গত বছর এই ডিসেম্বর মাসেই রাজ্যে অনেক কিছু ঘটবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি একের পর তারিখ দিয়ে বলেছিলেন, অমুক তারিখে অমুক হবে। তমুক তারিখে তমুকটা হবে। কিন্তু আদতে হয়নি কিছুই। তা নিয়ে শুভেন্দুকে নিজের দলের মধ্যেই নানা কথা শুনতে হয়েছিল। তাঁকে নিয়ে হাসিঠাট্টাও কম হয়নি রাজনৈতিক মহলে।
এবার এই ডিসেম্বরেও আগামিকাল থেকে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে রাজ্যে নানা ঘটনা ঘটতে চলেছে। কাল, বৃহস্পতিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার সম্পত্তি সংক্রান্ত রিপোর্ট মুখ বন্ধ করা খামে কলকাতা হাইকোর্টে পেশ করার কথা ইডির। বিচারপতি অমৃতা সিনহা মঙ্গলবারই ইডিকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, পাঁচ হাজার পাতার রিপোর্ট নিয়ে আসবেন না। প্রয়োজনীয় অংশ নিয়ে আসবেন। বিচারপতি সিনহা ইডির আইনজীবীকে ফের বলেন, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত কী করে শেষ করবেন। তদন্ত তো কিছুই হয়নি।
আরও পড়ুন: চাকরি বাতিলে এসএসসির ভূমিকায় ক্ষুব্ধ আদালত
বিচারপতি সিনহার নির্দেশে ২০ ডিসেম্বর সিবিআইয়ের রিপোর্ট দাখিল করার কথা। সেই রিপোর্টও মুখবন্ধ খামে দিতে বলা হয়েছে। আইনি এবং রাজনৈতিক মহল এই দুই রিপোর্টের দিকে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। রিপোর্ট দেখে আদালত কী বলে, কৌতূহল থাকছে তা নিয়েও।
তার আগের দিন, ১৯ ডিসেম্বর দিল্লিতে বসছে বহু প্রতীক্ষিত ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তাবড় বিরোধী নেতানেত্রীদের ওই বৈঠকে থাকার কথা। বস্তুত, ওই বৈঠক থেকেই বিরোধী ইন্ডিয়া জোট লোকসভা ভোটের দামামা বাজিয়ে দেবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজ্যে রাজ্যে ইন্ডিয়া জোটের শরিকদের মধ্যে আসন সমঝোতার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা। আবার ২০ ডিসেম্বরেই রাজ্যের আর্থিক দাবিদাওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। সেখানে একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনার টাকা বন্ধের বিষয়ে আলোচনা হবে। রাজনৈতিক মহলের আগ্রহ রয়েছে ১৯ এবং ২০ ডিসেম্বরের ঘটনাপ্রবাহের দিকেও। বিরোধী বাম এবং কংগ্রেসের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন সেটিং করতে, যাতে পিসি-ভাইপোর কোনও বিপদ না হয়। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুদারের বক্তব্য, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় একটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতেই পারেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি সব সময় বিরোধীদের সময় দেন। কিন্তু এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের সময়ই দেন না। সব মিলিয়ে মাঝ ডিসেম্বরে যখন শীত জাঁকিয়ে বসেছে, তখন আগামী এক সপ্তাহে রাজ্যে রাজনীতির পারদ কোন দিকে চড়বে, তার দিকে তাকিয়ে আছেন রাজনীতির কারবারিরা।