skip to content
Saturday, July 27, 2024

skip to content
HomeআজকেAajke | দেব, মিমি, পদত্যাগ, রাজনীতি
Aajke

Aajke | দেব, মিমি, পদত্যাগ, রাজনীতি

Follow Us :

দক্ষিণে সিনেমার নায়ক, নায়িকারা কেবল রাজনীতিতে আসেনইনি, নেতৃত্ব দিয়েছেন, এম জি আর, এম জি রামচন্দ্রন থেকে জয়ললিতা থেকে এন টি রামারাও কেবল একজন এমএলএ বা এমপি হয়ে কাটাননি, দল তৈরি করেছেন, দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। দক্ষিণে এখন কমল হাসান বা পবন কল্যাণরা কেবল নায়ক নয় রাজনীতিবিদ হিসেবেও পরিচিত। কিন্তু উত্তরে এই হাওয়া ছিল না। খুব বড় ব্যাপার বলতে সুনীল দত্ত কংগ্রেসের এমপি হয়েছিলেন। তারপর হঠাৎ অমিতাভ বচ্চন ৮৪ সালে এইচ এন বহুগুণাকে এলাহাবাদে হারিয়ে দিলেন। কেবল হারানো নয়, খাইকে পান বানাও রসওয়ালা গানে মুগ্ধ ৬৮ শতাংশ ভোটার তাঁকে ভোট দিয়েছিলেন। এরপরে বহুগুণাজি প্রায় কথা বলাই বন্ধ করে দেন, ৮৯ সালে মারা যান। ওদিকে রাজীব গান্ধীর বন্ধু, বন্ধুর অনুরোধে রাজনীতিতে আসা বচ্চন সাহেব বুদ্ধিমান, তিনি ক’দিনের মধ্যেই বুঝেছিলেন এটা ওনার কম্ম নয়, উনি ৮৭তেই সাংসদ পদ ছেড়ে দেন। নামকরাদের মধ্যে রাজ বব্বর, জয়া বচ্চন, হেমা মালিনী, কিরণ খের, পরেশ রাওয়াল ইত্যাদিরা আছেন, কিন্তু ওই আছেন পর্যন্ত। আমাদের বাংলাতে হঠাৎ করে অনিল চট্টোপাধ্যায়কে নির্বাচনে দাঁড় করানো হয়েছিল, কেন কে জানে? একটা বাই ইলেকশনে জিতেওছিলেন কিন্তু রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠেননি। সেই অর্থে আমাদের বাংলার টলিউডকে রাজনীতিতে নামালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন? দুটো কারণ ছিল এই টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিকে রাজনীতির ঠিক নয়, নির্বাচনী আঙিনাতে টেনে নামানোর। প্রথমটা হল এইসব অভিনেতা অভিনেত্রী, নায়ক নায়িকাদের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগানো। দু’ নম্বর কারণ হল কিছু আসন যেখানে স্থানীয় নেতৃত্বের ভিতরে সংঘাত ছিল, আর লড়াই খুব কঠিন ছিল। সেইখানে দেব বা মিমি বা সোহম বা সায়নী, রাজ চক্রবর্তী, কাঞ্চন, লাভলি মৈত্রদের দাঁড় করিয়ে তিনি দলের ভিতরের কোন্দল থামানোর চেষ্টা করেছেন এবং জেতার সম্ভাবনাকে বাড়িয়েছেন। কেউ কেউ হেরেছেন, কেউ কেউ জিতেছেন। ২০১১তে এঁরা কোথায় ছিলেন? ধ্যাত, সে সময় থাকে নাকি? তখন সিপিএম-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এঁরা আসবেন কেন? সে সময় ছিলেন একমাত্র তাপস পাল, আলিপুরের মতো আসন জিতেছিলেন, কিছুটা দাদার কীর্তি, কিছুটা শহরের সিপিএম বিরোধী ভোটে। তৃণমূলের এই টলি প্রেমের শুরুয়াত ২০১৪ থেকে, ২০১১তে ক্ষমতায় এসে গেছেন মমতা, সিপিএম কচুকাটা, দিদির ভক্ত হয়ে উঠলেন এই টলি নায়ক নায়িকারা। সেটাই আমাদের বিষয় আজকে, দেব, মিমি, পদত্যাগ, রাজনীতি।

মিমি চক্রবর্তী বা নুসরত জাহান এই বাংলার সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে কতটা ব্যস্ত আমার জানা নেই কিন্তু দেব বা দীপক অধিকারী তো বেশ ব্যস্ত। তিনি তো কেবল ছবি করেন না ছবি প্রযোজনাও করেন। কাজেই এই ব্যস্তসমস্ত নায়ক নায়িকারা যে খুব একটা রাজনৈতিক কাজকর্মে থাকবেন না এ তো জানাই ছিল। দিদিমণিও এনাদের বাংলার রাজনীতিতে অতিথি শিল্পী হিসেবেই গণ্য করেছেন, করতে বলেছেন। কিন্তু অসুবিধেটা আবার দু’ জায়গায়।

আরও পড়ুন: Aajke | সুকান্তবাবু কীভাবে পড়ে গেলেন? তাঁকে কে ধাক্কা দিল?

প্রথম হল এনাদের রাজনৈতিক কমিটমেন্ট শূন্য, রাজনৈতিক জ্ঞান মাইনাস ১০ থেকে মাইনাস ৫০, আর বিরোধীদের সঙ্গে লড়াইয়ের ক্ষমতা নেই বললে কম বলা হবে। দেব তো মাঝেমধ্যেই বলে থাকেন, আমার তো কোনও বিরোধী নেই। সত্যিটা হল মাটিতে দাঁড়িয়ে দাঁতে দাঁত চেপে লড়ছেন নিচুতলার কর্মীরা, মার খেয়েছেন, মার খাচ্ছেন, মার দিচ্ছেন। মঞ্চে উঠে মিঠুন চক্রবর্তী যখন বলে এক ছোবলেই ছবি করে দেব, তখন এঁদের চোয়াল শক্ত হয়, যাঁরা মঞ্চের উপরে পতাকা বাঁধেন, মঞ্চের তলায় চেয়ার পাতেন, মিছিলে স্লোগান দেন। ওদিকে কর্মক্ষেত্রের বাস্তবতা মেনেই মিঠুন-দেব গলায় গলায়। করোনাতে মানুষের দুর্বিষহ অবস্থা, এধারে আমাদের দুই বোনু মিমি, নুসরত ঠোঁট সরুচাকলির মতো করে সেলফি পোস্ট করছেন। কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন, বোকা এবং কাণ্ডজ্ঞানহীন ভাবুন একবার। পাঁচ বছর কেটে গেল, সংসদের অধিবেশন শেষ, সংসদের যে সব কমিটি তার আর একটারও বৈঠক হবেই না, নির্বাচনের ঢাক বেজে গেছে, মিমিদেবীর মনে হল উনি কাজ করতে পারছেন না, উনি পদত্যাগ করবেন। এত বাজে অভিনয়? এত বাজে স্ক্রিপ্ট? বাংলার মিডিয়ার সামনে পার্ক স্ট্রিটের ইংরিজিতে বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে পাঁচটা বছর কেটে যাওয়ার পরে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে পলিটিক্স ইজ নট হার কাপ অফ টি। পাঁচ বছর আগে তাঁর কি মনে হয়েছিল পলিটিক্স তাঁর জন্মজন্মান্তরের সাধনভূমি? কাঁরা ছিলেন যাদবপুরের সাংসদ? মমতা নিজেই, ছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত, মালিনী ভট্টাচার্য, কবির সুমন। আপনার এঁদের পছন্দ বা অপছন্দ হতেই পারে, কিন্তু এঁদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় নাকি? এবং এর পাশে মিমি চক্রবর্তী? সংসদের অধিবেশন শেষ, উনি সংসদের কমিটি থেকে পদত্যাগ করছেন? যাঁদের নিজের জীবনে হাজার জটিলতা, যাঁদের রাজনৈতিক জ্ঞানগম্মি বলে কিছু নেই, যাঁদের ইডি আর সিবিআই শুনলে হাঁটু ঠক ঠক করে কাঁপতে থাকে, যাঁরা জীবনটাকে ঝালে ঝোলে অম্বলেই রাখতে চান, তাঁরা এই জগতে আসেন কেন? আর তার চেয়েও বড় প্রশ্ন তাঁদেরকে এই জগতে আনাই বা হয় কেন? আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম যে টলিউডের এই দেব মিমি নুসরত সোহমদের রাজনীতিতে এনে লাভ কী? তাঁদের বিভিন্ন কাজকর্ম মাঝেমধ্যেই দলকে কি অপ্রস্তুত করে না, লজ্জায় ফেলে না? এঁদের বদলে মাটিতে রাজনীতি করা নেতাদেরই কি সামনে আনা উচিত নয়? শুনুন কী বলেছেন মানুষজন।

এরমধ্যে ব্যতিক্রমী নামটার কথা বলতেই হবে, তৃণমূলের তাপস পাল আর বিজেপির লকেট চ্যাটার্জি সবদিক থেকেই ব্যতিক্রম। দুজনেই অত্যন্ত মন দিয়ে রাজনীতিটা শেখার চেষ্টা করেছেন, করছেন, দুজনেই রাজনীতির জন্য সময় দেন, দিয়েছেন। দুজনেই রাজনীতিটাকে তাঁদের অন্যতম কাজ হিসেবেই নিয়েছেন। অভিনেতা অভিনেত্রীরা কেন রাজনীতিতে আসবেন না, তাঁরা তো সমাজের মানুষ, তাঁদের দেশ অর্থনীতি রাষ্ট্রনীতি নিয়ে বলার হক আছে বইকী। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের শোকেস বেবি বা শোকেস ডল হয়ে থাকার মধ্যে তো গৌরব নেই। হয় মন দিয়ে রাজনীতি করুন, না হলে অভিনয় করুন, রাজনীতি পার্টটাইম ঝালমুড়ি বিক্রির কাজ নয়।

RELATED ARTICLES

Most Popular