দেরাদুন ও সিমলা: বর্ষার প্রথম ধাক্কাতেই বিপর্যস্ত পুরো উত্তর ভারত। ভারী বর্ষণের জেরে ধস এবং হড়পা বানে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড। দুর্যোগে মৃত্যু হয়েছে ছ’জনের। আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। সোমবার এ কথা জানিয়েছেন সে হিমাচলের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ওঙ্কারচাঁদ শর্মা। বৃষ্টিতে ৩০৩টি গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বৃষ্টিতে তিন কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২৪টি রাস্তা। হিমাচলের বিভিন্ন এলাকায় ধস নেমেছে। আর এর জেরে রবিবার সন্ধ্যা থেকে মান্ডি এবং কুলুর মধ্যে সংযোগকারী জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন পর্যটকরা। কমপক্ষে ১৫ কিমি রাস্তা জুড়ে যানজট। আটকে পড়েছেন প্রায় ২০০ জন। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই পর্যটক। আশপাশে কোনও হোটেলেও ঘর খালি নেই। যার ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন তাঁরা।
বৃষ্টিতে ধস নেমেছে বিভিন্ন রাস্তায়। তার জেরে রবিবার সন্ধ্যা থেকে জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, ওই রাস্তায় যান চলাচল শুরু করতে প্রায় সাত-আট ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। সোমবারেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।
আরও পড়ুন: Manipur Incident | মণিপুরে দল ছাড়ার হিড়িক বিজেপিতে, কাঠগড়ায় মুখ্যমন্ত্রী
এনডিটিভি-কে সোহেল ইউসুফ নামে এক পর্যটক বলেছেন, মান্ডি এবং সুন্দরনগরের মধ্যে একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে। প্রায় ১৫ কিমি রাস্তা ধরে যানজট। এই ঘটনায় দুর্ভোগে পড়েছেন বহু পর্যটক। বিশেষত, শিশুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন তাদের পরিবার। কেউ ধাবায় রাত কাটিয়েছেন। কেউ আবার বাসেই বসে থেকেছেন। ওই পর্যটক আরও জানিয়েছেন, রবিবার বিকেল ৫টা থেকে জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে রয়েছে। এখনও রাস্তা সারাই করা হয়নি।
বর্ষা আসতেই বিপর্যস্ত পাহাড়। প্রবল বর্ষণ শুরু হয়েছে উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে। প্রবল বর্ষণে হিমালচল প্রদেশের বিভিন্ন নদীতে হড়পা বান দেখা দিয়েছে। একাধিক জায়গায় হড়পা বানের সতর্কতা জারি করেছে আইএমডি। সেই সঙ্গে দেবভূমি উত্তরাখণ্ডও বিপর্যস্ত। কেদারনাথ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে আগেই। শ্রাবণ মাসে কেদারে ভিড় বেশি হয়। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আপাতত চারধাম যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার।
ইতিমধ্যেই উত্তরাখণ্ডে অতিবর্ষণে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও বর্ষণের সতর্কতা জারি করা হয়েছে এই রাজ্যে। হিমাচল প্রদেশে কুলু-মান্ডি-রামপুরে বন্যার কারণে বহু জায়গায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হামিরপুরের সুজনপুরের খয়রিতে রবিবার মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে পাঁচটি বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সোলানের আরকি, সিমলার রামপুর ও হামিরপুরে মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাজ্যের লাইফলাইন সড়কগুলি অনেক জায়গায় বন্ধ রয়েছে। চণ্ডীগড়-মানালি মহাসড়ক ৩টি স্থানে বন্ধ থাকায় বিপুল সংখ্যক পর্যটক ও সাধারণ মানুষ যানবাহনে রাত কাটাচ্ছেন। আবহাওয়া দফতর সতর্কতা করে জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় হঠাৎ বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।