বেঙ্গালুরু: সিদ্দারামাইয়া কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন। কংগ্রেস হাইকমান্ড এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সোমবার রাতে জানা গিয়েছে। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রিত্বের আরেক দাবিদার ডিকে শিবাকুমার শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেন, এদিনমল্লিকার্জুন খাড়্গের ডাকা বৈঠকে যাবেন না। তাতে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড খানিকটা অসন্তুষ্ট হয়েছেন। ডিকে শিবাকুমার স্বাস্থ্যের জন্য দিল্লি যাবেন না বলে জানিয়েছেন। ফলে শিবাকুমারকে সামলানো এখন কংগ্রেসের কাছে চ্যালেঞ্জর। প্রায় ৮০ শতাংশ বিধায়ক সিদ্দারামাইয়াকে সমর্থন দিয়েছেন। কী করে তাঁকে এড়ানো যায়? সেই কথা বলেছে হাইকম্যান্ড।
তবে এদিন জল্পনা উস্কে ডিকে শিবাকুমারের বড় দাদা ও কর্ণাটকের সাংসদ ডিকে সুরেশ বলেন, ডিকে শিবাকুমারকে প্রকৃত বিচার দেওয়া দরকার। সিদ্দারামাইয়ার ত্যাগ স্বীকার করা উচিত। ডিকে শিবাকুমার দিল্লি যেতে ইচ্ছুক নয়। পরে অবশ্য ডিকে শিবাকুমার বেঙ্গালুরুর সদাশিবনগরের বাড়িতে জরুরি সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলেন, আমরা বিধা্য়কদের পরিষদীয় বৈঠকে এক লাইনের প্রস্তাব নিয়েছি। হাইকমান্ড আমাকে ও সিদ্দারামাইয়াকে বৈঠকের জন্য ডেকেছে। দিল্লিতে বৈঠকে আমি যাব। তিনি আরও বলেন, আমি সোনিয়া গান্ধীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম কংগ্রেসের জয় উপহার দেব। আজকে আমরা ১৩৫ আসনে জয়ী হয়েছি। এই ফলাফলে আমি সন্তুষ্ট। আমি কারও বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করব না। অন্য কারও কতজনের সমর্থন রয়েছে সেই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না। এরপর তিনি তুমাকুরুতে গুরুর আশীর্বাদ নিতে চলে যান।
বর্তমানে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন তাই ঠিক করা কংগ্রেসের কাছে অ্যাসিড টেস্ট ছিল। যেহেতু ডিকে শিবাকুমার ও সিদ্দারামাইয়া দুজনেই মুখ্যমন্ত্রী পদের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার নতুন ক্যাবিনেট শপথ নেবে। রবিবার কংগ্রেসের পর্যবেক্ষকদের একটি টিম নতুন নির্বাচিত কর্ণাটকের বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেসময় বাইরে ডিকে শিবাকুমার ও সিদ্দারামাইয়ার সমর্থকরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। তারপর তাঁরা দিল্লি চলে গিয়েছেন হাইকমান্ডের সঙ্গে আলোচনা করতে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে, সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে তাঁরা আলোচনা করেন। তাতে সিদ্দারামাইয়ার নামেই সিলমোহর পড়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সিদ্দারামাইয়ার দিকে বেশি বিধায়কের সমর্থন থাকলেও এবারের ভোটে শিবাকুমারের অবদান কংগ্রেসের কেউ অস্বীকার করতে পারছে না। এদিন সকালে ডিকে শিবাকুমার বলেন, তাঁকে যে কাজ দেওয়া হয়েছিল সেই কাজ তিনি করেছেন। এবার এটা পার্টি হাইকমান্ডের বিষয় তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বিষয়ে কী করবেন। ২২৪টি আসনের বিধানসভায় এই ভোটে বিজেপি জিতেছে মাত্র ৬৬টি আসনে। ২০১৮ সালে তারা পেয়েছিল ১০৪টি আসন। কংগ্রেসে সেখানে জিতেছে ১৩৫টি আসন। কর্ণাটকে (Karnataka) জয়ের পরই খুশিতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিলেন সেখানকার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবাকুমার (DK Shivakumar)। তিনি বলেন, কঠোর পরিশ্রম করেছি। মানুষ আমাদের উপর বিশ্বাস রেখেছেন। সবার নেতৃত্বে এটা হয়েছে। সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi) আমাকে জেলে দেখতে এসেছিলেন। তাতে আমি আস্থা পেয়েছিলাম। এই জয় কংগ্রেসের সব কর্মীর জয়।