চীন থেকে টাকা এসেছিল বলে ইডি কর্তারা জানিয়েছিলেন, সেই টাকা পেয়েছিলেন নিউজ ক্লিকের সম্পাদক মালিক প্রবীর পুরকায়স্থ, তাই তিনি আপাতত জেলে। প্রথমত চীনের টাকা এদেশে আসা বারণ এরকম কোনও নিয়ম নেই। এদেশের সঙ্গে এখনও চীনের বাণিজ্যে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই, যে কোনও সময় ফ্যান্সি মার্কেট, ধর্মতলার ফুটপাথ বা বাগড়ি মার্কেট গেলেই বুঝতে পারবেন। অ্যামাজন খুলে দেখুন, ইলেক্টনিক গুডস-এর অন্তত ৭০ ভাগ তৈরি হয়েছে চীনে, এদেশে তা আমদানি করে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। আদানির সঙ্গে কেবল চীন নয়, পাকিস্তানেরও লেনদেন আছে, বাণিজ্য রমরম করে চলছে।
চীন থেকে ভারতের আমদানি: ২০২০ সালে চীন থেকে আমদানি ছিল রেকর্ড উচ্চ ৯৭.৫ বিলিয়ন ডলার। গুরুত্বপূর্ণভাবে, এটা আগের বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। যা আমদানি করা হয়েছে তার মধ্যে আছে ইলেকট্রনিক্স, যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক এবং টেক্সটাইল। আর চীনে কত টাকার মাল আমরা পাঠাই? ২৮.১ বিলিয়ন ডলার।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব ২৬)
সাম্প্রতিক তথ্য (ডিসেম্বর ২০২৩): ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, ভারত চীনের থেকে এক মাসেই প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলারের জিনিসপত্র কিনেছে? তাহলে? এখানেই কিন্তু গল্প শেষ নয়, আমাদের মোদিজির তৈরি পিএম কেয়ার্স ফান্ড, যার হিসেব উনি দেন না, দেবেনও না। সেই তহবিলে চীনের হাওয়াই সংস্থা দিয়েছে ৭ কোটি, টিকটক দিয়েছে ৩০ কোটি, পেটিএম দিয়েছে ১০০০ কোটি, শাওমি দিয়েছে ১৫ কোটি। তো উনি জেলের বাইরে কেন? আর প্রবীর পুরকায়স্থ জেলের ভিতরে কেন? কারণ জলের মতো সোজা, নিউজ ক্লিক আরএসএস–মোদি–শাহের বিরুদ্ধে লেখা ছাপত, সত্যি কথা বলত, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরোধিতা করতো, তাই তিনি জেলে। কলকাতা টিভির সম্পাদকও একই কারণেই জেলে আছে, বিরোধিতা করেছেন প্রবলের। আমরা মনে করি দেশকে আরএসএস-বিজেপি এক মধ্যযুগীয় শাসনের দিকে নিয়ে চলেছে, আমরা তার বিরোধিতা করছি, তাই আমাদের অফিসে রেড হচ্ছে, সাংবাদিকদের ভয় দেখানো হচ্ছে, সম্পাদককে জেলে পোরা হয়েছে এক জেল খাটা আসামির অভিযোগের ভিত্তিতে। একইভাবে আরও কিছু জেলখাটা আসামি চিঠি লিখে জানিয়েছিল, শুভেন্দু অধিকারী তাঁদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, কই তাঁকে তো জেলে পোরা হয়নি। সারদা চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির অন্যতম অভিযুক্ত এখন অসমে মুখ্যমন্ত্রী, বিষ ছড়াচ্ছেন প্রতিদিন, কই তিনি তো জেলে নেই। অজিত পাওয়ার যাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তুলেছিলেন, তিনি তো জেলে নেই। দাউদের সঙ্গে সম্পর্ক আছে, এমন অভিযোগ আছে প্রফুল্ল প্যাটেলের বিরুদ্ধে, কই তিনি তো জেলে নেই। আসলে বিরোধিতা থামানোর জন্য জেলে পোরা হচ্ছে প্রতিবাদীদের, তাই আমরা সুবিচার চাইছি, তাই আমরা বলছি, উই ডিমান্ড জাস্টিস ফর কলকাতা টিভি, জাস্টিস ফর কৌস্তুভ রায়।
দেখুন ভিডিও: