কলকাতা: দলীয় মুখপাত্র হিসেবে কুণাল ঘোষের ইস্তফা গ্রহণ করল তৃণমূল। তবে দলের সাধারণ সম্পাদক পদে তাঁর ইস্তফা শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রহণ করেননি শীর্ষ নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, এর অর্থ হল তৃণমূল কুণালের সঙ্গে ধীরে ধীরে দূরত্ব বজায় রাখার পথেই হাঁটতে চলেছে। দল মনে করছে, কুণাল সম্পর্কে কড়া অবস্থান না নিলে লোকসভা ভোটের মুখে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে সমালোচনার ফ্লাড গেট খুলে যেতে পারে। কুণালের পর শনিবার বরাহনগরের বিধায়ক এবং বিধানসভার উপ মুখ্য সচেতক তাপস রায়ও উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক মারাত্মক সব অভিযোগ করেছেন। তাপসের দাবি, সুদীপের পরামর্শেই ১২ জানুয়ারি তাঁর বউবাজারের বাড়িতে ইডি অভিযান চালায়। দলের অন্তত ৫০জন তাঁকে এ কথা জানিয়েছেন।
এদিকে এদিন রাত সাড়ে সাতটায় কুণাল এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, আমি তৃণমূলে্র রাজ্য কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্রের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলাম। খবর পেয়েছি, শুধু মুখপাত্র থেকে ইস্তফার অংশটি গ্রহণ করা হয়েছে। দলের কাছে আমার সবিনয় অনুরোধ, সাধারণ সম্পাদক পদ থেকেও ইস্তফাটি গ্রহণ করা হোক। আমি ওই পদে থাকব না।
আরও পড়ুন: আলিপুরদুয়ারে সাংসদ জন বার্লার নাম কাটা, বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গা
এর আগে এদিন দুপুরে তিনি উত্তর কলকাতার দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে মিছিল করেন ১০ মার্চ ব্রিগেড সমাবেশের সমর্থনে। সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে তিনি সুদীপের গ্রেফতারির দাবি তোলেন। কয়লা কেলেঙ্কারির সঙ্গে সুদীপের যোগাযোগের দিকেও ইঙ্গিত করেন তিনি। কুণাল আরও লেখেন, ভুবনেশ্বর অ্যাপোলো হাসপাতালে থাকাকালীন সুদীপের বিল কে বা কারা মিটিয়েছিল, তার তদন্ত হোক। ওই পোস্টে তিনি ইডি এবং সিবিআইকেও ট্যাগ করেন। তবে বিকেলে ওই পোস্ট নিয়ে কুণাল একটি কথাও বলতে চাননি। সুদীপের বিরুদ্ধে অনেক কথা বললেও ওই পোস্টের বিষয় নিয়ে কুণাল বলেন, উপরওয়ালার নির্দেশে আমি কোনও মন্তব্য করব না ওই পোস্ট নিয়ে।
দলীয় সূত্রের খবর, বর্ষীয়ান সাংসদ এবং লোকসভার দলনেতা সুদীপের বিরুদ্ধে কুণাল দুদিন ধরে যেসব মন্তব্য করছেন, দলের শীর্ষ নেতারা তা ভালোভাবে নেননি। এদিন তিনি উত্তর কলকাতা কেন্দ্রে মহিলা প্রার্থী দাঁড় করানোর দাবি করে বলেন, শশী পাঁজাকে প্রার্থী করা যেতে পারে। কুণালের ধারাবাহিক আক্রমণের পর নীরব থাকাটা সুদীপের পক্ষে শাপে বর হতে পারে বলে মনে করছে দলের একটি অংশ।