আমাদের মুখ্য সম্পাদক কৌস্তুভ রায় (Kaustuv Ray) জেলে আছেন, অভিযোগের কথায় পরে আসছি, কারণ সে এক হাস্যকর তামাশা। তার সাতকাহনে আসা যাবে তার আগে বরং বলা যাক এটাই কি প্রথম? উনি কি প্রথম? উত্তর, না। সংবাদপত্রের মালিক বা মুখ্য সম্পাদক বা সাংবাদিক হিসেবে এটা নতুন কিছু নয়। সেই ২০১৪ সাল থেকেই এক অলিখিত আক্রমণ নেমে এসেছে সংবাদমাধ্যমের উপর।
তিন ধরনের সংবাদমাধ্যম তৈরি হয়েছে। প্রথমটা হল এক্কেবারে শিরদাঁড়াহীন শাসকের পা চাটা ভৃত্যের চেয়েও খারাপ ভূমিকা নিয়ে কিছু সংবাদমাধ্যম লাগাতার কাজ করে চলেছে, যাদের সাংবাদিক রবীশ কুমার বেশ লাগসই এক নাম দিয়েছেন, গোদি মিডিয়া। জাতীয় সংবাদমাধ্যমে টিভি চ্যানেলের দিকে তাকালে এরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। পিঠে জয়ঢাক, বাজিয়েই চলেছেন। আজও এই সংবাদমাধ্যম প্রশ্ন করছে রাহুল গান্ধীকে, প্রশ্ন করছে কেজরিওয়ালকে, প্রশ্ন করছে মমতা ব্যানার্জি, স্তালিন বা তেজস্বী যাদবকে বা কমিউনিস্টদের। দ্য নেশন ওয়ান্টস টু নো বলে যে প্রশ্ন করছেন তার আগের দিনে সেই প্রশ্নের অবতারণা করেছেন মোদিজি বা সম্বিত পাত্র বা অমিত মালব্য। ওঁরা তার প্রতিধ্বনি নিয়ে নেমে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কররে লোপাট (পর্ব-১)
পরবর্তী ভাগ হল আপাতভাবে স্বাধীন এমন ভান করা কিছু সংবাদমাধ্যম, যাঁরা দিনের শেষে মোদিজির পক্ষেই রায় দিতে বাধ্য থাকেন। ধরুন তাঁদের সমীক্ষা, বেকারত্ব কি আপনার কাছে বড় সমস্যা? ৬৮ শতাংশ বলেছে হ্যাঁ। মূল্যবৃদ্ধি? ৬১ শতাংশ বলছে হ্যাঁ। গত ১০ বছরে আপনার আর্থিক অবস্থা ভালো হয়েছে? ৩৯ শতাংশ বলেছেন খারাপ হয়েছে, ২৮ শতাংশ বলেছেন একই আছে। মুখ ফুটে সব কথা বলতে পারছেন? মানে ফ্রিডম অফ স্পিচ আছে? ৪৭ শতাংশ বলছেন না নেই। কিন্তু শেষ হিসেবে বিজেপি ৩০৪টে আসন পাবে। এই হচ্ছে তাদের চেহারা।
এবং শেষে আছেন তাঁরা যাঁরা এখনও শিরদাঁড়া সোজা রেখে সরকারের সমালোচনা, তাদের নীতির সমালোচনা, সাম্প্রদায়িকতার বিরোধিতা করছেন, জঙ্গি জাতীয়তাবাদের বিরোধিতা করছেন। যাঁরা বলছেন এই আপাত ৫ ট্রিলিয়ন ইকোনমির প্রচারের আড়ালে দেশ বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। সেই সংবাদপত্রের দফতরে তালা ঝোলানোর ব্যবস্থা চলছে, সেই মালিক সম্পাদকেদের জেলে পোরা হচ্ছে, সেই সাংবাদিকরা জেলে। এবং সেই জন্যই আজ আমাদের দেশ বিশ্বের ফ্রিডম ইনডেক্সে ১৮০টা দেশের মধ্যে ১৭২-এ আর সেই কারণেই আমাদের মুখ্য সম্পাদক কৌস্তুভ রায় জেলের ভিতরে।