বোলপুর: ঋতুরাজ বসন্ত (Spring) যখন তার ডালি সাজিয়েছে, ঠিক সেই সময় রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতনে (Shantiniketan) আবিরের রং ফিকে। মঙ্গলবার দোল পূর্ণিমার দিন শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসব (Basanta Utsav 2023) পালন করল না বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva-Bharati University) কর্তৃপক্ষ।
প্রতিবছর শান্তিনিকেতনে দোল পূর্ণিমার দিন বসন্ত উৎসব পালন করে বিশ্বভারতী। কিন্তু এবছর ব্যতিক্রম। দোলের চার দিন আগে, অর্থাৎ ৩ মার্চ অকাল বসন্ত বন্দনা উৎসব করেছে বিশ্বভারতী। কিন্তু দোলের দিন কার্যত ফাঁকা রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতন। সাধারণ মানুষের প্রবেশেও জারি করা হয় নিষেধাজ্ঞা।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা দোলে ভিড় জমান শান্তিনিকেতনে। বসন্ত উৎসব দেখার পর আবিরের বিভিন্ন রঙে একে অপরকে রাঙিয়ে দেন। কিন্তু এ বছর সব কিছুই বন্ধ বিশ্বভারতীতে। একরাশ হতাশা নিয়েই ফিরতে হচ্ছে দূর দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের। পাশাপাশি বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী, আশ্রমিকরাও ক্ষুব্ধ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে সার্বিকভাবে বসন্ত উৎসব হয়েছিল। সেবার বসন্ত উৎসব দেখতে ভিড় জমিয়ে ছিল হাজার হাজার মানুষ। সেবার দোলের দিন ঝামেলা হয়।প্রতি বছর দোলের দিন ভিড়ের চোটে শান্তিনিকেতনে পা রাখা যায় না। হলুদ শাড়ি-পাঞ্জাবি পরে হাজির হন দেশ-বিদেশের পর্যটকরা। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের আমল থেকে চলে আসা বসন্ত উৎসব ২০২০ সালে প্রথম বন্ধ করা হয় শান্তিনিকেতনে।
এরপর ২০২১ সালেও কোভিডের জন্য বন্ধ ছিল দোল উৎসব। ২০২২ সালে হোলির দিন নয়, তার পরে বিশ্বভারতী ছাত্রছাত্রী, কর্মী, অধ্যাপকদের নিয়ে নিজেদের মতো করে বসন্ত উৎসব পালন করে। বাইরের কারও প্রবেশাধিকার ছিল না। তিন দিনের রুদ্ধদ্বার বসন্ত উৎসব চলে নববর্ষ পর্যন্ত।
গত কয়েক মাস ধরে নানা ইস্যুতে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাঁর নানা ফতোয়া, খামখেয়ালিপনায় ক্ষুব্ধ এবং বিরক্ত বিশ্বভারতীয় পড়ুয়া থেকে শুরু করে অধ্যাপক, শিক্ষক, কর্মচারীদের বড় অংশ, ক্ষুব্ধ আশ্রমিক এবং শান্তিনিকেতনের সাধারণ মানুষও। হঠাৎই উপাচার্য এক নোটিস জারি করে জানান, ৩ মার্চ বসন্ত উৎসব হবে বিশ্ব ভারতীতে। সে নয় হল। তাই বলে দোলের দিন রংয়ের উৎসব পালন হবে না বিশ্বভারতীতে, এই প্রশ্নই ঘুরে ফিরছে শান্তিনিকেতনে।