ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৫৭-৭ (২০ ওভারে)
অস্ট্রেলিয়া ১৬১-২ (১৬.২ ওভারে)
দুবারের টি ২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ আগেই বিদায় নিয়েছিল এবারের বিশ্ব কাপ থেকে। দেখার ছিল তারা এক নম্বর গ্রুপের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সামনে কোনও বাধার প্রাচীর তৈরি করতে পারে কিনা। না সেটা তারা পারেনি। বরং ম্যাচের শেষ দিকে হার নিশ্চিত জেনে তারা নানারকম মজা করতে থাকে নিজেদের মধ্যে। ব্যাপারটা খুবই খারাপ জায়গায় চলে যায় যখন ক্রিস গেলের বলে আউট হয়ে যান মিচেল মার্শ। আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে যাওয়া মার্শকে পিছন থেকে জাপটে ধরেন গেল। দৃশ্যত অপ্রস্তুত মার্শ কোনও রকমে গেলের বাহুবেষ্টনী থেকে মুক্তি পান। তখনও জেতবার জন্য একটি রান বাকি ছিল অস্ট্রেলিয়ার। রস্টন চেজের পরের ওভারে একটি বাউন্ডরি মেরে ম্যাচের সমাপ্তি ঘোষণা করেন ওয়ার্নার। ৫৬ বলে অপরাজিত ৮৯ রান করার জন্য তিনিই ম্যাচের সেরা। কুড়ি ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৫৭-৭ তাড়া করে বাইশ বল বাকি থাকতেই অস্ট্রেলিয়া ১৬১-২ তুলে আট উইকেটে ম্যাচ জিতে যায়। এবং পাঁচ ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে এক নম্বর গ্রুপ থেকে সেমিফাইনালে চলে যায়। এই গ্রুপ থেকে আগেই সেমিফাইনালে চলে গেছে ইংল্যান্ড। আজ রাতে তাদের শেষ ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে। সেই ম্যাচটির ফল এখন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেল। গ্রুপে অস্ট্রেলিয়া হেরেছে শুধু ইংল্যান্ডের কাছে। বাকি চারটি ম্যাচে তারা জয়ী। হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, শ্রী লঙ্কা এবং আজ শনিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
আবু ধাবির শেখ জয়েদ স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়া টস জিতে ফিল্ডিং নেয়। কিন্তু অজিদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং সেভাবে দাঁড়াতে পারেনি। আগের ম্যাচেই টি টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন ডোয়েন ব্রাভো। এদিন সেই পথেই হাঁটলেন ক্রিস গেল যাঁকে টি টোয়েন্টি ক্রিকেটের শাহেনশা বলা হয়। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে জীবনের শেষ টি টোয়েন্টি ম্যাচে গেল করলেন মাত্র নয় বলে ১৫ রান। মেরেছেন দুটি ওভারবাউন্ডারি। নিকোলাস পুরান (৪) এবং রস্টন চেজ (০) খুব তাড়াতাড়ি আউট হয়ে গেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান দাঁড়ায় ৩৫-৩। এর পর ইভান লিউইস (২৬ বলে ২৯) এবং শিমরন হেটমেয়ার (২৮ বলে ২৭) চতুর্থ উইকেটে ৩৫ রান যোগ করেন। এর পর হেটমেয়ার আউট হয়ে গেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান দাঁড়ায় ৯১-৫। এখান থেকে ডোয়েন ব্রাভো এবং কায়রন পোলার্ড ইনিংসকে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন। ব্রাভো বেশি রান (১২ বলে ১০) না করলেও ভাল সঙ্গ দিয়েছেন পোলার্ডকে। তবে পোলার্ড ৩১ বলে ৪৪ না করলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দেড়শোর গণ্ডি পেরোয় না। অধিনায়কের ইনিংসে চারটি বাউন্ডারির সঙ্গে ছিল একটি ওভারবাউন্ডারিও। শেষ দিকে আন্দ্রে রাসেল সাত বলে ১৮ করে দলের ইনিংসকে সম্মানজনক করেন। তাঁর সাত বলের ইনিংসে ছিল একটি বাউন্ডারি ও দুটি ওভারবাউন্ডারি। রাসেলের সঙ্গে অপরাজিত ছিলেন জেসন হোল্ডার (১)। অজি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল জশ হ্যাজেলউড। ৩৯ রানে চার উইকেট নিয়েছেন তিনি। উইকেটের মধ্যে আছেন মিচেল স্টার্ক (১-৩৩), প্যাট কামিংস (১-৩৭) এবং অ্যাডাম জাম্পা (১-২০)।
অস্ট্রেলিয়ার যা ব্যাটিং লাইন আপ তাতে কুড়ি ওভারে ১৫৮ তেমন কোনও রান নয়। তাই শুরুতেই অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে (১১ বলে ৯) হারালেও ডেভিড ওয়ার্নার এবং মিচেল মার্শ (৩২ বলে ৫৩) দ্বিতীয় উইকেটে ১২৪ রান তুলে দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌছে দেন। মার্শের ৫৩ রানে ছিল পাঁচটি বাউন্ডারির সঙ্গে দুটি ওভারবাউন্ডারিও। তবে বেশি নির্দয় ছিলেন ওয়ার্নার। ৫৬ বলে তাঁর অপরাজিত ৮৯ রানের পিছনে ছিল নয়টি বাউন্ডারির সঙ্গে চারটি ওভারবাউন্ডারিও। অস্ট্রেলিয়া যে দাপটে এবার বিশ্ব কাপ খেলছে তাতে সেমিফাইনালে তারা পাকিস্তানকে সহজে ছাড়বে বলে মনে হয় না।
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হেলাফেলা করে হারিয়ে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়া
Follow Us :