কলকাতা: আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবসে তৃণমূল সরকারকে নিশানা করলেন দলের সর্বোচ্চ নেতা নওশাদ সিদ্দিকী (Naoshad Siddqui)। ভাঙড়ের বিধায়ক বিভিন্ন বিষয়ে রবিবার রাজ্য সরকারের (TMC Government) সমালোচনা (Criticsm) করেন। এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে নওশাদ বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মান আজ তলানিতে। হাসপাতালে দালা রাজ চলছে। আইএসএফ বিকল্প পথের কথা বললেও শাসক সে কথা শোনে না। কলকাতার রাস্তায় মঞ্চে চাকরিপ্রার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন কিন্তু তাঁদের নিয়োগ হচ্ছে না। আইএসএফের প্রোগ্রাম যাতে না হয় তাই আদালতে চলে যাচ্ছে সরকার। কিন্তু আমাদের অনুষ্ঠান হবেই আমরা করব। আমরা সরকারকে প্রস্তাব দিতে চাই যে যত চাকরির পরীক্ষা রাজ্যে হবে তার একটা কার্বন কপি পরীক্ষা শেষে চাকরি প্রার্থীরা নিয়ে যেতে পারেন। তাতে পরীক্ষার্থী তার নম্বর যাচাই করে দেখতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, আইএসএফ এর সমর্থকরা চেয়েছিল বড় করে কলকাতায় প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করতে। কিন্তু সেটা পারেনি। তাদের বলব ভবিষ্যতে আমরা বড় কর্মসূচি করব। ভিক্টোরিয়া হাউস এর সামনেই করব প্রচুর কর্মী সমর্থক নিয়ে। বর্তমানটা বেদনাদায়ক হলেও ভবিষ্যৎ অনেক আরামদায়ক হবে। আমাদের লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে চলবে না। কারণ অনেকেই আমাদের মধ্যে ঢুকে লক্ষ্যভ্রষ্ট করার চেষ্টা করবে সেই ফাঁদে পা দিলে চলবে না। যারা আমাদের ঘোষিত সভা হতে দিল না তার জবাবটা আমরা ব্যালট বক্সেই দেব। প্রেসিডেন্সির উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে মেন্টর গ্রুপ তৈরি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন তার কী অবস্থা, জবাব দেবেন মুখ্যমন্ত্রী? আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা একই রকম। বাংলার ১০০ দিনের টাকা আনতে পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী। যদি আনতে পারতেন আমি মন থেকে তাঁকে ধন্যবাদ জানাতাম। রাজভবনের সামনে ১৪৪ ধারা অমান্য করে সেখানে তৃণমূল মিটিং মিছিল করল। মুখ্যমন্ত্রী চায়ের পাতা তুলতে পারেন চা বাগানে গিয়ে, কিন্তু চা কর্মীদের ন্যূনতম মজুরিটা ঠিকমতো দিতে পারেন না।
আরও পড়ুন: নির্বিচারে কাটা হচ্ছে রূপনারায়ণের চর, মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়
নওশাদের আরও বক্তব্য, রাজ্যে দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিধানসভায় যদি কোনও দল সব থেকে বেশি প্রশ্ন তুলে থাকে তা হল আইএসএফ। ২০২৪এ লোকসভা নির্বাচন আসন্ন। তাই আমাদের রাজ্য থেকে আইএসএফ এর প্রতিনিধি দিল্লিতে পাঠাতে হবে। আমরা প্রস্তাব দিচ্ছি যারা গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য যুক্ত তাঁদের ন্যূনতম মাইনে ১৫ হাজার টাকা করতে হবে। পার্শ্বশিক্ষকদের সমকাজে সমবেতন, সিভিক ভলেন্টিয়ারদের সম্মানজনক বেতন দিতে হবে। পুলিশের শূন্য পদ অবিলম্বে পূরণ করতে হবে। পুলিশকে ১৬ থেকে ১৮ ঘন্টা ডিউটি নয়। সর্বোপরি কেন্দ্রীয় সরকারি হারে মহার্ঘ ভাতা দিতে হবে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের কাছে অনুরোধ করব যে আপনারা অনশন থেকে সরে আসুন। অন্যভাবে লড়াইয়ের পথ বেছে সরকারকে বাধ্য করুন আপনাদের দাবি মানতে। কর্মীদের বলব ২০২৬-কে পাখির চোখ করুন। ২০২৬-এ আমাদের মসনদে বসতে হবে। বিজেমূল নিজেরা ঠিক করে নিক তখন বিরোধী দলনেতা কে হবেন শুভেন্দু, সুকান্ত না পিসি, ভাইপো। রাজ্য থেকে শিল্পপতিরা সেদিনই মুখ ফিরিয়েছিল যেদিন টাটাকে রাজ্য থেকে তাড়ানো হয়েছিল। আগামী ছয় মাসের জন্য অর্থ দফতরের দায়িত্ব আমায় তুলে দিন আমি রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন করে দেব। ছয় মাসের মধ্যে যদি নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।
আরও খবর দেখুন