নয়াদিল্লি: চাইলে, এ বার ট্রেনে (India-Nepal Rail link) চেপেই নেপালে যেতে পারেন। ভারতীয় হলে, সঙ্গে যে কোনও একটি স্বীকৃত সচিত্র পরিচয়পত্র থাকলেই চলবে। সেটা আধার কার্ড হতে পারে। কিংবা সচিত্র ভোটার কার্ড। বা ড্রাইভিং লাইসেন্স। পরিচয়পত্র কিন্তু বাধ্যতামূলক। পাঁচ কামরার ঝাঁ-চকচকে ট্রেনে দু’টি বাতানুকূল কোচও থাকছে। তবে, পর্যটক বা পর্যটনের কথা মাথায় রেখে এই ট্রেন পরিষেবা নয়। বরং প্রয়োজনীয়তাকে প্রাধান্য দিয়ে পুনরায় রেলপথে জুড়ছে ভারত-নেপাল। বন্যার কারণে পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
তিন দিনের সফরে শুক্রবারই ভারতে এসেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দেউবার এটাই প্রথম ভারত সফর। শনিবার সন্ধ্যায় দিল্লি থেকে একযোগে পতাকা নেড়ে দু-দেশের মধ্যে সংযোগকারী এই লোকাল ট্রেন পরিষেবার সূচনা করেন দুই রাষ্ট্রনেতা। ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথ বিহারের জয়নগরের সঙ্গে জুড়েছে নেপালের কুর্থাকে।
কাঠমান্ডু পোস্টের রিপোর্টে দাবি করা হয়, জয়নগর-কুর্থা ক্রস-বর্ডার রেলওয়ে লিঙ্ক-ই হতে চলেছে নেপালের প্রথম আধুনিক রেলওয়ে পরিষেবা। DEMU ট্রেনের পাঁচটি কোচ তৈরি করেছে কঙ্কন রেল কর্পোরেশন লিমিটেড। দু-বছর আগেই এই কোচগুলি নেপালকে হস্তান্তর করা হয়।
বিহারের জয়নগর থেকে নেপালের বিজলপুরা পর্যন্ত ট্রেনপথ ব্রিটিশ আমলেই চালু হয়েছিল। ১৯৩৭ সালে ন্যারোগেজ লাইন ছিল। ২০০১ সালে নেপালে বন্যার জেরে ব্রিটিশ আমলের সেই রেলসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার পর থেকেই পুনরায় রেল সংযোগের দাবি জোরালো হচ্ছিল।
বিহারের জয়নগর থেকে নেপাল সীমান্ত চার কিলোমিটার। বর্তমানে ৩৫ কিলোমিটার রেলপথে ব্রডগেজ পরিষেবা শুরু হতে চললেও পরিকল্পনা অনুযায়ী অদূর ভবিষ্যতে ৬৮.৭ কিলোমিটার রেলপথে জোড়ার কথা। এই রেল প্রকল্পের মধ্যে পড়ছে জয়নগর-বিজলপুরা-বরদিদাস। বিজলপুরা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণে ভারত সরকার খরচ করেছে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা। কুর্থা থেকে আরও প্রায় ১৭ কিলোমিটার বিজলপুরা।
তিন দিনের সফরে শুক্রবার দিল্লিতে পৌঁছে বিজেপির সদর দফতরে গিয়েছিলেন শের বাহাদুর দেউবা। বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা-সহ গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee Nepal Visit: চীন, ইতালির পর মমতার নেপাল সফরেরও অনুমতি দিল না কেন্দ্র
শনিবার হায়দরাবাদ হাউসে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক ছিল নেপালের প্রধানমন্ত্রীর। তার আগে রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসেন দেউবা। গত বছর গ্লাসগোয় রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু বৈঠকের সময় দুই রাষ্ট্রনেতা প্রথমবার মুখোমুখি হয়েছিলেন। চলতি বছরের শুরুতেই ভারতে আসার কথা ছিল দেউবার। কিন্তু করোনা অতিমারির কারণে শেষ মুহূর্তে তাঁর সফর বাতিল হয়ে যায়।
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গেও কথা হয়েছে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর। এই বৈঠকের পর জয়শংকর এক টুইট বার্তায় জানান, শের বাহাদুর দেউবার এই সফরে নেপালের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে আশা করা যায়।