণ্যে। হাতি তো আছেই, তার সঙ্গে আছে ২৯৩ প্রজাতির পাখি। এক ডজনের বেশি উপজাতি মানুষের বসবাস এখানে, তাই ফাকে, খাম্যায়াং, খামতি ইত্যাদি এক ডজন উপজাতি মানুষ, যারা এই প্রকৃতির মধ্যেই বড় হয়, বেড়ে ওঠে, সেখানে কোল মাইনিং প্রজেক্ট। সারা বিশ্ব ফসিল জ্বালানির ব্যবহার কমাচ্ছে, কিন্তু আদানি আম্বানির চাই। অতএব বেচে দে বেচে দে।

২) তেলঙ্গানা, ইউরেনিয়াম সার্ভে, আমরাবাদ টাইগার রিজার্ভ

নালামাল্লার জঙ্গল, যেখানে ওয়াইএসআর রেড্ডির হেলিকপ্টার ভেঙে পড়েছিল, সেইখানে আছে এই আমরাবাদ টাইগার রিজার্ভ। এর তলাতে আছে প্রচুর ইউরেনিয়াম, শকুনের চোখ চক চক করছে, বহু দিন ধরেই এদিকে নজর। হায়দরাবাদ থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে ২৮০০ কিলোমিটার জুড়ে এই অরণ্যভূমির পাশ দিয়ে বইছে কৃষ্ণা নদী। এই প্রকল্পের ফলে এখানকার জল দূষিত হবে, জঙ্গল কাটা পড়বে আদিবাসীদের ঘর ভাঙা হবে। তাতে কী? বেচে দে বেচে দে। মন্দির ওহি বনায়েঙ্গের দল জল জঙ্গল জমিন কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনায় মত্ত। এতদিন ঠিকঠাক বেচা হয়নি, এবার সাকরেদ তেলুগু দেশম, লক্ষ বেচে দেওয়া।

৩) মহারাষ্ট্র একো সেন্সেটিভ ওয়েস্ট্রার্ন ঘাট থেকে ১৫ শতাংশ বাদ দেওয়ার আবেদন

২০১০-এ কেরালা, তামিলনাড়ু, কর্নাটক, গোয়া, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, ছটা রাজ্যের ৬০ হাজার স্কোয়ার কিলোমিটার জায়গাকে একো সেন্সিটিভ, মানে পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। যেখানে মাইনিং বা বোরিং ইত্যাদি করা যাবে না। এখন তার মধ্যে ১৫ শতাংশ বাদ দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। প্রকাশ জাভড়েকর, পরিবেশ মন্ত্রী রাজ্যের সঙ্গে বসে এই এলাকা চূড়ান্ত করছেন। এখন তো কেবল কেন্দ্রেই যে বেচে দেওয়ার কাজ চলছে তা তো নয়, রাজ্যেও শকুনেরা আছে, সুযোগের সন্ধানে। উন্নয়ন হবে। পরিবেশ, জঙ্গল, আদিবাসী মানুষ উচ্ছন্নে যাক।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | সিপিএম ক’টা আসন পাবে? ক’টা আসনে লড়াই হবে?

৪) কর্নাটক, সারাভাতি স্যাংচুয়ারিতে বোর হোলস করার অনুমতি

লকডাউনের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী নিজে হাজির থেকে এই প্রকল্পের ছাড়পত্র দিয়েছিলেন, ভাবুন একবার কত তাড়া ছিল। ১২টা বোর হোল করার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছিল প্যান্ডেমিকের মধ্যেই, ২০০০ মেগাওয়াট সারাভাতি পাম্পড স্টোরেজ হাইড্রোইলেকট্রিক প্রজেক্ট হচ্ছে। কোথায়? সারাভাতি স্যাংচুয়ারিতে। একটা নীল গাই, একটা ব্লাক বাক মারা নিয়ে মিডিয়ার যে নাচন কোদন তা যে আসলে টিআরপি-র খেলা সেটা বুঝুন, ওটা হচ্ছে আসলে তামাশা, মাদারি খেল, নেশন ওয়ান্টস টু নো বলে ঘণ্টাখানেক চ্যাঁচাও, তারপর বেচে দে বেচে দে গান বাজাও। এর ফলে একটা গোটা সংরক্ষিত বনাঞ্চল শেষ হয়ে যাবে। বিপন্ন প্রজাতির লায়ন টেলড ম্যাকাও এখানেই পাওয়া যায়, আর কিছুদিন পর যা ছবি হয়ে যাবে।

৫) গোয়া, মল্লেম ন্যাশনাল পার্ক আর ভগবান মহাবীর ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারির মধ্যিখান দিয়ে রাস্তা আর বৈদ্যুতিক সংযোগ

ভগবান মহাবীর ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি আর গোয়ার মল্লেম ন্যাশলাল পার্ক এর ঠিক মধ্যিখান দিয়ে তিনটে প্রকল্পের কথা চলছে। ১) কর্নাটকের ক্যাস্টারলক থেকে গোয়ার ভাস্কো পর্যন্ত যে রেল লাইন আছে তা ডাবল লাইন করা। ২) কর্নাটকের বেলগাভি থেকে গোয়ার পানাজি পর্যন্ত চার লেনের সড়ক। ৩) কর্নাটকের ধারোয়াড় থেকে গোয়ার মাপুসা পর্যন্ত হাইটেনশন বৈদ্যুতিক সংযোগ। কেবল প্রজেক্টের অংশ ধরলে ৩৭০০০ গাছ, ১৭০ হেক্টর বনভূমি উবে যাবে। এবার আরও অর্ধেকের বেশি জমি আর গাছ যাবে এই কনস্ট্রাকশনের জন্য। কিন্তু মিয়া বিবি রাজি তো কেয়া করেগা কাজি? গোয়া, কর্নাটক আর কেন্দ্রে বিজেপি সরকার ছিল, এবারে সেখানে খানিক সমস্যা তৈরি হয়েছে, এবারে সেই সমস্যার সমাধান করার জন্যই বিজেপিকে ক্ষমতায় ফিরতে হবে। যারা রেল সড়ক বেচে দিচ্ছে তারা এই প্রকল্প দাঁড় করাবেই।

৬) গুজরাত, গির ন্যাশনাল পার্ক একো সেন্সেটিভ জোনের মধ্যেই লাইমস্টোন মাইনিং

শিব ঠাকুরের আপন দেশে আইন কানুন সর্বনেশে। তো নরেন্দ্র মোদির দেশেও সে নিয়ম বজায় আছে। দেশের একমাত্র সিংহ মানে লায়ন রিজার্ভ ফরেস্টের আওতাতেই লাইমস্টোন মাইনিং শুরু করা হয়ে গেছে, সরকারের অনুমতি নিয়েই। কিন্তু পরিবেশের ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি। এখন আদালত সেই ছাড়পত্র দেখতে চেয়েছে। ক’দিন পরেই রায় দিতেই পারে যে এই মাইনিং জায়েজ।

আরও অনেক আছে। কিন্তু তার সঙ্গে এটাও আশার কথা যে এই প্রত্যেক জায়গায় মানুষ প্রতিবাদ করছেন, ধর্না বিক্ষোভ প্রদর্শন চলছে, আইনি লড়াইও চলছে। দলে দলে মানুষ আসছেন। ১৯৮৬তে Environmental Protection Act তৈরি হয়। ওই আইন অনুযায়ীই ১৯৯৪-এ Environmental Impact Assessment বিধি মানে কোনও কারখানা শিল্প তৈরির আগে কী কী মেনে চলতে হবে, কীভাবে তারা পরিবেশের ছাড়পত্র পাবে তার একটা নিয়ম তৈরি হয়েছিল, তাতে অনেক ফাঁকফোকর আছে, তবুও একটা নিয়ম তৈরি হয়েছিল। এই নিয়মের মধ্যেই একটা তালিকা দেওয়া হয়, যাতে কোন কোন শিল্প তৈরির আগে পরিবেশগত ছাড়পত্র নেওয়া আবশ্যিক মানে নিতেই হবে, তা বলা হয়। একটা expert appraisal committee যাতে পরিবেশ বিজ্ঞানী, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট বিশারদদের নিয়ে তৈরি, এরা যে রিপোর্ট তৈরি করবেন, তা জনসাধারণের কাছে রাখা হবে, এলাকার মানুষের কাছে রাখা হবে যাতে সেই মানুষেরা তাঁদের কথা, তাঁদের আশঙ্কা, তাঁদের দাবির কথা বলতে পারেন, তাদের কথা শোনার পর তা লিপিবদ্ধ করার পরেই এই রিপোর্ট পরিবেশ ও বন মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়, তাতে বিভিন্ন রকমের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়ে থাকে। যেমন পরিবেশগত যে ক্ষতি তা কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, প্রজেক্টের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনকে কীভাবে কোথায় পুনর্বাসন দেওয়া হবে ইত্যাদি। কোথাও কোথাও এই রিপোর্টেই বলা হয় যে এই প্রজেক্ট অনুমতি পেতেই পারে না। ২০০৬-এ এই Environmental Impact Assessment-কে কিছুটা পালটানো হয় আর এখন এই নিয়মের খোলনলচে বদলে অবাধ লুঠপাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মানে আপনি করোনা লকডাউনে ঘরে বসে ছিলেন আর সরকার পুরো গোলপোস্টটাই পালটে ফেলছে, নিয়ম আইন কানুন বদলে ফেলছে যাতে ওই বেচে দে বেচে দে গান থামাতে না হয়। দেশে বন্যা বাড়ছে, সাইক্লোন আরও ভয়ঙ্কর হচ্ছে, ভাইরাস আসছে নানান ধরনের, পঙ্গপাল আসছে সেই কোন মুলুক থেকে, সেই সময়ে ২০০৬-এর নিয়ম কোথায় আরও শক্তপোক্ত করা হবে তা না করে সেই নিয়মের আগল খুলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। পরিবেশ নিয়ে এরা ভাবতে রাজি নন।

দেশের প্রধানমন্ত্রী, যিনি মনে করেন পূর্ণিমা রাতে শহরের ইলেক্ট্রিক কানেকশন বন্ধ রেখে মানুষের পূর্ণিমা দেখা উচিত। এই বদ্ধ উন্মাদের দেশে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। যে কথা বলছিলাম, খোলনলচে বদলে দেওয়া হল Environmental Impact Assessment-এর নিয়মকে। প্রথম যে বদলটা আনা হয়েছে তা হল পরিবেশের ছাড়পত্র আগে নিতে হবে না, আপনি প্রজেক্ট শুরু করে দিন, তারপর ছাড়পত্র নিলেই হবে। তার মানে বন জঙ্গল কেটে, নদী বিষাক্ত করে, মানুষকে উচ্ছেদ করার পর আপনি পরিবেশের ছাড়পত্র নেবেন। এরপরে নিয়ম মানা না হয়ে থাকলে আপনাকে প্রতিদিন ২০০০ থেকে ১০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। মানে ১ বছর ধরে আপনি বন ধ্বংস করলেন, তারপর ধরা যাক সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দিলেন? কত? ৩৬৫০০০০ মানে ৩৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, প্রজেক্টের মূল্য কত? ৭৮০০ কোটি টাকা, ২৪০০০ কোটি টাকা, ৫৩০০০ কোটি টাকা। প্রজেক্টের দারোয়ানদের খৈনির খরচও এক বছরে এর থেকে বেশি হবে। তাই না? ক’বছর আগেই বিশাখাপত্তনমে এক জি পলিমারস প্লান্ট-এ বিষাক্ত গ্যাসে মারা গেলেন ১৭ জন, তাদের কোনও পরিবেশের ছাড়পত্র ছিল না। আসামে বাঘজান গ্যাস লিকের ঘটনা, যার কিছুটা দূরেই ডিব্রুগড় ন্যাশনাল পার্ক, এখানেও পরিবেশের ছাড়পত্র ছিল না। এর পরের বদলটা আরও চমৎকার, এতদিন ধরে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে বা হতে পারে সেটা যে কেউ অভিযোগ করতে পারত, এখন কেবল সরকারি কর্মকর্তা বা যারা এই নিয়ম লঙ্ঘন করছেন, তারা অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন, আপনি নিয়ম ভাঙলেন, আপনি নিজে গিয়ে রিপোর্ট করুন, কারণ সরকার তো গান ধরেছে বেচে দে বেচে দে। এর পরের যে বদল আনার কথা এই ড্রাফট-এ বলা হয়েছে তা হল ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ বা ন্যাশনাল হাইওয়ে প্রজেক্টের আর কোনও পরিবেশের ছাড়পত্র লাগবে না। বুঝুন। রাস্তা হবে গাছ কাটো, পরিবেশের ছাড়পত্র লাগবে না, নদীর ওপর বিরাট বিরাট জেটি বানাও, অয়েল ট্যাংকার আনো, ছাড়পত্র লাগবে না। এর আগে কন্সট্রাকশন বিজনেসের জন্য ২০০০০ স্কোয়ার মিটারের বেশি হলে ছাড়পত্র লাগত এখন সেটা দেড় লক্ষ স্কোয়ার মিটার পর্যন্ত লাগবে না। এবং এর পরে ব্রহ্মাস্ত্র, যদি সরকারের মনে হয় এই প্রজেক্ট রাষ্ট্রের জন্য জরুরি, স্ট্র্যাটেজিক, ব্যস, তাহলে আর কিচ্ছুটি লাগবে না, সে তুমি গাছই কাটো আর নদীতে আবর্জনাই ফ্যালো। এসব প্রজেক্টের তথ্য জানানোই হবে না, মানুষের কাছে সে সব তথ্য রাখাই হবে। Environmental Impact Assessment এখন আইন। আমাদের জল জমিন জঙ্গল আসমান বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, সাধু সাবধান। আমাদের গরিব ঝুপড়িতে চুঁইয়ে পড়বে জল, আমাদের জুটবে না দু’বেলা খাবার, আমাদের জুটবে না বস্ত্র কিংবা মাথার উপর ছাদ। তাই ফাকো উপজাতির এক মানুষ বসে ভাবে, এ তো জানাই ছিল, আমরা তাতেও তো কিছু বলিনি, এখন গাছের কোটর, পাহাড়ের গর্ত গুহা, গাছের ফল, নদীর জল নিয়েও টান দিচ্ছে আমাদের, সে বড় অসহায়, আমার স্বদেশ বড় অসহায়, এই সময়েই সমস্বরে বলতে হবে দেশটা কারও বাপের নয়, রাহত ইন্দোরি এইকথা বহু আগেই বলে গেছেন, যো আজ সাহিবে মসনদ হ্যায় ওহ কল নহি হোঙ্গে, কিরায়েদার হ্যায়, জাদতি মকান থোড়ি হ্যায়? সভিকা খুন হ্যায় শামিল ইহা কি মিট্টি মে, কিসিকা বাপ কা হিন্দোস্থান থোড়ি হ্যায়। আমাদের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই, আমরা দেশের সাধারণ নির্বাচনের সময়ে কেবল বাংলা নয়, দেশ নিয়েই কথা বলছি। বলছি জোর গলায়, এই হিন্দুস্থান, কারও বাপের নয়।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Amit Shah | এই সাংসদ কী এমন বললেন? অমিত শাহ তেতে গেলেন
00:00
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | সংসদে অভিষেকের এই বক্তব্য শুনেছেন? চর্চা চলছে সব জায়গায়
00:00
Video thumbnail
Amit Shah | এই সাংসদ কী এমন বললেন? অমিত শাহ তেতে গেলেন
11:32:36
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | সংসদে অভিষেকের এই বক্তব্য শুনেছেন? চর্চা চলছে সব জায়গায়
11:36:11
Video thumbnail
বাংলা বলছে | 'নীতি-বৈঠকে' বাংলা ভাগ নিয়ে সোচ্চার মমতা, সাংসদদের বৈঠকে বাজেট-অধিবেশনের ক্লাস নেত্রীর
10:28:41
Video thumbnail
Yogi Adityanath | ইউপি বিজেপিতে হইচই! দিল্লি গেলেন যোগী
11:32:41
Video thumbnail
Mamata Banerjee | কংগ্রেস আগে বললে ভালো হত! কেন এই কথা মমতার মুখে?
11:31:41
Video thumbnail
Narod Narod (নারদ নারদ) | জামালের বাড়িতে গোপন ট্যাঙ্কের হদিশ, উদ্ধার একাধিক নথি
11:05:51
Video thumbnail
BJP West Bengal | রাজ্যে গ্রেফতার বিজেপি নেতা, হুলস্থুল কাণ্ড
10:38:40
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | পথে নেমে বিরাট হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর! শুনুন কী বললেন
01:02:56