skip to content
Saturday, July 27, 2024

skip to content
Homeকারার ওই লৌহকপাটকারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব-৯)
Karar Oi Lauho Kopat

কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব-৯)

আরও অনেক আছে, সেসব নিয়ে আবার সোমবার হাজির হব

Follow Us :

যদি বিচারক অনুমতি দেন তাহলে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি নিজেই নিজের সওয়ালে নামবেন আমাদের সম্পাদক কৌস্তুভ রায়। কিন্তু সে তো চার দেওয়ালের মধ্যে আর সে সওয়াল শুনবেন বিচারকেরা। বিচার বিচারের মতো চলুক, আমরা আদালতের উপর ভরসা রাখি। আমরা সওয়াল করছি আম জনতার কাছে, জনতা জনার্দনের সামনে আমরা নতমস্তক হয়ে আমাদের যুক্তি রাখছি। আমরা বলতে চাইছি এক অন্যায় অবিচারের, এক অন্যায় ষড়যন্ত্রের শিকার আমাদের সম্পাদক কৌস্তুভ রায়, আমরা সেই ষড়যন্ত্রের কথা জনগণেশের সামনে নিয়ে আসছি, বিচার চাইছি, জাস্টিস ফর কলকাতা টিভি, জাস্টিস ফর কৌস্তুভ রায়।

গতকালই আমরা বলেছিলাম এক কনভিক্টেড আসামির কাছ থেকে জোগাড় করা তথ্যকে সামনে রেখে এই গ্রেফতারির ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। একজন কনভিক্টেড আসামি যাকে উচ্চ আদালত চিটিংবাজির মামলায় আজীবন কারাবাসের শাস্তি দিয়েছে, সেই মানুষটা হঠাৎ ২০২৩-এ এক ই-মেল করে হিসেবের এক কাগজ যাকে অ্যাকাউন্টসের ভাষায় লেজার বলে তা পাঠিয়ে দিলেন। কী করে পাঠালেন, কে জোগাল জেলের মধ্যে কম্পিউটার, ইন্টারনেট? তদন্ত হবে না? কোথা থেকে সেই কনভিক্টেড আসামি তাঁর হিসেবের কাগজপত্র পেলেন যা মামলা চলাকালীন সিজ হয়ে আদালতের কাছে গচ্ছিত? কোন আদালত তাঁকে এই অ্যাকাউন্টসের খাতাপত্র দেখার অনুমতি দিয়েছে? জানতে চাইব না? এবং মজার কথা হল মিথ্যের এক ভারি সমস্যা আছে, মিথ্যে বললে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ মনে রাখতে হয়, না হলেই গোলযোগ। এখানেও সেই গোলযোগ বার বার হয়েছে।

আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব-৮)

অভিযোগটা কী? ওই যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত আসামির চিট ফান্ডের ব্যবসা ছিল, সেসব পয়সা নাকি বিজ্ঞাপন দেওয়ার নাম করে কলকাতা টিভিতে পাঠানো হয়েছিল, মানুষের ঘাম রক্তের পয়সা নাকি এইভাবেই এইপথেই ঘোরাফেরা করেছে। মানে মনোরঞ্জন রায় কলকাতা টিভিকে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন, সেই পয়সার কিছু অংশ রেখে আবার তা ফেরত চলে গেছে মনোরঞ্জন রায়ের কাছে। হ্যাঁ, এভাবেই তো বেআইনি টাকা ঘোরে। তো আসুন সেই টাকার হিসেব নেওয়া যাক।

ওই মনোরঞ্জন রায়ের হিসেবের খাতা বলছে, উনি তাঁর কোম্পানির বিজ্ঞাপন বাবদ ৩৩ কোটি টাকা খরচ করেছিলেন ২০১১ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত। ওই হিসেবের খাতা বলছে মাত্র ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা কলকাতা টিভির কাছে এসেছিল, বাকি টাকা বিভিন্ন চ্যানেল, বিভিন্ন খবরের কাছে গেছে, কত টাকা? ২৯ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা। মানে মোট টাকার ১১ শতাংশ এসেছিল কলকাতা টিভির কাছে, বাকি ৮৯ শতাংশ গেছে বিভিন্ন চ্যানেল আর কাগজের কাছে, তাদেরকে ডাকা হয়েছে? সিবিআই বা ইডি তাদের দফতরে রেড করেছে? তাদের মালিক সম্পাদকদের গ্রেফতার করা হয়েছে? উত্তর, না। কেন ভাই? কারণ খুব সোজা, তাঁরা দিল্লির নির্দেশ মেনে চলছেন, আমাদের সম্পাদক সেই নির্দেশ মেনে চলেননি তাই ২০০ দিনের বেশি জেলেই আছেন। আচ্ছা এই মনোরঞ্জন রায়ের বিরুদ্ধে কত টাকা মেরে দেওয়ার অভিযোগ ছিল? ৬৩৮ কোটি টাকার ঘোটালার জন্য ওনার আজীবন কারাবাস হয়েছে, আর কলকাতা টিভির মালিকের ওপর সেই ৬৩৮ কোটির কত টাকার গরমিলের অভিযোগ এনেছে ইডি? ১.৫০ কোটি টাকার, মানে দশমিক দুই পাঁচ শতাংশের জন্য একজনকে ধরে ২০০ দিনের বেশি জেলে রাখা হয়েছে, কিন্তু বাকি ৯৯.৭৫ শতাংশ টাকার নয়ছয়ের জন্য, পাচারের জন্য, হিসেবের গরমিলের জন্য দায়ীদের একজনও চিহ্নিতও নয়, এটা ষড়যন্ত্র নয়? এবং সেই স্যাক্রোস্যান্ট হিসেবের কাগজ যা নাকি ওই কনভিক্টেড আসামি ইডিকে দিয়েছেন, যার ভিত্তিতে ইডি কৌস্তুভ রায়কে জেলে পুরেছে, সেটাও কি একটা? একই অ্যাকাউন্টসের নানান হিসেব ইডিই লাগাতার দিয়ে চলেছে।

১৭ জুলাই যখন কৌস্তুভ রায়কে গ্রেফতার করা হল, তখন ইডি যে বিজ্ঞাপন বাবদ টাকার হিসেব ওই মনোরঞ্জন রায়ের হিসেবের বইয়ে দেখিয়েছিল তার পরিমাণ ছিল ১.৯১ কোটি টাকা। কিন্তু যখন কৌস্তুভ রায়কে সই করতে বলা হল সেই হিসেবের পাতায় তখন তা কমে ১.৫৫ কোটি টাকা হয়ে গেল। এর কিছুদিন পরেই যখন জামিনের আবেদনে আপত্তি জানিয়ে ইডি আদালতে তথ্য পেশ করল, তখন সেই অঙ্ক কততে দাঁড়াল, আরও কমে তা হল ১.৪০ কোটি টাকা। ইডির অফিসারেরা কি প্রাথমিক অঙ্ক বিষয়ে ফেল করেছিলেন? নাকি ওনারাও উনিজির মতো এন্টায়ার পলিটিক্যাল সায়েন্স নিয়েই পাশ করেছেন? এটা কি পি সি সরকারের ম্যাজিক, একই হিসেবের বইয়ে যে টাকা নিয়ে একজনকে গ্রেফতার করে ২০০ দিনের বেশি জেলে রাখা হয়েছে তা ক্রমশ কমে যাচ্ছে, বছর দুয়েক পরে তাহলে তো নিজে থেকেই উবে যাবে। আসলে ওই যে মিথ্যে বলার সমস্যা হল বার বার বানাতে হয়, জেল থেকে ই-মেল করা ওই হিসেবের কাগজের আসলে তো কোনও অস্তিত্বই নেই, কাজেই তা একেক বার একেক রকম হচ্ছে। খুব পরিষ্কার যে হিসেবের খাতা একটা নয়, অনেকগুলো আছে, তা বানিয়েছে হয় ওই যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া অপরাধী না হলে ইডির কর্তারা। যেই বানাক, উদ্দেশ্য তো একটাই, কৌস্তুভ রায়কে জেলে রাখো, অন্তত ২০২৪-এর নির্বাচন পর্যন্ত আটকে রাখো, এটাই ষড়যন্ত্র, আর সে ষড়যন্ত্র তো ওই কনভিক্টেড আসামি করেনি, ইডি কর্তারাও তো কর্তার ইচ্ছায় কর্ম করে চলেছেন, পিছনে কে সেটা বুঝতে কি খুব অসুবিধে আছে? এখানেই কি শেষ? আরও অনেক আছে, সেসব নিয়ে আবার সোমবারে হাজির হব আপনাদের সামনে।

দেখুন ভিডিও:

RELATED ARTICLES

Most Popular