কলকাতা: রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের (C V Ananda Bose) বিরুদ্ধে আরও এক শ্লীলতাহানির অভিযোগ সামনে এসেছে। এটা গত বছরের জুন মাসের ঘটনা, যা ঘটেছিল দিল্লিতে। অভিযোগকারী এক নৃত্যশিল্পী। ঘটনাটি গত বছরের ১৫ অক্টোবর টুইট করে প্রকাশ্যে এনেছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। কুণাল অবশ্য তাঁর টুইটে রাজ্যপালের নাম করেননি। তিনি লেখেন, রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নির্যাতনের মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে, ঘটনাস্থল দিল্লি। সূত্রের খবর, অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতার পুলিশ কমিশনার (Police Commissioner of Kolkata) অনুসন্ধান করে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন মুখ্যসচিবের কাছে। এই ব্যাপারে রাজ্যপালের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। সূত্রের খবর, নৃত্যশিল্পীর অভিযোগের ভিত্তিতেই অনুসন্ধান চালাচ্ছিল ডিসি পদপর্যদার এক অফিসারের নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশের একটি দল। সেই মামলার অনুসন্ধানের রিপোর্ট নবান্নে জমা পড়েছে।
রিপোর্টে অভিযোগকারিনীর বয়ান অনুযায়ী, ২০২২ সালের শেষের দিকে একটি অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের সঙ্গে আলাপ হয় অভিযোগকারিনী নৃত্যশিল্পীর। অভিযোগকারিনী তাঁর ভিসা সংক্রান্ত কিছু সমস্যার কথা রাজ্যপালকে জানান। রাজ্যপাল বলেন, এই সমস্যা সমাধান করা তাঁর জন্য কোনও ব্যাপারই নয় কারণ ফরেন মিনিষ্টার রাজ্যপালের বন্ধু, ব্যাচমেট। তাই মহিলার ভিসা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন রাজ্যপাল। তারপর ২০২৩-এর ৫ জানুয়ারি রাজ্যপাল ওই মহিলাকে ডেকে পাঠান দিল্লিতে। রাজ্যপাল বলেন ওই মহিলার থাকা-খাওয়া ও টিকিটের সব ব্যবস্থা করে দেবে তাঁর ভাইপো। অভিযোগকারিনী রাজ্যপালের কথা মতো ৫ তারিখ দিল্লিতে যান এবং দিল্লির একটি পাঁচতারা হোটেলে গিয়ে ওঠেন। রাজ্যপাল ছিলেন বঙ্গভবনে। তবে মহিলার সঙ্গে দেখা করতে একটি প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে যান ওই পাঁচ তারা হোটেলে। সঙ্গে ছিল না কোনও সিকিউরিটি, উনি একাই হোটেলে গিয়েছিলেন। সেখানেই মহিলাকে ধর্ষণ করেন বলেই অভিযোগ অভিযোগকারিনী নৃত্যশিল্পীর।
আরও পড়ুন: বাংলার ৮ কেন্দ্রে এবার ভোটের হার কম গতবারের তুলনায়
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই রাজভবনের এক অস্থায়ী কর্মী কনফারেন্স রুমে রাজ্যপাল তাঁর শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ করেন। তা নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য। শাসকদল তৃণমূল এই ঘটনাকে নির্বাচনী ইস্যু করে তোলে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী জেলায় জেলায় গিয়ে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব হন। রাজ্যপাল কয়েক দিন আগে রাজভবনের একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আনেন। তাতে অবশ্য রাজভবনের বাইরের কিছু ফুটেজ দেখানো হয়। পরে কলকাতা পুলিশ দাবি করে, তাদের হাতেও একটি ফুটেজ এসেছে। সেখানে ওই তরুণীকে কাঁদতে কাদঁতে রাজভবনের সিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখা গিয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনী সভায় বলেন, আমার কাছেও ফুটেজের কপি রয়েছে। পেন ড্রাইভে সব রাখা আছে। আপনার কত কুকীর্তি আছে। আমার কাছে অনেক অভিযোগ এসেছে। আমি এতদিন কিছু বলিনি। একটা বাচ্চা মেয়ের সঙ্গে আপনি কী করেছেন। বাবা রে, আপনি ডাকলেও আমি আর রাজভবনে যাব না। আপনার পাশে বসাও পাপ।
আরও খবর দেখুন