কলকাতা: ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ৩০ সেপ্টেম্বর ওই কেন্দ্রে ভোট। শুক্রবার কমিশনের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রচারও শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। আর বিজেপি? তৃণমূলকে রোখার কৌশল তো দূর, রাজ্য বিজেপির দুই নেতার বক্তব্যে দলের দ্বন্দ্ব আবারও প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
নির্বাচন কমিশন রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে ভবানীপুরে উপনির্বাচনের কারণ জানিয়েছে। কমিশনের বক্তব্য, রাজ্যের কোনও মন্ত্রী ৬ মাসের মধ্যে ভোটে জিতে না এল সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হবে। সংবিধানের ১৬৪(৪) ধারা দেখিয়ে এই উদাহরণ দিয়েছিলেন মুখ্যসচিব। সাংবিধানিক প্রয়োজনীয়তা মেনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুরোধে ভবানীপুরে ভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যদিও কমিশনের এই যুক্তি মানতে চায়নি বিজেপি। অনেক সাপের ছুঁচো গেলার মতো অবস্থা হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, নির্বাচন হোক। আমরা কখনও বলিনি নির্বাচন করা যাবে না। বলেছিলাম পরিস্থিতি অনুকূল নয়। আগে পুরনির্বাচন হোক, এটাই চেয়েছিলাম। কিন্তু কমিশন ভোট ঘোষণা করেছে। যখনই নির্বাচন হবে, আমরা লড়ব।
আরও পড়ুন: এত নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই, অকপট স্বীকারোক্তি দিলীপের
দিলীপের উল্টো সুর শোনা গিয়েছে শুভেন্দুর গলায়। ভোট করার অনুরোধ জানানোয় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা মুখ্যসচিবকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। শুভেন্দুর কথায়, মুখ্যসচিব লজ্জার মাথা খেয়ে কমিশনকে চিঠি লিখেছেন। মুখ্যমন্ত্রী ওনাকে দিয়ে চিঠি লিখিয়েছেন। বাধ্য করিয়েছেন চিঠি লেখাতে। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং তৃণমূলকে নিশানা করেছেন শুভেন্দু।
শুভেন্দুর কথায়, ‘রাজ্যের মুখ্যসচিব নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটে না জিতলে রাজ্যে সঙ্কট তৈরি হতে পারে। রাজ্যে ১৪৮টি আসন নেই তৃণমূলের, এমন তো নয়। তা সত্ত্বেও মুখ্যসচিব কেন এমন লিখেছেন? ২১৩ আসনে জয় পেলেও দ্বিতীয় কাউকে মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়ার অবস্থায় নেই তৃণমূলের। ওটা একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি।’
আরও পড়ুন: ইডির চার্জশিটে কেন নাম নেই ? ফের কলকাতা টিভি’র প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন শুভেন্দু
দিলীপ যেখানে ভোটে লড়ার কৌশল ঠিক করতে আগ্রহী, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সেখানে মানতেই পারছেন না ভোট হওয়ার বিষয়টি! দিলীপ-শুভেন্দু বিবাদের কথা রাজ্য বিজেপির অন্যতম চর্চার বিষয় হিসেবে গণ্য হয়। নির্বাচনের বিজেপির ভরাডুবির পর সেই ঠান্ডা লড়াই আরও বেড়েছে। ভবানীপুরে উপনির্বাচন ঘোষণার পর দুই নেতার দু’ধরণের মন্তব্যে আবারও প্রকাশ্যের বিজেপির ‘অর্ন্তকলহ’।