কলকাতা: আগামী ৩০ জানুয়ারি বীরভূম (Birbhum) জেলা সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Chief Minister Mamata Banerjee)। তার আগে দলের পক্ষ থেকে প্রচারও চালানো হবে, কিন্তু সেই প্রচারে কোনও রকমভাবে ব্যবহার করা হবে না অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrta Mondal) ছবি। তৃণমূলের পক্ষ থেকে জেলার দলীয় নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোথাও যেন দলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ছবি পোস্টারে কিংবা ফেস্টুনে (Poster or Festoon) ব্যবহার না করা হয়। এমনকী অনুব্রতর নাম উল্লেখ করে তেমন কিছু বলাও যাবে না। গত শনিবার (২১ জানুয়ারি) তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠকে (TMC District Committee Meeting) সেরকমই নির্দেশ দিয়েছেন কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী (Bikash Roychoudhury)।
আরও পড়ুন: Morbi Bridge Collapse: মোরবি সেতু বিপর্যয়ে নির্মাণ সংস্থার কর্তার বিরুদ্ধে লুকআউট সার্কুলার জারি
সূত্রের খবর, বীরভূম জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক বৈঠক (Administrative Meeting) করবেন। পাশাপাশি জনসভা করারও কর্মসূচি (Program) রয়েছে। জানা গিয়েছে, ৩১ জানুয়ারি প্রশাসনিক সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরদিন ১ ফেব্রুয়ারি বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠে (Bolpur Dak Bungalow Ground) আরও একটি প্রশাসনিক সভা হবে। এখানে উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন পরে মুখ্যমন্ত্রী বীরভূম জেলা সফরে আসছেন। কিন্তু, এবার অনুব্রতহীন বীরভূম। কিন্তু হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত কেন? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের (Political Experts) বক্তব্য, গুরুতর অভিযোগে অনুব্রত এখন জেলে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে আসছেন, এই নিয়ে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক কিংবা নতুন বিতর্ক দাবা বাঁধুক, তা চাইছে না দল। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রীর আসন্ন বীরভূম সফর ঘিরে প্রচারে অনুব্রতর নাম কিংবা মুখ ব্যবহারে অনিচ্ছুক দলীয় নেতৃত্ব।
শনিবার বিকালে বোলপুরে দলের সদর দফতরে হওয়া বৈঠকে জেলা কমিটির সদস্যদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, অনুব্রত মণ্ডল না থাকায় সংগঠনের যে কোনও রকম ক্ষতি হয়নি, তা বুঝিয়ে দিতে হবে বিরোধীদের। ওই বৈঠকের শেষে অনুব্রত মণ্ডলের ছবি ফেষ্টুন বা ব্যানারে না থাকার নির্দেশিকা দেওয়া হয়। জেলা নেতৃত্বের এই বার্তা শুনে কিছুটা অবাক হয়ে গিয়েছিলেন কর্মীরা। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী যাঁকে বীরের সম্মান দিয়ে জেল মুক্তির কথা বলেছেন। অনুব্রতকে বারংবার বাঘের সঙ্গেও তুলনা করা হয়েছে, সেখানে এই সিদ্ধান্তের কারণ কী?
রাজনৈতিক সমালোচক মহলের (Political Critics) একাংশের বক্তব্য, গত অগাস্টে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার (Arrest) করা হয়েছে। সেই থেকে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত (Investigation) চলছে, তিনি জেলবন্দি। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁর জেল হেফাজতের (Jail Custody) মেয়াদ বাড়িয়েছে আদালত (Court)। আগামী দিনে অনুব্রতর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ (Political Future) কোন দিকে এগোচ্ছে, তা নিয়েও ঘোর অনিশ্চয়তা (Uncertainity) রয়েছে। কেউই জানেন না, তিনি কবে মুক্তি পাবেন! এদিকে, সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তৃণমূল জোর কদমে প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে। অনুব্রতর কারণে দলের ভাবমূর্তি ও নাম নষ্ট হচ্ছে, তাই ধীরে ধীরে তার থেকে দূরত্ব তৈরি করতে চাইছে দল। তবেও এটাও বলা হচ্ছে, বীরভূমে এসে মুখ্যমন্ত্রী কী বলেন, সেদিকেও নজর থাকবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের।